খুড়োর কল
সুকুমার রায়
কল করেছেন আজব-রকম চণ্ডীদাসের খুড়ো—
সবাই শুনে সাবাশ বলে পাড়ার ছেলে-বুড়ো।
খুড়োর যখন অল্প বয়স— বছর খানেক হবে—
উঠল কেঁদে ‘গুংগা’ বলে ভীষণ অট্টরবে।
আর তো সবাই ‘মামা’ ‘গাগা’ আবোল-তাবোল বকে,
খুড়োর মুখে ‘গুংগা’ শুনে চমকে গেল লোকে।
বললে সবাই, “এই ছেলেটা বাঁচলে পরে তবে,
বুদ্ধির জোরে এ সংসারে একটা কিছু হবে।”
সেই খুড়ো আজ কল করেছেন আপন বুদ্ধি বলে,
পাঁচ ঘণ্টার রাস্তা যাবে দেড় ঘণ্টায় চলে।
দেখে এলাম কলটি অতি সহজ এবং সোজা,
ঘণ্টা পাঁচেক ঘাটলে পরে আপনি যাবে বোঝা।
বলব কি আর কলের ফিকির, বলতে না পাই ভাষা,
ঘাড়ের সঙ্গে যন্ত্র জুড়ে একেবারে খাসা।
সামনে তাহার খাদ্য ঝোলে যার যেরকম রুচি—
মণ্ডা, মিঠাই, চপ, কাটলেট, খাজা কিংবা লুচি।
মন বলে তাই ‘খাব খাব’, মুখ চলে তাই খেতে,
মুখের সঙ্গে খাবার ছোটে পাল্লা দিয়ে মেতে।
এমনি করে লোভের টানে খাবার পানে চেয়ে,
উৎসাহেতে হুঁশ রবে না, চলবে কেবল ধেয়ে।
হেসে-খেলে দু-দশ যোজন চলবে বিনা-ক্লেশে,
খাবার গন্ধে পাগল হয়ে জিভের জলে ভেসে।
সবাই বলে সমস্বরে, ছেলে, জোয়ান, বুড়ো,
অতুল কীর্তি রাখল ভবে চণ্ডীদাসের খুড়ো।
পাদটিকা
বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল গত প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি করে আসছিল। দেশের ইন্টারিম গভর্নমেন্টের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলে আসছিলেন, তিনি আগামী জুনে নির্বাচন দেবেন।
কিন্তু ঈদের আগের দিন, ৬ তারিখ জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেছেন, আগামী এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে যাতে নির্বাচন হয়, সেভাবে রোডম্যাপ ঘোষণা করার জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন।