খালি ছাদকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে রূপান্তরের চেষ্টা
বহু উন্নত দেশেই নীতিগতভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ঝুঁকির পরও লক্ষ লক্ষ ছাদ এখনো খালি পড়ে আছে—এই ফাঁকা জায়গাটাকেই টার্গেট করেছে নতুন প্রজন্মের সৌর স্টার্টআপগুলো। স্যাটেলাইট বা ড্রোনচিত্র ব্যবহার করে তারা কয়েক সেকেন্ডেই কোনো ভবনের ছাদের কোণ, ঢাল ও রোদ পড়ার সময় হিসাব করতে পারছে। এরপর মালিকদের সামনে তুলে ধরছে এক প্যাকেজ প্রস্তাব—প্রথমে কোনো অগ্রিম খরচ ছাড়াই প্যানেল বসানো, নির্দিষ্ট সময় ধরে কিস্তিতে বা বিদ্যুৎ বিল থেকে অর্থ পরিশোধ, আর সব কাগজপত্রের ঝক্কি কোম্পানির। অনেক ক্ষেত্রে এসব স্টার্টআপ স্থানীয় ব্যাংক বা গ্রীন ফান্ডের সঙ্গে মিলে বিশেষ অর্থায়ন সুবিধাও দিচ্ছে, যাতে মাঝারি আয়ের পরিবার বা ছোট ব্যবসা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

নীতিমালা, গ্রিড এবং জ্বালানি ন্যায়বিচার
তবে ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ ছড়িয়ে দিতে গেলে শুধু প্রযুক্তি নয়, দরকার স্থিতিশীল নীতিমালারও। অনেক সরকারই বিতরণভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ বাড়াতে আগ্রহী, কারণ এতে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ ফসিল ফুয়েলের ওপর নির্ভরতা কমে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণকারী কোম্পানি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর দুশ্চিন্তা—গ্রিড আপগ্রেডের খরচ কে দেবে, আর দুপুরের প্রচুর সৌরবিদ্যুতের সঙ্গে রাতে চাহিদা কীভাবে সামঞ্জস্য করা হবে। এজন্য স্টার্টআপগুলো স্বচ্ছ নেট-মিটারিং, কমিউনিটি সোলার প্রজেক্ট এবং গ্রিড ডেটায় সহজ প্রবেশাধিকার চাইছে, যেন ছোট ছোট ছাদ মিলিয়েও বড় বিনিয়োগের মতো নিরাপদ পোর্টফোলিও তৈরি করা যায়। একই সঙ্গে কর্মীরা বলছেন, কেবল ছাদে প্যানেল বসালেই জলবায়ু সংকটের সমাধান হবে না; পরিবহন, শিল্প ও কৃষিখাতেও বড় রূপান্তর লাগবে। তাই চুক্তি এমনভাবে করতে হবে, যাতে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বা সীমিত সাশ্রয়ের ফাঁদে না পড়ে। সব মহলকে সঙ্গে নিতে পারলে, শহরের আকাশরেখায় ছড়িয়ে থাকা নীল-কালো সৌর প্যানেলই হয়তো হয়ে উঠবে নীরব বার্তা—জ্বালানি রূপান্তর আর কেবল কনফারেন্সের আলোচনা নয়, বাস্তবের রাস্তায় এসে গেছে।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















