ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি
ভারতের তামিলনাড়ুর করুর জেলায় অভিনেতা-রাজনীতিবিদ বিজয়ের সমাবেশে পদদলিত হয়ে অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৫০ জনের বেশি মানুষ। চেন্নাই থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে শনিবার এই ঘটনা ঘটে।
বিজয়ের দেরিতে আগমন ও জনসমাগম
তামিঝাগা ভেত্রি কাজাগম (টিভিকে) প্রধান বিজয় নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। পুলিশের মহাপরিদর্শক জি. ভেঙ্কটরামন জানান, সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৩টায়, কিন্তু বিজয় পৌঁছান সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে।
আয়োজকরা প্রায় ১০ হাজার মানুষের ভিড় অনুমান করলেও সেখানে একসঙ্গে প্রায় ২৭ হাজার মানুষ জড়ো হয়। আগের সমাবেশগুলোয় এত বড় ভিড় হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। পর্যাপ্ত খাবার ও পানির ব্যবস্থাও ছিল না, ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদে দাঁড়িয়ে মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।
নিরাপত্তা ও পুলিশের ভূমিকা
ভিড় সামলাতে ৫০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে পুলিশ ভূমিকা রাখলেও সমাবেশস্থলে মানুষের সংখ্যা এত বেশি ছিল যে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। বিজয় নিজেও পুলিশের কাজের প্রশংসা করেছেন এবং দলীয় কর্মীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে এই দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ কারণ খুঁজে বের করতে এক সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভিড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়া
সকাল ১১টা থেকেই সমাবেশস্থলে মানুষ আসা শুরু করে। রাত ৭টা ৪০ মিনিটে বিজয় বক্তব্য শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গরমে অসুস্থ হয়ে অনেকেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বেশি বিপদে পড়ে।
পরিস্থিতি সামলাতে বিজয় মাঝপথে বক্তব্য বন্ধ করেন, নিজ হাতে পানির বোতল ছুঁড়ে দেন অসুস্থদের দিকে এবং পুলিশকে দ্রুত সাহায্যের আহ্বান জানান।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ও ক্ষতিপূরণ ঘোষণা
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্টালিন সাংবাদিকদের জানান, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৯ জন। তাদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, ১৭ জন নারী, ৪ জন ছেলে শিশু ও ৫ জন মেয়ে শিশু। আহত ৫১ জন চিকিৎসাধীন আছেন, তাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও ২৫ জন নারী।
সরকার নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রীরা হাসপাতাল ও ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি করছেন।
বিজয়ের শোকবার্তা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজয় গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন, “আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। এই ব্যথা ও দুঃখ বর্ণনাতীত। করুর-এ প্রাণ হারানো প্রিয় ভাইবোনদের পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।”