০১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
আদানি বিরোধে সিঙ্গাপুর সালিশি স্থগিত: বাংলাদেশ আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন রাস আল খাইমাহর ওল্ড কর্নিশে দুই ১২ বছর বয়সী পাকিস্তানি বন্ধুর করুণ মৃত্যু মে মাসের যুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক সাফল্য: মার্কিন প্রতিবেদনে নতুন তথ্য আরব সাগরে ১৩০ মিলিয়ন ডলারের মাদক জব্দ ইউরোপীয় ইউনিয়ন কীভাবে চীন থেকে আসা স্বল্পমূল্যের ই-কমার্স পণ্য নিয়ন্ত্রণে আনতে চায় চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনায় জাপানি সামুদ্রিক পণ্যের আমদানি স্থগিতের ইঙ্গিত বাবর ও রিজওয়ানের র‌্যাঙ্কিং উন্নতি আধুনিক শিল্পে রেকর্ড—ক্লিম্টের চিত্রকর্ম বিক্রি ২৩৬.৪ মিলিয়ন ডলারে আইটি শেয়ারের উত্থান ও বিদেশি প্রবাহে বাজারে নতুন গতি আর্থিক সংকটে এয়ার ইন্ডিয়ার নতুন দাবি: পাকিস্তান আকাশপথ বন্ধ, বিকল্প পথ চেয়ে চীনের কাছে লবিং

রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়কবিহীন সেতুতে হাজারো মানুষ বিপাকে

নতুন সেতু, কিন্তু নেই সংযোগ সড়ক

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড় হজরতপুর ইউনিয়নের রামনাথপাড়ায় প্রায় এক বছর আগে একটি নতুন সেতু নির্মিত হয়েছে। উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে নির্মিত এই সেতুটি এখনও কার্যকর হয়নি, কারণ এর দুই প্রান্তে কোনো সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়নি।

প্রতিদিনের ভোগান্তি

সেতুটি দিয়ে পাঁচ গ্রামের মানুষ যাতায়াতের সুযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও এখন তা দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বাঁশের সিঁড়ি বানিয়ে অস্থায়ীভাবে সেতু ব্যবহার করছেন। এভাবে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ।

শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও রোগীদের জন্য এই পথ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বর্ষাকালে বাঁশ পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটছে। ইতোমধ্যে অনেকে আহত হয়েছেন।

সরকারের অর্থ ব্যয়, কিন্তু কাজ অসম্পূর্ণ

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ তহবিল থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে এম/এস মুনতাহা কনস্ট্রাকশন।

সেতুটি রামনাথপাড়া ও সাদুরপাড়াকে সংযুক্ত করা মাত্র ১০০ মিটার দূরের ইটের সড়কের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও সেটি ব্যবহারযোগ্য হয়নি।

স্থানীয়দের ক্ষোভ

গ্রামের বাসিন্দা নিতাই চন্দ্র বলেন, “এখন সেতুটি আমাদের জন্য মৃত্যুফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিকাদার প্রায় ১০-১১ মাস আগে সেতুর কাজ শেষ করলেও সংযোগ সড়ক তৈরি করেনি।”

অন্য এক বাসিন্দা ধনেশ্বর রায় বলেন, “আমাদের বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না ঠিকমতো। বৃষ্টি হলে বাঁশের সিঁড়ি এত পিচ্ছিল হয় যে আমরা মাঝে মাঝে নিজেরাই অস্থায়ী ব্যবস্থা করি। সেতু আছে, কিন্তু রাস্তা না থাকায় তা একেবারেই অকেজো।”

কৃষক ও জনজীবনে প্রভাব

এই দুর্ভোগ শুধু শিক্ষার্থী বা সাধারণ যাত্রীদের নয়, কৃষকরাও ভোগান্তিতে পড়েছেন। সংযোগ সড়ক না থাকায় তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে পারছেন না। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

কর্তৃপক্ষের অবস্থান

ঠিকাদার আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই সড়কের কাজ শেষ হবে। তবে তিনি পানিবন্দি পরিস্থিতির কারণে দেরির কথা উল্লেখ করেছেন।

পিআইও মনিরুজ্জামান সরকার জানান, কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় ঠিকাদার এখনো চূড়ান্ত অর্থ পাননি। দ্রুত কাজ শেষ করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে।

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকৌশলী বাদশা আলমগীর বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় সেতুর কাজ হয়েছে এবং ওই দপ্তরই ঠিকাদারকে অর্থ প্রদান করে।

এদিকে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলতামিস বিল্লাহ বলেছেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

স্থানীয়দের দাবি

গ্রামবাসীর দাবি, কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, কিন্তু রাস্তা না থাকায় তা অকেজো রয়ে গেছে। তারা চান, দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি যেন কার্যকর করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

আদানি বিরোধে সিঙ্গাপুর সালিশি স্থগিত: বাংলাদেশ আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন

রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়কবিহীন সেতুতে হাজারো মানুষ বিপাকে

১১:১৭:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নতুন সেতু, কিন্তু নেই সংযোগ সড়ক

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড় হজরতপুর ইউনিয়নের রামনাথপাড়ায় প্রায় এক বছর আগে একটি নতুন সেতু নির্মিত হয়েছে। উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে নির্মিত এই সেতুটি এখনও কার্যকর হয়নি, কারণ এর দুই প্রান্তে কোনো সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়নি।

প্রতিদিনের ভোগান্তি

সেতুটি দিয়ে পাঁচ গ্রামের মানুষ যাতায়াতের সুযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও এখন তা দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বাঁশের সিঁড়ি বানিয়ে অস্থায়ীভাবে সেতু ব্যবহার করছেন। এভাবে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ।

শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও রোগীদের জন্য এই পথ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বর্ষাকালে বাঁশ পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটছে। ইতোমধ্যে অনেকে আহত হয়েছেন।

সরকারের অর্থ ব্যয়, কিন্তু কাজ অসম্পূর্ণ

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ তহবিল থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে এম/এস মুনতাহা কনস্ট্রাকশন।

সেতুটি রামনাথপাড়া ও সাদুরপাড়াকে সংযুক্ত করা মাত্র ১০০ মিটার দূরের ইটের সড়কের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও সেটি ব্যবহারযোগ্য হয়নি।

স্থানীয়দের ক্ষোভ

গ্রামের বাসিন্দা নিতাই চন্দ্র বলেন, “এখন সেতুটি আমাদের জন্য মৃত্যুফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিকাদার প্রায় ১০-১১ মাস আগে সেতুর কাজ শেষ করলেও সংযোগ সড়ক তৈরি করেনি।”

অন্য এক বাসিন্দা ধনেশ্বর রায় বলেন, “আমাদের বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না ঠিকমতো। বৃষ্টি হলে বাঁশের সিঁড়ি এত পিচ্ছিল হয় যে আমরা মাঝে মাঝে নিজেরাই অস্থায়ী ব্যবস্থা করি। সেতু আছে, কিন্তু রাস্তা না থাকায় তা একেবারেই অকেজো।”

কৃষক ও জনজীবনে প্রভাব

এই দুর্ভোগ শুধু শিক্ষার্থী বা সাধারণ যাত্রীদের নয়, কৃষকরাও ভোগান্তিতে পড়েছেন। সংযোগ সড়ক না থাকায় তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে পারছেন না। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

কর্তৃপক্ষের অবস্থান

ঠিকাদার আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই সড়কের কাজ শেষ হবে। তবে তিনি পানিবন্দি পরিস্থিতির কারণে দেরির কথা উল্লেখ করেছেন।

পিআইও মনিরুজ্জামান সরকার জানান, কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় ঠিকাদার এখনো চূড়ান্ত অর্থ পাননি। দ্রুত কাজ শেষ করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে।

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকৌশলী বাদশা আলমগীর বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় সেতুর কাজ হয়েছে এবং ওই দপ্তরই ঠিকাদারকে অর্থ প্রদান করে।

এদিকে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলতামিস বিল্লাহ বলেছেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

স্থানীয়দের দাবি

গ্রামবাসীর দাবি, কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, কিন্তু রাস্তা না থাকায় তা অকেজো রয়ে গেছে। তারা চান, দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি যেন কার্যকর করা হয়।