বাংলাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির দিনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বেশ কম দেখা গেছে।
এর আগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ের করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করার দিন ধার্য হলে আওয়ামী লীগ ‘ঢাকা লকউনে’র ডাক দেয়।
ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন যাবত ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় যানবাহনে অগ্নিসংযােগ ও ককটেল বিস্ফােরণের ঘটনায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এর মধ্যেও সবশেষ ১২ ঘণ্টায় অন্তত সাতটি যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সড়কে ব্যাপক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল এবং বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষকে তল্লাশি করতেও দেখা গেছে।
এর মধ্যে ঢাকার দুই জায়গা থেকে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে গত তিনদিন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বাসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর বুধবার থেকেই ঢাকা, নারায়নগঞ্জ এবং গাজীপুরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিম কোর্ট এলাকা, কাকরাইলসহ সব গুরুত্বপূর্ণ এলাকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল।
র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন এবং সেনা সদস্যদের সতর্ক পাহাড়া ছিল ঢাকার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে।
বিবিসি সংবাদদাতারা ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখ এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘুরে ঢাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন, সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রবেশ পথে পুলিশের সাঁজোয়া যান ছিল।
এদিন ট্রাইব্যুনালে ঢোকার সময় আইনজীবী ও সাংবাদিকদের তল্লাশি করা হয়।
এছাড়া ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে যানবাহন তল্লাশির খবরও পাওয়া গেছে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়ে সেনাসদস্য মোতায়েন চেয়ে সেনাবাহিনীকে একটি চিঠিও দেয়।
এদিকে, ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “কোথাও কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা সতর্ক আছি।”
তবে, তিনি জানান, মিরপুর ১৪ থেকে দুইটি ককটেলসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের প্রবেশমুখ থেকে হাবিবুর রহমান নামে আরেকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন এবং সেনা সদস্যদের সতর্ক পাহাড়া ছিল ঢাকার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে।
বিবিসি সংবাদদাতারা ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখ এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘুরে ঢাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন, সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রবেশ পথে পুলিশের সাঁজোয়া যান ছিল।
এদিন ট্রাইব্যুনালে ঢোকার সময় আইনজীবী ও সাংবাদিকদের তল্লাশি করা হয়।
এছাড়া ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে যানবাহন তল্লাশির খবরও পাওয়া গেছে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়ে সেনাসদস্য মোতায়েন চেয়ে সেনাবাহিনীকে একটি চিঠিও দেয়।
এদিকে, ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “কোথাও কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা সতর্ক আছি।”
তবে, তিনি জানান, মিরপুর ১৪ থেকে দুইটি ককটেলসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের প্রবেশমুখ থেকে হাবিবুর রহমান নামে আরেকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ধানমন্ডি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আব্দুল কাইয়ুম বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “সন্দেহভাজন হিসেবে হাবিবুর রহমানকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে প্রবেশমুখের পূর্ব দিক থেকে আটক করা হয়েছে। সেখানে তার সাথে উপস্থিত জনগণ কথা বলার সময় তারা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পুলিশ তাকে জিম্মায় নিয়ে আটক করে।”
কেন তাকে সন্দেহ করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “তার সাথে থাকা ব্যাগ ও মোবাইল চেক করে তাকে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের সদস্য বলে মনে হয়েছে।”
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মি. কাইয়ুম।
ঢাকার রাস্তায় গাড়ি, লোকাল বাসের সংখ্যা কম দেখা গেছে এদিন। রাস্তাঘাটে মানুষের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম দেখা গেছে।
এছাড়া ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাওয়ার সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমেছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
হানিফ পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, সকাল ছয়টা থেকে বারোটা পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের একশটি গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যাত্রী কম থাকায় এই সংখ্যা অর্ধেকের কম।
” সকাল ছয়টা থেকে একেকটা রুটের ছয়টার মতো গাড়ি ছেড়ে যায়। সেই হিসেবে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে আমার বারোটা পর্যন্ত ১০০ গাড়ি চলে যাওয়ার কথা। যাত্রীর সংখ্যা এতো কম যে গাড়ি ছাড়ছে ৫০ টারও কম ” বলেন মি. হোসেন।
যানবাহনে আগুন
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও গোপালগঞ্জ এবং শরীয়তপুরে অন্তত সাতটি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে।
তবে, এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাশেদ বিন খালেদ জানান, ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় অগ্নিসংযোগের এসব ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে ঢাকার দুই স্থানে দুইটি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে।
গতকাল দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে মিরপুর ডিওএইচএসের সামনে পল্লবী থানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।
পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
রাত পৌনে তিনটায় কমলাপুর রেলস্টেশনের সামনে থাকা একটি হিউম্যান হলার-লেগুনায় আগুন দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট আগুন নিভিয়ে ফেলে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে টাঙ্গাইলের বাসাইলেরও বড়াইখোলায় একটি থেমে থাকা বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরে আগুন নেভানোর কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মি. খালেদ জানান, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় আকিজ পেপার মিলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গোপালগঞ্জে গণপূর্ত কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিকআপ এবং একটি পাজেরো গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এসব আগুন পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিয়ন্ত্রণে আনেন।

শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর সামনে সকাল ছয়টায় ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ফায়ারা সার্ভিসের কর্মকর্তা মি. খালেদ জানান, নাওডোবা গোলচত্বরে একটি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
সকাল ছয়টা থেকে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটায় ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় রেললাইনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ওই জেলার আখাউড়া-চিনাইর সড়কের পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে এ ঘটনা ঘটেছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শফিকুল ইসলাম।
তবে এতে হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
আধা ঘণ্টার জন্য ওই রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল বলেও জানান তিনি।
আগুন দেওয়ার এই ঘটনায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী তূর্ণা নিশীথা এবং ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন দুইটি আধা ঘণ্টা ব্রাক্ষণবাড়িয়া রেলস্টেশনে আটকা পড়ে।
আগুন নেভানোর পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
BBC News বাংলা
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















