বিশ্বের সবচেয়ে বড় করপোরেট বিটকয়েন মালিক ‘স্ট্র্যাটেজি’ এবার নিজেই ক্রিপ্টোর ধসের শিকার। ঋণ নিয়ে বিপুল পরিমাণ বিটকয়েন কেনার দুঃসাহসিক কৌশল এখন কোম্পানিটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে বড় ঝুঁকির দিকে।
স্ট্র্যাটেজির উত্থান ও ঝুঁকিপূর্ণ মোড়
একসময় সাধারণ সফটওয়্যার কোম্পানি ছিল স্ট্র্যাটেজির। কিন্তু প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল সেলার এটিকে “ডিজিটাল-ক্রেডিট ভেহিকল” হিসেবে নতুনভাবে গড়েন, যেখানে মূল শক্তি ছিল বিটকয়েন।
২০২0 সাল থেকে কোম্পানিটি ধার করে বিটকয়েন কেনা শুরু করে এবং গত বছর তা আরও বাড়ানো হয়। এখন কোম্পানির হাতে আছে ৬.৫ লাখ বিটকয়েন—মোট বাজারের ৩%। বিনিয়োগের অর্থ জোগাড় করতে তারা ইক্যুইটি, কনভার্টিবল বন্ড ও মোটা লভ্যাংশযুক্ত প্রেফারড স্টক ইস্যু করে।
শেয়ারদরে উল্লম্ফন, তারপর পতন
গত বছর শুরুর থেকে এই জুলাই পর্যন্ত স্ট্র্যাটেজির শেয়ারদর বেড়েছিল প্রায় ৬০০%—যেখানে একই সময়ে বিটকয়েন বাড়ে ২০০% এর কম। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল—যতক্ষণ না বিটকয়েনের দাম হঠাৎ নামতে শুরু করল।
অক্টোবরের শুরু থেকে বিটকয়েনে ২৫% পতন। একই সময়ে স্ট্র্যাটেজির শেয়ারদরে পতন ৪০%-এরও বেশি। এখন কোম্পানির বাজারমূল্য ৫৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে—যা তাদের বিটকয়েন সম্পদের মূল্য থেকেও কম।
চাপ বাড়াচ্ছে ঋণ ও সুদ
বিটকয়েনে সর্বস্ব বিনিয়োগ করায় কোম্পানির আয় কমে গেছে। প্রতি বছর তাদের ৮০০ মিলিয়ন ডলার সুদ ও লভ্যাংশ পরিশোধ করতে হয়।
ডিসেম্বরের ১ তারিখে স্ট্র্যাটেজি জানায়, ইক্যুইটি ইস্যুর মাধ্যমে তোলা ১.৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ২১ মাসের লভ্যাংশ দায় মেটানো যাবে। তবে সামনের চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন।

এসএমসিআই সূচক থেকে বাদ পড়ার ঝুঁকি
জানুয়ারিতে কোম্পানিটি এসএমসিআই সূচক থেকে বাদ পড়তে পারে। এতে প্যাসিভ ফান্ডের গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ হারাবে তারা।
বিটকয়েনের দাম না বাড়লে প্রকৃত সংকট শুরু হবে ২০২৭ সালে, যখন স্ট্র্যাটেজির কনভার্টিবল ঋণ পরিশোধের সময় ঘনিয়ে আসবে।
বিটকয়েন বিক্রি শুরু—বাজারে বাড়ছে আতঙ্ক
মাইকেল সেলার দীর্ঘদিন ধরে বলছিলেন, কোম্পানি কখনই বিটকয়েন বিক্রি করবে না। কিন্তু ডিসেম্বরের ১ তারিখে সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙে বিক্রির সিদ্ধান্ত আসে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাইকোর তথ্য বলছে, পুরো বাজারে বর্তমানে কেনাবেচার মোট অর্ডার ৬০০ মিলিয়ন ডলারেরও কম। অর্থাৎ বড় ধরনের বিক্রি বাজারকে ডুবিয়ে দিতে পারে।
১০ অক্টোবরের ১৯ বিলিয়ন ডলারের লিকুইডেশন বিটকয়েনের দাম ১২% নামিয়ে দিয়েছিল—এটাই সম্ভাব্য বিপদের ইঙ্গিত।
স্ট্র্যাটেজির সাফল্য যেমন আলোচনায় ছিল, সংকটও জায়গা করে নেবে আর্থিক ইতিহাসে। অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের বিপদ লুকানো থাকে। কিন্তু স্ট্র্যাটেজির ক্ষেত্রে শুরু থেকেই তা ছিল প্রকাশ্য।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে বিনিয়োগকারীদের দায় এড়ানোর সুযোগ থাকবে না।
#BitcoinCrash #CryptoNews #MicroStrategyCrisis #BTCMarket #CryptoInvestment #MichaelSaylor #DigitalAssets #FinancialRisk #CryptoAnalysis #SarkahonNews
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















