নতুন প্রধানমন্ত্রী এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা
সম্প্রতি, জাপানের একটি আধুনিক ডেস্ট্রয়ার, জেএস চোকাই, ক্যালিফোর্নিয়ায় এসে পৌঁছেছে একটি বিশেষ মিশনে: আমেরিকান টমাহক ক্রুজ মিসাইলের সাথে সজ্জিত হওয়ার জন্য। এটি জাপানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের একটি বড় পদক্ষেপ, যেখানে দেশটি দীর্ঘদিনের শান্তিপূর্ণ অস্তিত্ব থেকে আধুনিক সামরিক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। এর মাধ্যমে শত্রু ভূখণ্ডে আক্রমণ করার ক্ষমতা অর্জন করা হচ্ছে, যা একসময় ট্যাবু ছিল।
প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনী
জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী, তাকাইচি সানাই, দেশটির নিরাপত্তা নীতির গতিশীল পরিবর্তন ঘটানোর পরিকল্পনা করছেন। চীন এবং উত্তর কোরিয়ার আক্রমণাত্মক মনোভাব এবং আমেরিকার অস্থির মিত্রতা এই পরিবর্তনের মূল কারণ। প্রাথমিকভাবে, ২০১২ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবে শিনজোর সময়ে, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং সামরিক শক্তির উন্নতির লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তবে বর্তমান সময়ে, প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য আরও দ্রুত এগিয়ে চলা এবং অধিক শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করা।
জাপানের নতুন প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার দিকনির্দেশনা
এ বছরের শুরুতে, জাপান সিদ্ধান্ত নেয় যে ২০২৮ সালের মধ্যে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ২% পর্যন্ত বাড়ানো হবে, যা পূর্বে এক শতাংশের বেশি ছিল না। তবে, এই ব্যয়ের বেশিরভাগই বিদেশি সরঞ্জামাদি কেনার পরিবর্তে দেশীয় প্রযুক্তির ওপর কেন্দ্রিত হচ্ছে। জাপান আগামী বসন্তে কিউশুতে নতুন স্বদেশী দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করবে এবং প্রথম ফ-৩৫বি যুদ্ধবিমান চালু করবে।
আইনগত সীমাবদ্ধতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
প্রতিরক্ষা খাতে আরও পরিবর্তন আনার জন্য, প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি একটি স্বাধীন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চান, যা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার গোয়েন্দা কার্যক্রমকে একত্রিত করবে। এছাড়া, জাপান অস্ত্র রপ্তানি সম্পর্কিত আইনও শিথিল করতে চায়, যাতে তাদের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য আরও সুযোগ তৈরি হয়।

পারমাণবিক নিরাপত্তা এবং নতুন পদক্ষেপ
জাপানের পারমাণবিক শক্তির প্রতি তাদের নীতি অনেকটা পরিবর্তন হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকার পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন চুক্তির পর, জাপানও এমন সাবমেরিন কিনতে আগ্রহী হয়েছে, যদিও এর ফলে তাদের ১৯৬৭ সালের তিনটি পারমাণবিক নীতি ভঙ্গ হবে না। তবে, প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি সম্প্রতি এই নীতিগুলির পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা প্রকাশ করেছেন।
সামরিক বাহিনীর জন্য শক্তি সংগ্রহ এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জ
জাপান উন্নত প্রযুক্তি এবং কার্যকরী অপারেশন ব্যবস্থার দিকে মনোনিবেশ করেছে, তবে তাদের মূল চ্যালেঞ্জ হবে মানবসম্পদ সংকট। বর্তমানে, জাপানের সশস্ত্র বাহিনীর লক্ষ্য ছিল ২৪৭,০০০ সেনা, তবে এই লক্ষ্য পূরণ হয়নি এবং কমপক্ষে ১০% কম সেনা রয়েছে। দেশের সেনাবাহিনী তরুণ কর্মী আকৃষ্ট করতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন নতুন অস্ত্র সজ্জিত করা এবং জাহাজে দ্রুত স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান।
এছাড়া, খরচ বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধির জন্য যে কর বৃদ্ধির পরিকল্পনা ছিল তা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
#জাপান #প্রতিরক্ষা_নীতি #প্রধানমন্ত্রী_তাকাইচি #টমাহক_মিসাইল #সেনাবাহিনী #নিরাপত্তা
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















