সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতীফ সিদ্দিকী হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবিন ও বিচারপতি মো. সগির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে লতীফ সিদ্দিকীর মুক্তির পথ উন্মুক্ত হলেও রাষ্ট্রপক্ষের সম্ভাব্য আপিল এখন মামলার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
হাইকোর্টে জামিন পেলেন সাবেক মন্ত্রী
সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতীফ সিদ্দিকী সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবিন ও বিচারপতি মো. সগির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার জামিন আবেদন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
এই মামলার অপর আসামি সাংবাদিক মঞ্জুর আলমকেও আদালত জামিন দিয়েছেন।
আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা
আব্দুল লতীফ সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী জেডআই পান্না, আব্দুল্লাহ আল হারুন ভুঁইয়া ও ফজলুর রহমান।
অন্যদিকে, সাংবাদিক মঞ্জুর আলমের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী সারা হোসেন ও রমজান আলী শেখদার।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন উপ-অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইব্রাহিম খলিল।
জামিন আদেশ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
আব্দুল্লাহ আল হারুন জানান, আদালত তার মক্কেল লতীফ সিদ্দিকীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “যদি রাষ্ট্রপক্ষ এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল না করে, তাহলে তার মুক্তিতে কোনো আইনি বাধা থাকবে না।”
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল জানান, তারা এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
লতীফ সিদ্দিকীর ভাই ও বঙ্গবীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সিদ্দিকীও শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার পটভূমি
গত ২৮ আগস্ট রাজধানীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন ‘মঞ্চ ৭১’-এর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ সাবেক মন্ত্রীসহ কয়েকজনকে আটক করে।
‘জুলাই ফাইটারস’ নামে নিজেদের পরিচয় দেওয়া একদল যুবক দুপুরের দিকে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তারা অভিযোগ করে যে আটক ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল—‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের সংবিধান’। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তারা।
মামলা ও পরবর্তী গ্রেপ্তার
ঘটনার পর শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরদিন, ২৯ আগস্ট ঢাকার এক আদালত সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতীফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানসহ মোট ১৬ জনকে ওই মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার অন্যান্য আসামিদের নাম
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন:
মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুর আলম, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌসিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শহিদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহাম্মদ আলী এবং আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম।
সারসংক্ষেপ
এই মামলায় হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আদেশ লতীফ সিদ্দিকীর মুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সিদ্ধান্ত মামলার ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে।
ঘটনাটি মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিষয়ক আলোচনার একটি সভা থেকে শুরু হয়ে এখন দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে আলোচিত আইনি প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 




















