সিরিয়ার পুনর্গঠনে মার্কিন নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত
২০২৫ সালের ২৩ মে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সিরিয়ার ওপর আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার পুনর্গঠন ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগকে সহযোগিতা করতে চায়।
সিজার অ্যাক্টের বিধিনিষেধে ছয় মাসের ছাড়
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘Caesar Syria Civilian Protection Act’-এর আওতায় বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞাগুলো ছয় মাসের জন্য (১৮০ দিন) শিথিল করা হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী দেশগুলো এখন সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিমূলক বিনিয়োগ করতে পারবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সহজ হবে।
সাধারণ লাইসেন্স ২৫: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের একটি বড় পদক্ষেপ
মার্কিন অর্থ বিভাগ ‘Syria General License (GL) 25’ নামে একটি সাধারণ লাইসেন্স জারি করেছে, যার ফলে আগের সিরিয়া নিষেধাজ্ঞা আইনের আওতায় নিষিদ্ধ অনেক লেনদেন এখন অনুমোদিত। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও সংস্থাগুলো নতুন করে সিরিয়ায় বিনিয়োগ করতে পারবে এবং বেসরকারি খাতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
সিরিয়ান ব্যাংকের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে ছাড়
Financial Crimes Enforcement Network (FinCEN) এক ব্যতিক্রমী অনুমোদনের মাধ্যমে জানিয়েছে, মার্কিন ব্যাংকগুলো এখন থেকে সিরিয়ার ‘Commercial Bank of Syria’-এর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র-সিরিয়া সম্পর্ক উন্নয়নের একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনৈতিক বার্তা ও প্রত্যাশা
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিরিয়া সরকারকে একটি নতুন সুযোগ দিয়েছেন যাতে তারা অভ্যন্তরীণ শান্তি ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে। তবে ট্রাম্প পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে সিরিয়া সরকারকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
আইনি ভিত্তি ও তথ্যসূত্র
এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সিদ্ধান্ত ‘Caesar Syria Civilian Protection Act of 2019’-এর ধারা ৭৪৩২(বি)(১)-এর অধীনে গৃহীত হয়েছে। Syria General License 25 ও FinCEN-এর ঘোষণা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ‘America First’ নীতির অংশ হিসেবে সিরিয়ার জনগণের মানবিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। ভবিষ্যতে এই নীতির বাস্তবায়ন কতটা কার্যকর হয় তা নির্ভর করবে সিরিয়ার সরকারের পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার ওপর।