১০:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
জুলাইযোদ্ধাদের মৃত্যু ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সামান্তা শারমিন ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২৪০ জন হাসপাতালে, মৃত্যু ১ রাজধানীর আবাসিক হোটেল থেকে জাতীয় পার্টির নেতার মরদেহ উদ্ধার জননিরাপত্তা নিশ্চিত করেই স্বাভাবিক জীবন চলবে: পুলিশকে নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের বরিশালে তিন ঘণ্টায় তিন লাশ, আতঙ্কে নগরী ও আশপাশের এলাকা এনসিপি নেত্রী জান্নাতারা রুমির মৃত্যু: সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশের প্রাথমিক তথ্য ঢাকায় কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তিন ককটেল বিস্ফোরণ, নারী পথচারী আহত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত আনোয়ার পুঁজিবাজারে সপ্তাহের সর্বনিম্ন লেনদেন জাতীয় পার্টি কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে?

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৫)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪
  • 105

শ্রী নিখিলনাথ রায়

 

সন্ধ্যা হইল, তথাপি হীরানন্দ বন হইতে প্রত্যাবৃত্ত হইলেন না। সহসা একটি আর্তনাদ ‘তাঁহার কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হইল; তিনি কিয়দ্দূর অগ্রসর হইয়া একটি ভগ্ন অট্টালিকা দেখিতে পাইলেন। তাহার একটি প্রকোষ্ঠে জনৈক বৃদ্ধ মৃত্যুযাতনায় অধীর হইয়া আর্তনাদ করিতেছিল। বৃদ্ধের তথাবিধ শোচনীয় অবস্থা দেখিয়া, হীরানন্দের হৃদয় বিগলিত হইল। তিনি যথাসাধ্য তাহার সেবা করিতে লাগিলেন। কিন্তু তাঁহার চেষ্টায় কোন- রূপ ফলোদয় হইল না। অচিরকালমধ্যে বৃদ্ধ ইহজীবনের লীলা শেষ করিল। হাঁরানন্দের সেবায় তুষ্ট হইয়া একটি কোণে অঙ্গুলি সঙ্কেত করিয়া যায়। বৃদ্ধ মৃত্যুর কিছু পূর্ব্বে গৃহের হীরানন্দ সেই স্থান হইতে প্রচুর ধন লাভ করেন। এইরূপে তাঁহার ভাগ্যেদের ঘটে।

অল্প কালমধ্যে হীরানন্দ বিপুল সম্পত্তির অধীশ্বর হইয়া আপনার সাত পুত্রকে ভারতের সাত স্থানে গদীয়ানের কার্য্যে নিযুক্ত করিলেন। তাঁহার কনিষ্ঠ পুত্র মাণিকচাঁদ হইতে মুর্শিদাবাদের জগৎশেঠদিগের উৎপত্তি। হংকালে ঢাকানগরী বাঙ্গলার রাজধানী পদে প্রতিষ্ঠিত ছিল, সেই সময়ে মাণিকচার ঢাকার আগমনপূর্ব্বক আপনার গদী সংস্থাপন করেন। এই সময়ে মুর্শিদকুলী খা বাঙ্গলার দেওয়ান হইয়া ঢাকায় উপস্থিত হন। রাজস্বসম্বন্ধে মুর্শিদের হস্তে সমুদায় ভার অর্পিত হওয়ায়, অর্থের প্রয়োজনবশতঃ মাণিকচাদের সহিত তাঁহার বিলক্ষণ সৌহার্দ ঘটে।

তাহার পর নবাব আজিমওখানের ‘সহিত দুর্শিদের মনোবিবাদ উপস্থিত হইলে, দেওয়ান মুর্শিদকুলী ১১০৪ খৃঃ আব্দ ঢাকা পরিত্যাগ করিয়া, মুর্শিদাবাদে আপনার বাসস্থান নির্দেশ করিলে, রাজস্ববিভাগের যাবতীয় কর্মচারী ও শেঠ মানিকচাঁদও মুর্শিদাবাদে আসেন।’ মাণিকচাঁদ মুর্শিদাবাদে উপস্থিত হইয়া ভাগীরথীর পূর্ব্বতীরে মহিমাপুরনামক স্থানে আপনার বাসভবন নির্মাণ করেন।  অদ্যাপি তাঁহার বংশীয়েরা মহিমাপুরেই বাস করিতে- ছেন। মুর্শিদকুলী খাঁর উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মাণিকচাঁদেরও শ্রীবৃদ্ধি হইতে থাকে। মাণিকচাঁদ মুর্শিদকুলীকে সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করিতেন। এইরূপ কথিত আছে যে, মুর্শিদকুলী বাঙ্গলা, বিহার, উড়িষ্যার নিজামতী পদ প্রাপ্ত হইলে, মুর্শিদাবাদে যে টাকশাল স্থাপন করিয়াছিলেন, তাহা মাণিকক্চাদের পরামর্শানুসারেই করেন।

মহিমা- পুরের শেঠদিগের বাসভবনের সম্মুখে ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে আজিও সেই টাকশালের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হইয়া থাকে। কিন্তু তাহার সমস্তই এক্ষণে ভাগীরথীগর্ভস্থ। নবাবের অনুমতিতে বৎসরের প্রথমে তিপ্র বারই পুণ্যাহ হইত। এই সময়ে যাবতীয় জমীদার অথবা তাঁহাদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত হইয়া আপন আপন দের রাজস্ব প্রদান করিতেন।

 

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৪)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৪)

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাইযোদ্ধাদের মৃত্যু ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সামান্তা শারমিন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৫)

১১:০০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

 

সন্ধ্যা হইল, তথাপি হীরানন্দ বন হইতে প্রত্যাবৃত্ত হইলেন না। সহসা একটি আর্তনাদ ‘তাঁহার কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হইল; তিনি কিয়দ্দূর অগ্রসর হইয়া একটি ভগ্ন অট্টালিকা দেখিতে পাইলেন। তাহার একটি প্রকোষ্ঠে জনৈক বৃদ্ধ মৃত্যুযাতনায় অধীর হইয়া আর্তনাদ করিতেছিল। বৃদ্ধের তথাবিধ শোচনীয় অবস্থা দেখিয়া, হীরানন্দের হৃদয় বিগলিত হইল। তিনি যথাসাধ্য তাহার সেবা করিতে লাগিলেন। কিন্তু তাঁহার চেষ্টায় কোন- রূপ ফলোদয় হইল না। অচিরকালমধ্যে বৃদ্ধ ইহজীবনের লীলা শেষ করিল। হাঁরানন্দের সেবায় তুষ্ট হইয়া একটি কোণে অঙ্গুলি সঙ্কেত করিয়া যায়। বৃদ্ধ মৃত্যুর কিছু পূর্ব্বে গৃহের হীরানন্দ সেই স্থান হইতে প্রচুর ধন লাভ করেন। এইরূপে তাঁহার ভাগ্যেদের ঘটে।

অল্প কালমধ্যে হীরানন্দ বিপুল সম্পত্তির অধীশ্বর হইয়া আপনার সাত পুত্রকে ভারতের সাত স্থানে গদীয়ানের কার্য্যে নিযুক্ত করিলেন। তাঁহার কনিষ্ঠ পুত্র মাণিকচাঁদ হইতে মুর্শিদাবাদের জগৎশেঠদিগের উৎপত্তি। হংকালে ঢাকানগরী বাঙ্গলার রাজধানী পদে প্রতিষ্ঠিত ছিল, সেই সময়ে মাণিকচার ঢাকার আগমনপূর্ব্বক আপনার গদী সংস্থাপন করেন। এই সময়ে মুর্শিদকুলী খা বাঙ্গলার দেওয়ান হইয়া ঢাকায় উপস্থিত হন। রাজস্বসম্বন্ধে মুর্শিদের হস্তে সমুদায় ভার অর্পিত হওয়ায়, অর্থের প্রয়োজনবশতঃ মাণিকচাদের সহিত তাঁহার বিলক্ষণ সৌহার্দ ঘটে।

তাহার পর নবাব আজিমওখানের ‘সহিত দুর্শিদের মনোবিবাদ উপস্থিত হইলে, দেওয়ান মুর্শিদকুলী ১১০৪ খৃঃ আব্দ ঢাকা পরিত্যাগ করিয়া, মুর্শিদাবাদে আপনার বাসস্থান নির্দেশ করিলে, রাজস্ববিভাগের যাবতীয় কর্মচারী ও শেঠ মানিকচাঁদও মুর্শিদাবাদে আসেন।’ মাণিকচাঁদ মুর্শিদাবাদে উপস্থিত হইয়া ভাগীরথীর পূর্ব্বতীরে মহিমাপুরনামক স্থানে আপনার বাসভবন নির্মাণ করেন।  অদ্যাপি তাঁহার বংশীয়েরা মহিমাপুরেই বাস করিতে- ছেন। মুর্শিদকুলী খাঁর উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মাণিকচাঁদেরও শ্রীবৃদ্ধি হইতে থাকে। মাণিকচাঁদ মুর্শিদকুলীকে সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করিতেন। এইরূপ কথিত আছে যে, মুর্শিদকুলী বাঙ্গলা, বিহার, উড়িষ্যার নিজামতী পদ প্রাপ্ত হইলে, মুর্শিদাবাদে যে টাকশাল স্থাপন করিয়াছিলেন, তাহা মাণিকক্চাদের পরামর্শানুসারেই করেন।

মহিমা- পুরের শেঠদিগের বাসভবনের সম্মুখে ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে আজিও সেই টাকশালের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হইয়া থাকে। কিন্তু তাহার সমস্তই এক্ষণে ভাগীরথীগর্ভস্থ। নবাবের অনুমতিতে বৎসরের প্রথমে তিপ্র বারই পুণ্যাহ হইত। এই সময়ে যাবতীয় জমীদার অথবা তাঁহাদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত হইয়া আপন আপন দের রাজস্ব প্রদান করিতেন।

 

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৪)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৪)