গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগে ক্ষুব্ধ স্বজন ও স্থানীয়রা শনিবার একটি বেসরকারি ক্লিনিক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনার বিবরণ
২৫ বছর বয়সী পারুল বেগম, পলাশবাড়ীর বিশ্রামগাছি গ্রামের শামীম মিয়ার স্ত্রী, শুক্রবার রাতে প্রসবের জন্য উপজেলা সদরস্থ মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে ভর্তি হন। পরিবারের দাবি, পারুল আগে থেকেই দুই সন্তানের জননী ছিলেন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে সিজারিয়ান করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাত ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। কিন্তু শনিবার ভোর ৪টার মধ্যে পারুল ও নবজাতক উভয়ের মৃত্যু ঘটে।
মৃত্যু গোপন রাখার অভিযোগ ও স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্বজনদের অভিযোগ, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রথমে মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করে এবং মৃত মা ও শিশুকে রংপুরে পাঠানোর জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকে। এতে সন্দেহ সৃষ্টি হলে স্বজন ও স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
তারা ক্লিনিকের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং ভবনের একাংশে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রশাসনের বক্তব্য
পলাশবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রবিুল ইসলাম জানান, “আমরা অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েছিলাম, তবে আমাদের পৌঁছানোর আগেই ক্লিনিক কর্মীরা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।”
পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, “শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এখনও পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবার বা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। “অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন ওসি।
চিকিৎসা সেবায় নজরদারির দাবি
এই ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর মানহীন চিকিৎসা ও প্রশাসনিক নজরদারি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, এমন মৃত্যুর পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
# গাইবান্ধা, পলাশবাড়ী, চিকিৎসা অবহেলা, মা ক্লিনিক, প্রসূতি মৃত্যু, ক্লিনিক ভাঙচুর, বাংলাদেশ পুলিশ, সারাক্ষণ রিপোর্ট