বাণিজ্য উদ্বৃত্তের পেছনের কারণ
সাল শেষে চীনের বার্ষিক বাণিজ্য উদ্বৃত্ত প্রথমবারের মতো ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে, যা দেশটির রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিকে নতুন এক মাইলফলকে তুলেছে। গাড়ি, যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিক পণ্যের রপ্তানি শক্ত অবস্থানে থাকায় এবং ভেতরের বাজারে ভোগ চাহিদা কম থাকায় আমদানি তুলনামূলক দুর্বল, এই দুইয়ের ব্যবধানই উদ্বৃত্তকে এত বড় করেছে। বেইজিংয়ের দৃষ্টিতে এটি বৈদেশিক মুদ্রা মজুত ও নীতিগত প্রভাব বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো অংশীদাররা বলেন—চীন এখনও পুরোনো ধাঁচের রপ্তানিনির্ভর প্রবৃদ্ধির ওপর বেশি ভর করছে। বিশেষ করে বৈদ্যুতিক গাড়ি ও সবুজ প্রযুক্তিতে ভর্তুকি ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার মাধ্যমে চীনা কোম্পানিগুলো প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে কি না, তা নিয়ে তদন্তের চাপ বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে শুল্ক বাড়ানো, অ্যান্টি-ডাম্পিং মামলা এবং বিনিয়োগ নজরদারি জোরদারের মতো পদক্ষেপ আলোচনায় আছে।

নীতিনির্ধারণ ও রাজনীতিতে প্রভাব
চীনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে অনেক দেশ একই সঙ্গে সুবিধা ও চাপ—দুইই অনুভব করছে। যুক্তরাষ্ট্রে এই নতুন তথ্য অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কড়া অবস্থানের পক্ষে কথা জোগাচ্ছে, বিশেষ করে ট্রাম্প আমলের শুল্ক বজায় রাখা বা বর্ধিত করার দাবিকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ব্যাটারি, সোলার প্যানেল ও ইভি খাতে আরও লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ নেবে কি না তা পর্যালোচনা করছে। বেইজিং যুক্তি দিচ্ছে, তাদের রপ্তানি সাফল্য মূলত উৎপাদন দক্ষতা ও উদ্ভাবনের ফল, অন্যায় সুবিধার নয়; একই সঙ্গে তারা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, অতিরিক্ত বাণিজ্য বাধা দিলে বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খল আবারও নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এত বড় উদ্বৃত্ত আসলে চীনের ভেতরকার ভোক্তা ব্যয়ের দুর্বলতা ও বিনিয়োগ নির্ভরতার ইঙ্গিতও দেয়। আর জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুরু করে অনেক এশীয় রপ্তানিনির্ভর দেশের জন্য চীনের এই অবস্থান পরবর্তী মাসগুলোতে বাজার, মুদ্রা ও কারখানার অর্ডার বই—সবখানেই প্রভাব ফেলবে।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















