ফিলিপিনো-আমেরিকান গায়িকা জেসিকা সানচেজ আমেরিকার গট ট্যালেন্ট (AGT) সিজনের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। নয় মাসের গর্ভাবস্থায় ব্রুনো মার্স ও লেডি গাগার গান পরিবেশন করে তিনি জয় করেছেন দর্শকের হৃদয় এবং এক মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার। এটি শুধু একটি প্রতিযোগিতার জয় নয়, বরং দৃঢ়তা, প্রতিভা ও নতুনভাবে উঠে দাঁড়ানোর প্রতীকী মুহূর্ত।
শিরোপা জয়
সর্বাধিক ভোট পেয়ে সানচেজ ইমপ্রোভ র্যাপার ক্রিস টার্নারকে পরাজিত করেন। এর সঙ্গে তিনি অর্জন করেন এক মিলিয়ন ডলারের পুরস্কারও।
দুই দশক পর প্রত্যাবর্তন
মাত্র দশ বছর বয়সে প্রথমবার AGT-তে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সিজনের সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন সেই সময়। দুই দশক পর আবার একই মঞ্চে ফিরে এসে শিরোপা জয় তার ক্যারিয়ারের পূর্ণতা এনে দিয়েছে।
আমেরিকান আইডলে অভিজ্ঞতা
দুই হাজার বারো সালে আমেরিকান আইডলের একাদশ সিজনে অংশ নিয়ে রানার-আপ হন সানচেজ। সেই অভিজ্ঞতাই তাকে মূলধারায় পরিচিতি এনে দেয় এবং গড়ে তোলে বিশাল ভক্তগোষ্ঠী।
অ্যালবাম ও হলিউডে পদচারণা
দুই হাজার তেরো সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম অ্যালবাম Me, You & the Music। পাশাপাশি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ গ্লি-তে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রমাণ করেন নিজের বহুমুখী প্রতিভা।
সঙ্গীত ছাড়ার ভাবনা
একসময় সানচেজ সঙ্গীত থেকে দূরে সরে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন। তবে AGT-ফাইনালের পর এক ফেসবুক লাইভে তিনি স্বীকার করেন, আবার মঞ্চে ফেরা তার জন্য ছিল ভীতিকর হলেও তা হয়ে ওঠে নিরাময়কারী অভিজ্ঞতা। ভক্তদের ভালোবাসাই তাকে নতুন করে সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
গর্ভাবস্থায় অভিনব পারফরম্যান্স
ফাইনালে ব্রুনো মার্স ও লেডি গাগার গান পরিবেশনের সময় তিনি ছিলেন নয় মাসের গর্ভবতী। শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক চাপ সামলেই গান গাওয়া তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস
পুরো প্রতিযোগিতায় সানচেজ ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এই যাত্রা ছিল উদ্দেশ্যপূর্ণ—মানুষকে অনুপ্রাণিত করা যে খ্যাতি বা অর্থ নয়, বরং স্বপ্ন অনুসরণই আসল বিষয়।
পরিবারের সমর্থন
মা এডিথা এনবিসিকে জানান, মেয়ের এই অর্জনে তিনি গর্বিত। স্বামী রিকি গ্যালার্ডোও বলেন, এই যাত্রা তাদের জন্য ছিল উদ্দেশ্যমূলক এবং নতুনভাবে শুরু করার অনুপ্রেরণা।
‘শেষ নিঃশ্বাস’ দিয়ে গান
ফাইনালের পর সানচেজ বলেন, “আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস দিয়েছি মঞ্চে।” প্রতিটি সুর তিনি গেয়েছেন যেন সেটিই জীবনের শেষ পরিবেশনা। তার এই জয় প্রমাণ করেছে—দ্বিতীয় সুযোগের গুরুত্ব রয়েছে, প্রতিভা সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যায় না, আর দৃঢ়তাই সবচেয়ে সুন্দর গল্প লিখে দেয়।
অনুপ্রেরণার প্রতীক
এই সাফল্য শুধু সানচেজের ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক—যেখানে মা, শিল্পী ও স্বপ্নবাজ নারী একসঙ্গে মিলিত হয়েছে।