১০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
এশিয়ার কনটেন্ট হাব হতে ১৫৪ মিলিয়ন ডলারের নতুন ফিল্ম–টিভি তহবিল ঘোষণা সিঙ্গাপুরের ১০ জানুয়ারি থেকে কঠোর আন্দোলনের হুমকি সচিবালয় কর্মচারীদের জেডআই খান পান্নার নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়ে ৩৯১ জামায়াতের জন্য উপযুক্ত দল ছিল আওয়ামী লীগ: মির্জা আব্বাস বিদ্যুৎ লাইনে কাপড় পড়ে ১৫ মিনিট বন্ধ থাকে ঢাকার মেট্রোরেল খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সহায়তা করতে ঢাকায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ খালেদা জিয়া প্রাসাদে নয়, রাজপথে রাজনীতি করেছেন: মঈন খান প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সক্ষমতা বিকাশে সকলের যৌথ দায়িত্ব ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া ও ভারত–শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক: পারস্পরিক কূটনীতির নতুন পাঠ

ডিএনএ–রহস্য উন্মোচনের নায়ক জেমস ওয়াটসন এবং তার বিতর্কিত উত্তরাধিকার

বিজ্ঞান জগৎ কখনও শুধু আবিষ্কার দিয়ে মনে রাখা হয় না। মানুষটিও স্মৃতির অংশ হয়ে থাকে—তার আলো যেমন, তেমনি তার ছায়াও। নোবেলজয়ী জেমস ওয়াটসন ছিলেন ঠিক এমনই এক চরিত্র; চমকপ্রদ অর্জনের পাশে রয়ে গেছে অস্বস্তিকর মন্তব্যের দীর্ঘ ইতিহাস।

বিজয়ের ভেতরে অসম্পূর্ণতার গল্প

১৯৬২ সালে জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক ও মরিস উইলকিনস ডিএনএ–র ডাবল হেলিক্স গঠন আবিষ্কারের জন্য নোবেল পান। এই সাফল্য তখন বিশ্বকে বিস্মিত করেছিল। কিন্তু সময়ের সাথে ঘন হতে থাকে বিতর্কের মেঘ।

ওয়াটসন নানা উপলক্ষে বর্ণ, বুদ্ধি ও পরিচয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন—যা বৈজ্ঞানিক সততা ও মানবিকতা দুইয়ের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক।

James D. Watson, Ph.D. | Academy of Achievement

তিনি ২০০৭ সালে বলেন, আফ্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি ‘স্বভাবগতভাবে নিরাশ’, এমন এক দাবি যা কোনো গবেষণাগত ভিত্তি বহন করে না। তিনি মন্তব্য করেন, ‘কিছু ইহুদি-বিরোধিতা নাকি যৌক্তিক হতে পারে।’ ২০০৩ সালে বলেন, ‘যদি কেউ সত্যিই নির্বোধ হয়, তবে সেটাকে রোগ বলা যায়। আমি চাই সেটাকে সরিয়ে দিতে।’

এই কথাগুলো তাকে বিজ্ঞানী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে বিচার–আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে।

রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের ছায়া

ওয়াটসনের উত্তরাধিকারকে জটিল করে তোলে আরেকটি সত্য। ১৯৫৩ সালে তাদের দলে প্রদর্শিত হয় রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের তোলা ডিএনএ–র এক অসামান্য এক্স-রে ছবি—ফটো ৫১।

এটি ছিল ডাবল হেলিক্স–এর দিকে গবেষণার পথ দেখানো গুরুত্বপূর্ণ সূত্র।

James D. Watson, Co-Discoverer of the Structure of DNA, Is Dead at 97 - The  New York Times

কিন্তু ফ্র্যাঙ্কলিন ইতিহাসে উপেক্ষিতই থেকে যান। ১৯৫৮ সালে তার মৃত্যু এবং নোবেলের পরমরশর্ত—মরণোত্তর পুরস্কার না দেওয়া—তার স্মৃতিকে আরও আড়াল করে দেয়।

ক্রিক ও উইলকিনস ২০০৪ সালে মারা যান, ফলে এই ঐতিহাসিক অধ্যায়ের শেষ জীবিত প্রতিনিধি ছিলেন জেমস ওয়াটসন নিজেই।

এবং জীবনভর তিনি তার বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহার করেননি।

বিজ্ঞান তাকে মহিমান্বিত করেছে। কিন্তু তার কথাগুলো তাকে আবার মাটিতে নামিয়েছে।

এটাই জেমস ওয়াটসনের জটিল উত্তরাধিকার—যা তিনি নিজেই গড়ে তুলেছিলেন।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

এশিয়ার কনটেন্ট হাব হতে ১৫৪ মিলিয়ন ডলারের নতুন ফিল্ম–টিভি তহবিল ঘোষণা সিঙ্গাপুরের

ডিএনএ–রহস্য উন্মোচনের নায়ক জেমস ওয়াটসন এবং তার বিতর্কিত উত্তরাধিকার

০৬:৪১:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

বিজ্ঞান জগৎ কখনও শুধু আবিষ্কার দিয়ে মনে রাখা হয় না। মানুষটিও স্মৃতির অংশ হয়ে থাকে—তার আলো যেমন, তেমনি তার ছায়াও। নোবেলজয়ী জেমস ওয়াটসন ছিলেন ঠিক এমনই এক চরিত্র; চমকপ্রদ অর্জনের পাশে রয়ে গেছে অস্বস্তিকর মন্তব্যের দীর্ঘ ইতিহাস।

বিজয়ের ভেতরে অসম্পূর্ণতার গল্প

১৯৬২ সালে জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক ও মরিস উইলকিনস ডিএনএ–র ডাবল হেলিক্স গঠন আবিষ্কারের জন্য নোবেল পান। এই সাফল্য তখন বিশ্বকে বিস্মিত করেছিল। কিন্তু সময়ের সাথে ঘন হতে থাকে বিতর্কের মেঘ।

ওয়াটসন নানা উপলক্ষে বর্ণ, বুদ্ধি ও পরিচয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন—যা বৈজ্ঞানিক সততা ও মানবিকতা দুইয়ের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক।

James D. Watson, Ph.D. | Academy of Achievement

তিনি ২০০৭ সালে বলেন, আফ্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি ‘স্বভাবগতভাবে নিরাশ’, এমন এক দাবি যা কোনো গবেষণাগত ভিত্তি বহন করে না। তিনি মন্তব্য করেন, ‘কিছু ইহুদি-বিরোধিতা নাকি যৌক্তিক হতে পারে।’ ২০০৩ সালে বলেন, ‘যদি কেউ সত্যিই নির্বোধ হয়, তবে সেটাকে রোগ বলা যায়। আমি চাই সেটাকে সরিয়ে দিতে।’

এই কথাগুলো তাকে বিজ্ঞানী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে বিচার–আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে।

রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের ছায়া

ওয়াটসনের উত্তরাধিকারকে জটিল করে তোলে আরেকটি সত্য। ১৯৫৩ সালে তাদের দলে প্রদর্শিত হয় রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের তোলা ডিএনএ–র এক অসামান্য এক্স-রে ছবি—ফটো ৫১।

এটি ছিল ডাবল হেলিক্স–এর দিকে গবেষণার পথ দেখানো গুরুত্বপূর্ণ সূত্র।

James D. Watson, Co-Discoverer of the Structure of DNA, Is Dead at 97 - The  New York Times

কিন্তু ফ্র্যাঙ্কলিন ইতিহাসে উপেক্ষিতই থেকে যান। ১৯৫৮ সালে তার মৃত্যু এবং নোবেলের পরমরশর্ত—মরণোত্তর পুরস্কার না দেওয়া—তার স্মৃতিকে আরও আড়াল করে দেয়।

ক্রিক ও উইলকিনস ২০০৪ সালে মারা যান, ফলে এই ঐতিহাসিক অধ্যায়ের শেষ জীবিত প্রতিনিধি ছিলেন জেমস ওয়াটসন নিজেই।

এবং জীবনভর তিনি তার বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহার করেননি।

বিজ্ঞান তাকে মহিমান্বিত করেছে। কিন্তু তার কথাগুলো তাকে আবার মাটিতে নামিয়েছে।

এটাই জেমস ওয়াটসনের জটিল উত্তরাধিকার—যা তিনি নিজেই গড়ে তুলেছিলেন।