০২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি, চিকিৎসা সঠিকভাবে চলছে: ডা. জাহিদ মনউন্মোচনকারী উপন্যাস ‘লাইটব্রেকার্স’ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তালেবান ইস্যুতে বাড়ছে আফগান-পাকিস্তান উত্তেজনা জলব্যায়ামে প্রেম, আর শেষ পর্যন্ত পুলেই বিয়ে টেক্সাসে মুসলিম অধিকার সংস্থা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণার জেরে তীব্র প্রতিক্রিয়া খরা কি উন্নত সিন্ধু সভ্যতার অবসান ঘটিয়েছিল? ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস: শীতের কাঁপুনিতে শুরু হলো ডিসেম্বর প্রযুক্তি ও কৌশলগত অংশীদারত্বেই ভারতের রূপান্তরের চাবিকাঠি মিথেন খাদক অণুজীব: দূষণ কমানোর নতুন সম্ভাবনা

খরা কি উন্নত সিন্ধু সভ্যতার অবসান ঘটিয়েছিল?

উন্নত নগর-পরিকল্পনা, নদীনির্ভর বাণিজ্য ও কৃষিকেন্দ্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে তৃতীয় সহস্রাব্দে খ্রিস্টপূর্বে সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা বিশ্বের অগ্রসর সমাজগুলোর একটি ছিল। কিন্তু যুদ্ধ বা ক্ষমতার লড়াইয়ের খুব কম প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ এই সমৃদ্ধ সভ্যতা হারিয়ে যায়। সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, বারবার দীর্ঘস্থায়ী খরাইই এই পতনের অন্যতম বড় কারণ।

নিচে সহজ ভাষায় এবং পরিষ্কার উপশিরোনামসহ পুরো বিশ্লেষণটি তুলে ধরা হলো।


সভ্যতার স্বর্ণযুগ ও বৈশিষ্ট্য

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সহ সিন্ধু উপত্যকার শহরগুলোতে ছিল সুশৃঙ্খল গ্রিড-রাস্তাঘাট, বহুস্তরের ইটের বাড়ি, উন্নত নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং ব্যস্ত বাণিজ্যকেন্দ্র।
স্থানীয়রা স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, ব্রোঞ্জের সামগ্রী ও নৌপথে লেনদেন করত। তারা গম, যব ও তুলা উৎপাদন করত এবং কাছের নদী থেকে পানি এনে কৃষির জন্য ব্যবহার করত।
মোটের ওপর, মেসোপটেমিয়া ও প্রাচীন মিশরের পাশাপাশি সিন্ধু সভ্যতা ছিল বিশ্বের অন্যতম উন্নত নগরসভ্যতা।


পতনের রহস্য: যুদ্ধ নয়, জলবায়ুর প্রভাব

হরপ্পার পতনের কারণ বহুদিন ধরেই আলোচনায়। নতুন এক আন্তর্জাতিক গবেষণা (কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল জার্নালে প্রকাশিত) অতীতের জলবায়ু পুনর্গঠন করে দেখিয়েছে—খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে ১০০০ সালের মধ্যে চারটি দীর্ঘস্থায়ী ভয়াবহ খরা অঞ্চলের নদী ও মাটিকে শুকিয়ে ফেলে। এতে মানুষকে বারবার স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হতে হয়।

গবেষণার প্রধান লেখক হিরেন সোলাঙ্কির ভাষায়:
“হরপ্পার পতন কোনো একক বিপর্যয়ের কারণে নয়; শতাব্দীজুড়ে চলা পুনরাবৃত্ত নদী-খরাই ধীরে ধীরে তাদের দুর্বল করে তোলে।”

সহলেখক জলবিদ্যাবিদ বলাজি রাজাগোপালন বলেন, খাদ্যের সংকট ও দুর্বল শাসনব্যবস্থার মতো পরিস্থিতিতে ধারাবাহিক খরাই সমাজকে ভাঙনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

তবু গবেষকদের মতে, কঠিন পরিবেশে হরপ্পা বাসীরা দীর্ঘ সময় টিকে ছিল, যা আজকের জলবায়ু-সংকট মোকাবেলায় মূল্যবান শিক্ষা দেয়।


অভিযোজনের কৌশল: কৃষি বদল, বাণিজ্য রূপান্তর ও বসতি স্থানান্তর

গবেষণায় জানা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হরপ্পার বসতিগুলো পানির উৎসের কাছাকাছি কেন্দ্রীভূত হতে থাকে—প্রথমে উপনদী গুলোর পাশে, পরে আরও পূর্ব দিকে সিন্ধু নদীর কাছাকাছি।
সোলাঙ্কি বলেন, খরাই মোকাবিলায় তারা শস্য পরিবর্তন করেছে, বাণিজ্য বৈচিত্র্যময় করেছে এবং নতুন স্থানে বসতি গড়েছে—যা আজকের জলবায়ু পরিবর্তন যুগে প্রাসঙ্গিক।


জলবায়ু পুনর্গঠন: কখন কী ঘটেছিল

গবেষক দলটি কম্পিউটার মডেল, ভারতের দুই গুহার স্ট্যালাকটাইট–স্ট্যালাগমাইট ও পাঁচটি হ্রদের পানির স্তর বিশ্লেষণ করে প্রাচীন জলবায়ুর ছবি তৈরি করেছে।

খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০–২৪৭৫: শক্তিশালী বর্ষা

এই সময়ে বর্ষা ছিল প্রবল, প্রশান্ত মহাসাগরের ঠান্ডা অবস্থা (লা নিনিয়া–সদৃশ পরিস্থিতি) দক্ষিণ এশিয়ায় বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়। ফলে বসতিগুলো বর্ষা-নির্ভর অঞ্চলে বৃদ্ধি পায়।

খ্রিস্টপূর্ব ২৪২৫–১৪০০: খরাইয়ের যুগ

প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্ষা দুর্বল হতে থাকে, তাপমাত্রা বাড়ে এবং শুরু হয় দীর্ঘস্থায়ী খরা।
চারটি প্রধান খরাই শনাক্ত করা হয়েছে—প্রতিটিই ৮৫ বছরের বেশি স্থায়ী।
সবচেয়ে ভয়াবহ তৃতীয় খরাই, খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ১৭৩৩-এ চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছে—১৬৪ বছর ধরে চলে এবং অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১৩ শতাংশ কমে যায়।

গবেষণায় দেখা যায়, পুরো সময়ে তাপমাত্রা গড়ে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে এবং বৃষ্টিপাত কমে ১০–২০ শতাংশ।


স্থলজ পরিবর্তন: নদী শুকিয়ে যাওয়া, মাটি শক্ত হওয়া

হাইড্রোলজিক মডেল অনুযায়ী:
• হ্রদ ও প্লায়া (অগভীর জলাধার) ছোট হয়ে যায়
• নদীর প্রবাহ কমে
• মাটি শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়

রাজাগোপালনের মতে, নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়, বাণিজ্য সীমিত হয়—বছরের নির্দিষ্ট সময়েই নদী দিয়ে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।
সোলাঙ্কি জানান, নদী থেকে দূরের এলাকায় কৃষিকাজ কঠিন হয়ে পড়ে, যা জনসংখ্যাকে স্থানান্তর ও পুনর্গঠনে বাধ্য করে, এবং শেষমেশ সভ্যতার সংকোচন ঘটে।


গবেষণার গুরুত্ব

উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশনের ভূ-বিজ্ঞানী লিভিউ জিওসান বলেন, এই গবেষণা প্রাচীন সভ্যতার বিকাশে জলবায়ুর ভূমিকা বোঝার ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি।
আগের গবেষণাগুলোতে সীমিত তথ্য ব্যবহৃত হলেও এবার বৃহৎ পরিসরে জলচক্র পুনর্গঠন করা হয়েছে, যা মেসোপটেমিয়া, মিশর ও চীনের মতো নদী নির্ভর সভ্যতার ইতিহাস বোঝাতেও সহায়ক হবে।

তিনি বলেন,
“খরাই কীভাবে বসতি নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে—এই দিকটি নতুনভাবে মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা যেতে পারে।
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—পুঞ্জীভূত জলবায়ু চাপ সমাজকে দুর্বল করে এবং প্রস্তুতি না থাকলে পতন ডেকে আনতে পারে।”


আধুনিক বিশ্বের জন্য সতর্কবার্তা

আজও পাকিস্তান ও ভারত তাপমাত্রা বৃদ্ধির মুখে দাঁড়িয়ে আছে—যেমনটা সিন্ধু সভ্যতার শেষের দিকে দেখা গিয়েছিল।
রাজাগোপালনের মতে, ভবিষ্যতে প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা ওঠানামা দক্ষিণ এশিয়ার বর্ষার ওপর বড় প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেন:
“উষ্ণ জলবায়ুতে প্রশান্ত মহাসাগর কী আচরণ করবে—এটাই এখন জলবায়ু বিজ্ঞানের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নগুলোর একটি।”

জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান

খরা কি উন্নত সিন্ধু সভ্যতার অবসান ঘটিয়েছিল?

০১:০৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

উন্নত নগর-পরিকল্পনা, নদীনির্ভর বাণিজ্য ও কৃষিকেন্দ্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে তৃতীয় সহস্রাব্দে খ্রিস্টপূর্বে সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা বিশ্বের অগ্রসর সমাজগুলোর একটি ছিল। কিন্তু যুদ্ধ বা ক্ষমতার লড়াইয়ের খুব কম প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ এই সমৃদ্ধ সভ্যতা হারিয়ে যায়। সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, বারবার দীর্ঘস্থায়ী খরাইই এই পতনের অন্যতম বড় কারণ।

নিচে সহজ ভাষায় এবং পরিষ্কার উপশিরোনামসহ পুরো বিশ্লেষণটি তুলে ধরা হলো।


সভ্যতার স্বর্ণযুগ ও বৈশিষ্ট্য

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সহ সিন্ধু উপত্যকার শহরগুলোতে ছিল সুশৃঙ্খল গ্রিড-রাস্তাঘাট, বহুস্তরের ইটের বাড়ি, উন্নত নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং ব্যস্ত বাণিজ্যকেন্দ্র।
স্থানীয়রা স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, ব্রোঞ্জের সামগ্রী ও নৌপথে লেনদেন করত। তারা গম, যব ও তুলা উৎপাদন করত এবং কাছের নদী থেকে পানি এনে কৃষির জন্য ব্যবহার করত।
মোটের ওপর, মেসোপটেমিয়া ও প্রাচীন মিশরের পাশাপাশি সিন্ধু সভ্যতা ছিল বিশ্বের অন্যতম উন্নত নগরসভ্যতা।


পতনের রহস্য: যুদ্ধ নয়, জলবায়ুর প্রভাব

হরপ্পার পতনের কারণ বহুদিন ধরেই আলোচনায়। নতুন এক আন্তর্জাতিক গবেষণা (কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল জার্নালে প্রকাশিত) অতীতের জলবায়ু পুনর্গঠন করে দেখিয়েছে—খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে ১০০০ সালের মধ্যে চারটি দীর্ঘস্থায়ী ভয়াবহ খরা অঞ্চলের নদী ও মাটিকে শুকিয়ে ফেলে। এতে মানুষকে বারবার স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হতে হয়।

গবেষণার প্রধান লেখক হিরেন সোলাঙ্কির ভাষায়:
“হরপ্পার পতন কোনো একক বিপর্যয়ের কারণে নয়; শতাব্দীজুড়ে চলা পুনরাবৃত্ত নদী-খরাই ধীরে ধীরে তাদের দুর্বল করে তোলে।”

সহলেখক জলবিদ্যাবিদ বলাজি রাজাগোপালন বলেন, খাদ্যের সংকট ও দুর্বল শাসনব্যবস্থার মতো পরিস্থিতিতে ধারাবাহিক খরাই সমাজকে ভাঙনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

তবু গবেষকদের মতে, কঠিন পরিবেশে হরপ্পা বাসীরা দীর্ঘ সময় টিকে ছিল, যা আজকের জলবায়ু-সংকট মোকাবেলায় মূল্যবান শিক্ষা দেয়।


অভিযোজনের কৌশল: কৃষি বদল, বাণিজ্য রূপান্তর ও বসতি স্থানান্তর

গবেষণায় জানা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হরপ্পার বসতিগুলো পানির উৎসের কাছাকাছি কেন্দ্রীভূত হতে থাকে—প্রথমে উপনদী গুলোর পাশে, পরে আরও পূর্ব দিকে সিন্ধু নদীর কাছাকাছি।
সোলাঙ্কি বলেন, খরাই মোকাবিলায় তারা শস্য পরিবর্তন করেছে, বাণিজ্য বৈচিত্র্যময় করেছে এবং নতুন স্থানে বসতি গড়েছে—যা আজকের জলবায়ু পরিবর্তন যুগে প্রাসঙ্গিক।


জলবায়ু পুনর্গঠন: কখন কী ঘটেছিল

গবেষক দলটি কম্পিউটার মডেল, ভারতের দুই গুহার স্ট্যালাকটাইট–স্ট্যালাগমাইট ও পাঁচটি হ্রদের পানির স্তর বিশ্লেষণ করে প্রাচীন জলবায়ুর ছবি তৈরি করেছে।

খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০–২৪৭৫: শক্তিশালী বর্ষা

এই সময়ে বর্ষা ছিল প্রবল, প্রশান্ত মহাসাগরের ঠান্ডা অবস্থা (লা নিনিয়া–সদৃশ পরিস্থিতি) দক্ষিণ এশিয়ায় বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়। ফলে বসতিগুলো বর্ষা-নির্ভর অঞ্চলে বৃদ্ধি পায়।

খ্রিস্টপূর্ব ২৪২৫–১৪০০: খরাইয়ের যুগ

প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্ষা দুর্বল হতে থাকে, তাপমাত্রা বাড়ে এবং শুরু হয় দীর্ঘস্থায়ী খরা।
চারটি প্রধান খরাই শনাক্ত করা হয়েছে—প্রতিটিই ৮৫ বছরের বেশি স্থায়ী।
সবচেয়ে ভয়াবহ তৃতীয় খরাই, খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ১৭৩৩-এ চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছে—১৬৪ বছর ধরে চলে এবং অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১৩ শতাংশ কমে যায়।

গবেষণায় দেখা যায়, পুরো সময়ে তাপমাত্রা গড়ে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে এবং বৃষ্টিপাত কমে ১০–২০ শতাংশ।


স্থলজ পরিবর্তন: নদী শুকিয়ে যাওয়া, মাটি শক্ত হওয়া

হাইড্রোলজিক মডেল অনুযায়ী:
• হ্রদ ও প্লায়া (অগভীর জলাধার) ছোট হয়ে যায়
• নদীর প্রবাহ কমে
• মাটি শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়

রাজাগোপালনের মতে, নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়, বাণিজ্য সীমিত হয়—বছরের নির্দিষ্ট সময়েই নদী দিয়ে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।
সোলাঙ্কি জানান, নদী থেকে দূরের এলাকায় কৃষিকাজ কঠিন হয়ে পড়ে, যা জনসংখ্যাকে স্থানান্তর ও পুনর্গঠনে বাধ্য করে, এবং শেষমেশ সভ্যতার সংকোচন ঘটে।


গবেষণার গুরুত্ব

উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশনের ভূ-বিজ্ঞানী লিভিউ জিওসান বলেন, এই গবেষণা প্রাচীন সভ্যতার বিকাশে জলবায়ুর ভূমিকা বোঝার ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি।
আগের গবেষণাগুলোতে সীমিত তথ্য ব্যবহৃত হলেও এবার বৃহৎ পরিসরে জলচক্র পুনর্গঠন করা হয়েছে, যা মেসোপটেমিয়া, মিশর ও চীনের মতো নদী নির্ভর সভ্যতার ইতিহাস বোঝাতেও সহায়ক হবে।

তিনি বলেন,
“খরাই কীভাবে বসতি নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে—এই দিকটি নতুনভাবে মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা যেতে পারে।
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—পুঞ্জীভূত জলবায়ু চাপ সমাজকে দুর্বল করে এবং প্রস্তুতি না থাকলে পতন ডেকে আনতে পারে।”


আধুনিক বিশ্বের জন্য সতর্কবার্তা

আজও পাকিস্তান ও ভারত তাপমাত্রা বৃদ্ধির মুখে দাঁড়িয়ে আছে—যেমনটা সিন্ধু সভ্যতার শেষের দিকে দেখা গিয়েছিল।
রাজাগোপালনের মতে, ভবিষ্যতে প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা ওঠানামা দক্ষিণ এশিয়ার বর্ষার ওপর বড় প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেন:
“উষ্ণ জলবায়ুতে প্রশান্ত মহাসাগর কী আচরণ করবে—এটাই এখন জলবায়ু বিজ্ঞানের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নগুলোর একটি।”