দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর অর্থনৈতিক আঘাতে কাঁপছে। ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কায় ঝড়–বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১,৫০০ ছাড়িয়েছে, আর মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছুঁয়েছে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার।
ঝড়ে বিপর্যস্ত সুমাত্রা: ৮০০ জনের মৃত্যু, শতাধিক গ্রাম বিচ্ছিন্ন
নভেম্বরের শেষ দিক থেকে সুমাত্রায় আঘাত হানা ঝড়ে ৮০০’র বেশি মানুষ মারা গেছে এবং প্রায় ৫০০ জন নিখোঁজ। রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হওয়ায় বহু গ্রাম এখনো উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ থেকে বিচ্ছিন্ন।
সেন্ট্রাল আচেহর রিজেন্ট হাইলি যোগা জানান, প্রধান চারটি সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে এবং ২৯৫ গ্রামের মধ্যে প্রায় ৯০টি এখনো খাদ্য ও ত্রাণ পায়নি।
দেশের মোট জিডিপির এক-পঞ্চমাংশ আসে সুমাত্রা থেকে, যেখানে পাম অয়েল, খনি ও কৃষি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ৬৮.৬৭ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ, যা ইন্দোনেশিয়ার জিডিপির ০.২৯%।

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে বড় ধাক্কা
৫.২% প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে থাকা ইন্দোনেশিয়ার জন্য এই দুর্যোগ নতুন চাপ তৈরি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, সুমাত্রার বিপর্যয় বছরের শেষ প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধি ৫.৪%–৫.৬% টার্গেটের নিচে নামিয়ে দিতে পারে।
থাইল্যান্ডে ১৮৫ জনের মৃত্যু, ক্ষতি ৫০০ বিলিয়ন বাত
দক্ষিণ থাইল্যান্ডে বন্যায় ১৮৫ জন নিহত হয়েছে। রাবার, সিফুড প্রক্রিয়াকরণসহ স্থানীয় শিল্পের ৭০০’র বেশি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০০ বিলিয়ন বাত—যা ২০২৪ সালের জিডিপির প্রায় ৩%।
ভিয়েতনামে ২ লাখ বাড়ি প্লাবিত, ক্ষতি ৮৫ ট্রিলিয়ন ডং

এই বছর বহুবার বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়েছে ভিয়েতনাম। নভেম্বরের প্রবল বর্ষণে ১০০’র বেশি মানুষ মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে, আর প্লাবিত হয়েছে ২০০,০০০ এর বেশি বাড়ি। মোট ক্ষতি ৮৫ ট্রিলিয়ন ডং ছাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ক্ষতি মোকাবিলায় দেশটি ৩.৫২ ট্রিলিয়ন ডং বরাদ্দ করে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে।
শ্রীলঙ্কায় অবকাঠামো ধ্বংস, ক্ষতি ৬–৭ বিলিয়ন ডলার
বন্যা ও ভূমিধসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা লেগেছে শ্রীলঙ্কায়। ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির ৩%–৫%। ২০২২ সালের ঋণখেলাপি সংকট থেকে এখনো না উঠতে পারা দেশটি আবারও আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি অনুরা কুমারা দিসানায়েকে জরুরি অবস্থা জারি করে জানিয়েছেন, পুনর্গঠনে বড় পরিমাণ বিদেশি সহায়তা জরুরি।




























সারাক্ষণ রিপোর্ট 




















