পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী কর্মীদের মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের জামায়াতের মনোনয়নপ্রাপ্ত এমপি প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলও রয়েছেন। তবে পুলিশ ঘটনার পরপরই জানায়, আহতের সংখ্যা দুই পক্ষই অতিরঞ্জিতভাবে জানিয়েছে এবং প্রকৃত সংখ্যা অনেক কম।
ঘটনার স্থান ও আহতদের অবস্থা
বিকেলে সাহাপুর ইউনিয়নের চর গোরগড়ি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। আহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। সবাইকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সংঘর্ষের কারণ ও ঘটনার বিবরণ
স্থানীয়দের জানান, আবু তালেব মণ্ডল দুপুরে রহিমপুর বোত্তোলা থেকে চর গোরগড়ি আলহাজ মোড়ের দিকে প্রায় ১৫০টিরও বেশি মোটরসাইকেলের একটি মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় যোগীর মোড়ে তাদের সঙ্গে বিএনপির একটি মিছিলের মুখোমুখি দেখা হয়ে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে রূপ নেয়।
জামায়াত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলের অভিযোগ
আবু তালেব মণ্ডল দাবি করেন, তাদের নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের নেতৃত্বে বিএনপি কর্মীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং গুলি পর্যন্ত ছোড়ে। তিনি বলেন, তাদের ৬০-৭০ জন আহত হয়েছেন, কয়েক জন গুরুতর অবস্থায় রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রায় ১৫টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ৩০টির মতো মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের পাল্টা অভিযোগ
অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, জামায়াতের কর্মীরাই আগে তাদের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষায় তারা প্রতিরোধ করলে তাদের ১৫-২০ জন কর্মী আহত হন। তিনি দাবি করেন, জামায়াত মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে এবং হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বয়ং আবু তালেব মণ্ডল নিজেই।
পুলিশের মন্তব্য
ঘটনা সম্পর্কে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসএম আব্দুন নুর জানান, দুই পক্ষের মধ্যে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে এবং ৪-৫ জন আহত হয়েছেন। এর বাইরে অতিরিক্ত কিছু বলার মতো তথ্য নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পাবনায় সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষ নির্বাচনী এলাকায় পূর্ববর্তী রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও তীব্র করেছে। দুই পক্ষই একে অপরকে দায়ী করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রকৃত ঘটনার বিবরণ স্পষ্ট হবে না।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















