দক্ষিণ চীন সাগরের প্রেক্ষাপট
হ্যানয়ে সফরে এসে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম সহায়তা আরও বাড়বে। সাম্প্রতিক সময়ে কোস্টগার্ড কাটার ও প্রশিক্ষক বিমান (টি-৬) সরবরাহকে তিনি “পরবর্তী ধাপের ভিত্তি” হিসেবে উল্লেখ করেন। ভিয়েতনাম নেতৃত্ব সতর্ক ভাষায় বলেছে—মারিটাইম নিরাপত্তা, দুর্যোগ-সহায়তা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিই অগ্রাধিকার। দুই পক্ষই জোট বা ঘাঁটি-সংক্রান্ত কোনো বার্তা এড়িয়ে গেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যখন হ্যানয়ে দাঁড়িয়ে বিস্তৃত সহযোগিতার কথা বলেন, তখন সেটি ইঙ্গিতবহ হয়—অঞ্চলে বাস্তবতার পালাবদল ঘটছে।
কীভাবে গভীরতা পেতে পারে অংশীদারত্ব
প্রথমত, সামুদ্রিক পর্যবেক্ষণ: রাডার-স্যাটেলাইট-প্যাট্রোল ডেটা সমন্বয়ে অনুপ্রবেশকারী বা মিলিশিয়া নৌযান শনাক্তকরণ। দ্বিতীয়ত, বিমান প্রশিক্ষণ: টি-৬ প্রশিক্ষকের মাধ্যমে পাইলট সাপ্লাই-চেইন তৈরি হবে, যা ভবিষ্যতে জটিল প্ল্যাটফর্মে রূপ নেবে। তৃতীয়ত, মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা: টাইফুনপ্রবণ ভিয়েতনামের জন্য লজিস্টিক মহড়া, হেভি-লিফট সমন্বয়, নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার আপগ্রেড গুরুত্বপূর্ণ। চতুর্থত, প্রতিরক্ষা শিল্পের রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র: সেন্সর ও ছোট নৌযানের যন্ত্রাংশ-সার্ভিসিং দ্রুত হবে।

তবে সীমাবদ্ধতাও স্পষ্ট। ভিয়েতনামের “থ্রি-নো” নীতি—জোট নয়, বিদেশি ঘাঁটি নয়, কাউকে নিয়ে আরেক দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নয়—অপরিবর্তিত। যুক্তরাষ্ট্রও বড় চুক্তির বদলে ধারাবাহিকতা চায়: কোস্টগার্ড সহায়তা, খুচরা যন্ত্রাংশ, জাহাজ-রাইডার ও টহল মহড়া। এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিয়মভিত্তিক সমুদ্রে উপস্থিতি জোরদার হবে। বেইজিংয়ের জন্য বার্তা—হ্যানয়কে “পাল্টে” দেওয়া নয়; বরং তাকে বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তোলা, যেন বিতর্কিত পানিসীমায় “না” বলার সক্ষমতা বাড়ে।
দেশীয় রাজনীতিও ফ্যাক্টর। মার্কিন কংগ্রেস বাস্তব ফল চায়; ভিয়েতনাম প্রযুক্তি-হস্তান্তর ও বৃত্তি-ভিত্তিক মানবসম্পদ উন্নয়নে আগ্রহী। ২০২৬-এ যদি বাজেট স্থিতিশীল থাকে, তবে কাটার-ট্রেনার-শিপরাইডার থেকে শুরু করা নরম প্রকল্পগুলোই চুপিচুপি প্রসার পাবে—লাইন ধরে, মহড়া ধরে, নতুন রেডিওর পরিষ্কার শব্দে দূরের অংশীদারকেও কাছের মতো শোনাবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















