পড়ি কি মরি অবস্থায় পশ্চাদপসারণে বাস্ত ছিলেন। দলবল নিয়ে জেনারেল স্টিলওয়েল জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একশ’ চল্লিশ মাইল পায়ে হেঁটে
এই অধ্যায়ে ইভো, আর্নন্ড স্পিলবার্গ ও অন্যান্যদের কাহিনি বলব। ইভোর জন্ম হয় ১৯২০ সালের তেরোই মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের অকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে। ১৯৪২ সালের মার্চ মাসে সে যখন মার্কিন সেনাবাহিনীতে নাম লেখায় তখনো সে টালসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। সেনাবাহিনীতে নাম লেখানোর পর পরই সামরিক ট্রেনিং-য়ের জন্য ইভোকে মেরিল্যান্ডের অ্যাবার্ডিনে পাঠানো হয়, সেখানে তাঁকে সামরিক অধ্যাদেশের (মিলিটারি অর্ডিন্যান্স) ওপরে দেড়মাসের ক্র্যাশ কোর্স করতে হয়।

৪৯০তম বোম্বার্ডমেন্ট স্কোয়াড্রনের পুনমিলণ অনষ্ঠানে লেখক নাইম হকের
ইভো যখন এই ক্র্যাশ কোর্স সমাপ্ত করে, ঠিক সেই সময়টায় জাপানিবাহিনীর তীব্র মারকাট্টা অগ্রগতির মুখে মার্কিন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোসেফ স্টিলওয়েল তার স্টাফ ও বর্মি মিশনারি নার্সবাহিনীসহ, সাকুল্যে একশ’ চৌদ্দজনের দল নিয়ে, পড়ি কি মরি অবস্থায় পশ্চাদপসারণে বাস্ত ছিলেন। দলবল নিয়ে জেনারেল স্টিলওয়েল জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একশ’ চল্লিশ মাইল পায়ে হেঁটে, পাহাড়পর্বত ডিঙিয়ে হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে ভারতের মণিপুরে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
দিন কয়েক বাদে মণিপুর থেকে দিল্লীতে যান, দিল্লীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জেনারেল স্টিলওয়েল সংক্ষিপ্তাসারে বার্মা-এপিসোডের অভিজ্ঞতা এভাবে বলেন যে “আমি নিঃসঙ্কোচে স্বীকার করছি যে আমরা গোহারা হেরেছি। বার্মা ছেড়ে উর্ধ্বশ্বাসে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি আমরা এবং এই অবমাননার লজ্জা রাখি কোথায়।”

জাপানিদের কাছে গোহারা হারবার পরে দলবলসমেত জেনারেল স্টিওয়েল বার্মার দুর্গম জঙ্গলের মধ্য দিয়ে মণিপুরে যাচ্ছেন; মে ১৯৪২ সাল।
বার্মা দখলের পর জাপান প্রথম চোটেই চীনমুখী ৭০০ মাইল দীর্ঘ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থলপথটি বন্ধ করে দেয়- এই স্থলপথ দিয়েই জাপানিবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত চীনের জাতীয় সরকারকে বহির্বিশ্ব থেকে রসদ সাপ্লাই পাঠানো হতো। চীনের উপকূলীয় অঞ্চল জাপান পূর্বেই দখল করে নিয়েছিল, এখন বার্মা টু চীন স্থলপথ ব্লক করে দিয়ে জাপান- বহির্বিশ্ব থেকে চীনে রসদ সাপ্লাই সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিতে পারবে বলে আশা করা মোটেই অযৌক্তিক ছিল না।
(চলবে)
নাঈম হক 



















