ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
পিরামিড
পূর্ববর্তী দুটি অধ্যায়ে আমরা মায়া জনগোষ্ঠী, সভ্যতার ভাষা, সংস্কৃতি,ধর্মীয় বিশ্বাস লোকাচার নিয়ে কমবেশি বিস্তৃত আলোচনা করেছি। এই পর্বের আলোচ্য বিষয় হল এইসব দিক বাদেও মায়া-সভ্যতার কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য যা ঐ জনগোষ্ঠী ও সভ্যতাকে স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে। সেই দিক থেকে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় মায়া জনসমাজের নিজস্ব অলংকার পিরামিড বা পিরামিড মন্দির।
মিশরীয় সভ্যতার মত মায়াদের মধ্যে পিরামিড-কালচারের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। কার্যত বলা যায় পিরামিড-এর মধ্যে প্রথমত এবং প্রধানত এক ধরনের ধর্মীয় বিশ্বাস কাজ করে এবং এই ধর্মীয় বিশ্বাসকে যথাযথ সম্মান দেবার জন্য স্থাপত্য নির্মাণ। পিরামিডকে সুন্দর করে দেখাবার জন্য ছোট বড় নানা ধরনের নির্মাণ করা হয়। এইসব পিরামিড প্রাক্-ক্লাসিক মায়াপর্বে বেশি তৈরি হয়েছিল।
পিরামিডগুলির আকার সম্পর্কেও মায়ারা বিশেষ সচেতন ছিল। অনেক ক্ষেত্রে পিরামিডগুলি বাঁকা বাঁকা আকার দিয়ে সিঁড়ির মত করা হয়। প্রত্যেকটি পিরামিড আবার নির্দিষ্ট এক দেবতাকে উৎসর্গ করা হয়। পিরামিড-কালচারের এই স্বর্ণযুগে মায়াদের বাণিজ্যিক, ধর্মীয় এবং প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলি শহরে গড়ে উঠেছিল।
বড় বাড়ি, নিসর্গ সৌন্দর্য: মায়াদের নানা সুন্দর জিনিসের মধ্যে আঞ্চলিক সৌন্দর্য বড় বাড়ি বা ছোট-বড় অট্টালিকার অবস্থান লক্ষ্য করার মত। আবার এমনও দেখা গেছে যে মায়ারা তাদের বর্তমান অনেক বাড়ি নতুন করে তৈরি করেছে বা কিছু কিছু দিক পরিবর্তন করেছে বাড়িটার সৌন্দর্য বাড়াবার জন্য। আবার এক্ষেত্রে মায়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে বড় বড় পার্ক-এর মত কিছু আছে এবং এগুলির পাশেই সরকারি ভবন এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।
(চলবে)