০১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি, চিকিৎসা সঠিকভাবে চলছে: ডা. জাহিদ মনউন্মোচনকারী উপন্যাস ‘লাইটব্রেকার্স’ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তালেবান ইস্যুতে বাড়ছে আফগান-পাকিস্তান উত্তেজনা জলব্যায়ামে প্রেম, আর শেষ পর্যন্ত পুলেই বিয়ে টেক্সাসে মুসলিম অধিকার সংস্থা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণার জেরে তীব্র প্রতিক্রিয়া খরা কি উন্নত সিন্ধু সভ্যতার অবসান ঘটিয়েছিল? ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস: শীতের কাঁপুনিতে শুরু হলো ডিসেম্বর প্রযুক্তি ও কৌশলগত অংশীদারত্বেই ভারতের রূপান্তরের চাবিকাঠি মিথেন খাদক অণুজীব: দূষণ কমানোর নতুন সম্ভাবনা

মিথেন খাদক অণুজীব: দূষণ কমানোর নতুন সম্ভাবনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খামার ও ল্যান্ডফিলে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করছেন ক্ষুদ্র অণুজীব যারা মিথেন গ্যাস খেয়ে ফেলতে পারে। মিথেন হলো অত্যন্ত শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস, যা পৃথিবীকে দ্রুত উষ্ণতর করছে। গরু, ল্যান্ডফিল, প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রসহ নানা জায়গা থেকে মিথেন নির্গত হয়। এই অণুজীবগুলোকে কাজে লাগানো গেলে পরিবেশে মিথেনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হতে পারে।


ক্যালিফোর্নিয়ার খামারে পরীক্ষামূলক উদ্যোগ

ক্যালিফোর্নিয়ার কোরেইয়া ফ্যামিলি ডেইরি ফার্মে ওয়াইন্ডফল বায়ো নামের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মিথেন-খাদক অণুজীবের পরীক্ষা চালায়। গবেষকেরা মল-সংগ্রহের লেগুনের পাশে ভবিষ্যৎ যন্ত্রপাতির মতো দেখতে ট্যাংক, পাইপ ও ধাতব কাঠামো স্থাপন করেন। এরপর তারা গোলাপি রঙের অণুজীবসমৃদ্ধ তরল ট্যাংকে ঢেলে পরীক্ষা শুরু করেন।

খামারের মালিক কেনি কোরেইয়া প্রথমে ধারণাটিকে কিছুটা “পাগলামি” মনে করেছিলেন। তার আশঙ্কা ছিল, গরুগুলো গিয়ে পাইপ টেনে ধরবে, যন্ত্রপাতি নষ্ট করে ফেলবে। তাই গবেষণা এলাকার চারপাশে বেড়া দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে যখন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, দেখা যায় অণুজীবগুলো লেগুন থেকে নির্গত প্রায় ৮৫ শতাংশ মিথেন শোষণ করে নিতে পেরেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা জশ সিলভারম্যান বলেন, “আমরা কোনো কৃত্রিম কিছু বানাচ্ছি না—অণুজীবগুলো স্বাভাবিকভাবেই মিথেন খায়, বহু বছর ধরে এভাবেই বিবর্তিত হয়েছে।”


মিথেন: তীব্র উষ্ণায়নের দায়ী গ্যাস

মিথেন কার্বন ডাই-অক্সাইডের তুলনায় ৮০ গুণ বেশি তাপ ধরে রাখতে পারে, বিশেষত নির্গমনের পর প্রথম ২০ বছরে। যদিও এটি তুলনামূলক দ্রুত ভেঙে যায়, কিন্তু ওই সময়টুকু পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। খামার থেকে শুরু করে ল্যান্ডফিল, নর্দমা পরিশোধন কেন্দ্র, প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র—সব জায়গা থেকেই মিথেন বের হয়।

এই অণুজীবগুলো ছড়িয়ে দেওয়া গেলে ক্ষুদ্র উৎসগুলো থেকেও নির্গত মিথেন কমানো সম্ভব। ওয়াইন্ডফলের হিসেবে, সারা মার্কিন জুড়ে এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা গেলে বছরে ১.৬ গিগাটন কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমতুল্য নির্গমন কমানো যাবে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক দল গবেষকদের মতে, তাদের ব্যবহৃত অণুজীবগুলো প্রতিবছর প্রায় ৪২০ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমতুল্য মিথেন শোষণ করতে পারে। তারা এই অণুজীব থেকে সার ও পশুখাদ্য তৈরি করারও পরিকল্পনা করছেন, যাতে এটি বাণিজ্যিকভাবে আরও কার্যকর হয়।


অণুজীব খোঁজার পথ

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মেরি লিডস্ট্রমের প্রিয় অণুজীবের উৎস পূর্ব সাইবেরিয়ার একটি হ্রদের গভীর তলদেশ। প্রায় ২০ বছর আগে এক রুশ গবেষক এই মিথেন-খাদক অণুজীব (Methylotuvimicrobium buryatense) ল্যাবে এনে দেখান। অণুজীবটি নিম্ন মিথেন ঘনত্বেও দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা গবেষণায় এটিকে “ওয়ার্কহর্স” করে তুলেছে।

অন্যদিকে, ওয়াইন্ডফলের প্রতিষ্ঠাতা সিলভারম্যান স্থানীয় কম্পোস্ট ও মাটির নমুনা থেকে উপযুক্ত অণুজীব সংগ্রহ করেন। এগুলো তিনি বাড়ির পেছনের গ্যাস গ্রিলের ভেতর মিথেন সরবরাহ করে বৃদ্ধি করান। “জার ৬” নামে চিহ্নিত এক নমুনাই সবচেয়ে সফল হয় এবং সেখান থেকেই নতুন প্রজাতিগুলো তৈরি হচ্ছে।

অণুজীবগুলোর গোলাপি রং তাদের সুস্থতার নির্দেশক। সিলভারম্যান বলেন, “যত বেশি গোলাপি, ততই অণুজীবগুলো ভালো আছে।”


মাঠপর্যায়ে পরীক্ষার চ্যালেঞ্জ

বিভিন্ন পরিবেশে মিথেন অপসারণের সেরা পদ্ধতি খুঁজে বের করাই এখন গবেষকদের লক্ষ্য। ডেইরি ফার্মের মল-ল্যাগুন, ল্যান্ডফিল—সব জায়গার শর্তই আলাদা। ওয়াইন্ডফলের দাবি, তাদের অণুজীব আদর্শ পরিবেশে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন শোষণ করতে পারে। তবে আবহাওয়া ও তাপমাত্রা অনেক সময় এতে প্রভাব ফেলে।

স্ট্যানফোর্ডের জলবায়ু-বিজ্ঞানী রব জ্যাকসন বলেন, “মিথেন ধ্বংস হলে সেটা CO₂-তে পরিণত হয়—এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মিথেনের সবচেয়ে ক্ষতিকর সময়কালটুকু এভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব।”

ল্যান্ডফিলে পরীক্ষায় দেখা গেছে, একবার প্রয়োগেই অণুজীব ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে ৭৫ শতাংশের বেশি মিথেন শোষণ করেছে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় একটি প্রোটোটাইপ বায়োরিয়েক্টর মাঠে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন অপসারণে সক্ষম হয়। গবেষকদের পরিকল্পনা—২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১–২ লাখ বায়োরিয়েক্টর মাঠে স্থাপন করা।


বর্জ্য থেকে সম্পদ

অণুজীবগুলো মিথেন খেয়ে বৃদ্ধির সময় প্রোটিনসমৃদ্ধ বায়োমাস তৈরি করে। এই বায়োমাস মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহারযোগ্য হতে পারে বলে মনে করেন লিডস্ট্রম। জলবায়ু পরিবর্তনে বন্য মাছে ঘাটতি বাড়লে এই বাজার বড় হতে পারে।

ওয়াইন্ডফল ইতিমধ্যেই অণুজীব শুকিয়ে সার হিসেবে তৈরি করছে। তারা তরল সারের দিকেও গবেষণা করছে। লক্ষ্য—যে খামারে মিথেন শোষণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, তারা যেন সেই অণুজীবজাত সার পায়।

তবে এ ধরনের সার বাজারে কতটা জনপ্রিয় হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। স্ট্রস ফ্যামিলি ক্রিমারির কর্মকর্তারা মনে করেন—সব খামারের সারের প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে কেউ কেউ এটি বিক্রির সুযোগ হিসেবে দেখবে।


কৃষকদের আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ

কোরেইয়া তার খামারে আরও পরীক্ষা চালাতে আগ্রহী। খামারটি ইতোমধ্যে মলকে কম্পোস্টে রূপান্তরসহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নতুন বাছুরগুলোর দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, “সঠিক প্রযুক্তি থাকলে এমন একদিন আসবে, যখন আমাদের খামার পরিবেশে কোনো ক্ষতি করবে না।”

তার বিশ্বাস, “এটা ১০০ শতাংশ সম্ভব।”


জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান

মিথেন খাদক অণুজীব: দূষণ কমানোর নতুন সম্ভাবনা

১২:৪৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খামার ও ল্যান্ডফিলে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করছেন ক্ষুদ্র অণুজীব যারা মিথেন গ্যাস খেয়ে ফেলতে পারে। মিথেন হলো অত্যন্ত শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস, যা পৃথিবীকে দ্রুত উষ্ণতর করছে। গরু, ল্যান্ডফিল, প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রসহ নানা জায়গা থেকে মিথেন নির্গত হয়। এই অণুজীবগুলোকে কাজে লাগানো গেলে পরিবেশে মিথেনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হতে পারে।


ক্যালিফোর্নিয়ার খামারে পরীক্ষামূলক উদ্যোগ

ক্যালিফোর্নিয়ার কোরেইয়া ফ্যামিলি ডেইরি ফার্মে ওয়াইন্ডফল বায়ো নামের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মিথেন-খাদক অণুজীবের পরীক্ষা চালায়। গবেষকেরা মল-সংগ্রহের লেগুনের পাশে ভবিষ্যৎ যন্ত্রপাতির মতো দেখতে ট্যাংক, পাইপ ও ধাতব কাঠামো স্থাপন করেন। এরপর তারা গোলাপি রঙের অণুজীবসমৃদ্ধ তরল ট্যাংকে ঢেলে পরীক্ষা শুরু করেন।

খামারের মালিক কেনি কোরেইয়া প্রথমে ধারণাটিকে কিছুটা “পাগলামি” মনে করেছিলেন। তার আশঙ্কা ছিল, গরুগুলো গিয়ে পাইপ টেনে ধরবে, যন্ত্রপাতি নষ্ট করে ফেলবে। তাই গবেষণা এলাকার চারপাশে বেড়া দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে যখন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, দেখা যায় অণুজীবগুলো লেগুন থেকে নির্গত প্রায় ৮৫ শতাংশ মিথেন শোষণ করে নিতে পেরেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা জশ সিলভারম্যান বলেন, “আমরা কোনো কৃত্রিম কিছু বানাচ্ছি না—অণুজীবগুলো স্বাভাবিকভাবেই মিথেন খায়, বহু বছর ধরে এভাবেই বিবর্তিত হয়েছে।”


মিথেন: তীব্র উষ্ণায়নের দায়ী গ্যাস

মিথেন কার্বন ডাই-অক্সাইডের তুলনায় ৮০ গুণ বেশি তাপ ধরে রাখতে পারে, বিশেষত নির্গমনের পর প্রথম ২০ বছরে। যদিও এটি তুলনামূলক দ্রুত ভেঙে যায়, কিন্তু ওই সময়টুকু পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। খামার থেকে শুরু করে ল্যান্ডফিল, নর্দমা পরিশোধন কেন্দ্র, প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র—সব জায়গা থেকেই মিথেন বের হয়।

এই অণুজীবগুলো ছড়িয়ে দেওয়া গেলে ক্ষুদ্র উৎসগুলো থেকেও নির্গত মিথেন কমানো সম্ভব। ওয়াইন্ডফলের হিসেবে, সারা মার্কিন জুড়ে এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা গেলে বছরে ১.৬ গিগাটন কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমতুল্য নির্গমন কমানো যাবে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক দল গবেষকদের মতে, তাদের ব্যবহৃত অণুজীবগুলো প্রতিবছর প্রায় ৪২০ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমতুল্য মিথেন শোষণ করতে পারে। তারা এই অণুজীব থেকে সার ও পশুখাদ্য তৈরি করারও পরিকল্পনা করছেন, যাতে এটি বাণিজ্যিকভাবে আরও কার্যকর হয়।


অণুজীব খোঁজার পথ

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মেরি লিডস্ট্রমের প্রিয় অণুজীবের উৎস পূর্ব সাইবেরিয়ার একটি হ্রদের গভীর তলদেশ। প্রায় ২০ বছর আগে এক রুশ গবেষক এই মিথেন-খাদক অণুজীব (Methylotuvimicrobium buryatense) ল্যাবে এনে দেখান। অণুজীবটি নিম্ন মিথেন ঘনত্বেও দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা গবেষণায় এটিকে “ওয়ার্কহর্স” করে তুলেছে।

অন্যদিকে, ওয়াইন্ডফলের প্রতিষ্ঠাতা সিলভারম্যান স্থানীয় কম্পোস্ট ও মাটির নমুনা থেকে উপযুক্ত অণুজীব সংগ্রহ করেন। এগুলো তিনি বাড়ির পেছনের গ্যাস গ্রিলের ভেতর মিথেন সরবরাহ করে বৃদ্ধি করান। “জার ৬” নামে চিহ্নিত এক নমুনাই সবচেয়ে সফল হয় এবং সেখান থেকেই নতুন প্রজাতিগুলো তৈরি হচ্ছে।

অণুজীবগুলোর গোলাপি রং তাদের সুস্থতার নির্দেশক। সিলভারম্যান বলেন, “যত বেশি গোলাপি, ততই অণুজীবগুলো ভালো আছে।”


মাঠপর্যায়ে পরীক্ষার চ্যালেঞ্জ

বিভিন্ন পরিবেশে মিথেন অপসারণের সেরা পদ্ধতি খুঁজে বের করাই এখন গবেষকদের লক্ষ্য। ডেইরি ফার্মের মল-ল্যাগুন, ল্যান্ডফিল—সব জায়গার শর্তই আলাদা। ওয়াইন্ডফলের দাবি, তাদের অণুজীব আদর্শ পরিবেশে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন শোষণ করতে পারে। তবে আবহাওয়া ও তাপমাত্রা অনেক সময় এতে প্রভাব ফেলে।

স্ট্যানফোর্ডের জলবায়ু-বিজ্ঞানী রব জ্যাকসন বলেন, “মিথেন ধ্বংস হলে সেটা CO₂-তে পরিণত হয়—এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মিথেনের সবচেয়ে ক্ষতিকর সময়কালটুকু এভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব।”

ল্যান্ডফিলে পরীক্ষায় দেখা গেছে, একবার প্রয়োগেই অণুজীব ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে ৭৫ শতাংশের বেশি মিথেন শোষণ করেছে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় একটি প্রোটোটাইপ বায়োরিয়েক্টর মাঠে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন অপসারণে সক্ষম হয়। গবেষকদের পরিকল্পনা—২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১–২ লাখ বায়োরিয়েক্টর মাঠে স্থাপন করা।


বর্জ্য থেকে সম্পদ

অণুজীবগুলো মিথেন খেয়ে বৃদ্ধির সময় প্রোটিনসমৃদ্ধ বায়োমাস তৈরি করে। এই বায়োমাস মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহারযোগ্য হতে পারে বলে মনে করেন লিডস্ট্রম। জলবায়ু পরিবর্তনে বন্য মাছে ঘাটতি বাড়লে এই বাজার বড় হতে পারে।

ওয়াইন্ডফল ইতিমধ্যেই অণুজীব শুকিয়ে সার হিসেবে তৈরি করছে। তারা তরল সারের দিকেও গবেষণা করছে। লক্ষ্য—যে খামারে মিথেন শোষণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, তারা যেন সেই অণুজীবজাত সার পায়।

তবে এ ধরনের সার বাজারে কতটা জনপ্রিয় হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। স্ট্রস ফ্যামিলি ক্রিমারির কর্মকর্তারা মনে করেন—সব খামারের সারের প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে কেউ কেউ এটি বিক্রির সুযোগ হিসেবে দেখবে।


কৃষকদের আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ

কোরেইয়া তার খামারে আরও পরীক্ষা চালাতে আগ্রহী। খামারটি ইতোমধ্যে মলকে কম্পোস্টে রূপান্তরসহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নতুন বাছুরগুলোর দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, “সঠিক প্রযুক্তি থাকলে এমন একদিন আসবে, যখন আমাদের খামার পরিবেশে কোনো ক্ষতি করবে না।”

তার বিশ্বাস, “এটা ১০০ শতাংশ সম্ভব।”