অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু হয়ে ইউরোপ, আমেরিকা ঘুরে নভেম্বর পর্যন্ত টানা প্রতিযোগিতা—দীর্ঘ টেনিস মৌসুম শরীর ও মন দুটোকেই ভেঙে দিচ্ছে। চোট, অবসাদ আর মানসিক চাপের কারণে একের পর এক খেলোয়াড় মাঝপথে থেমে যাচ্ছেন।
মৌসুম যত দীর্ঘ, ঝুঁকিও তত
এ বছরের টেনিস ক্যালেন্ডার শুরু হয়েছিল আগের বছরের শেষ দিকেই, শেষ হয়েছে ডেভিস কাপে। দুই সপ্তাহের বড় টুর্নামেন্ট বেড়েছে, ঘরে ফেরার সময় কমেছে। ফল হিসেবে ম্যাচ চলাকালেই অবসর, মৌসুম শেষ করে দেওয়া চোট আর মানসিক ভাঙন—সবই দেখা গেছে।
ম্যাচের মাঝেই থামার দিনগুলো
ইউএস ওপেনে টানা পাঁচ সেট খেলার পর এক দিনে একাধিক ম্যাচ মাঝপথে থেমে যায়। একই চিত্র বেসেলে, যেখানে কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালেও খেলোয়াড়রা চোটে থামেন। স্টকহোমে অ্যাকিলিস টেন্ডন ছিঁড়ে মৌসুম শেষ করেন হোলগার রুনে। জ্যাক ড্রেপার, টমি পল, হুবের্ত হুরকাচ—অনেকের বছরই কেটে গেছে চিকিৎসায়।
ভ্রমণের ক্লান্তি, মানসিক চাপ
এক মাসে একাধিক মহাদেশে খেলতে হয়েছে অনেককে। ভিন্ন কোর্ট, ভিন্ন আবহ, লাগাতার ফ্লাইট—শরীরের পাশাপাশি মানসিক বিশ্রামও মিলেনি। শীর্ষ খেলোয়াড়রা খোলাখুলিই বলেছেন, অফ-সিজন নেই বললেই চলে, প্রস্তুতির সময়ও কম।
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিরতি
নারীদের ট্যুরে এ বছর একাধিক খেলোয়াড় মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বলে বিরতি নেন। একঘেয়ে সফরজীবন, ফলের চাপ, একই মুখ—সব মিলিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন অনেকে। আগের বিরতির পর ফিরে এসে সাফল্যের গল্প লিখেছেন আমান্ডা আনিসিমোভা, যা অন্যদেরও সাহস জুগিয়েছে।
উজ্জ্বল গল্পের মাঝেই ক্ষত
সব কষ্টের মাঝেও ছিল আলো। আনিসিমোভার প্রত্যাবর্তন, বড় শিরোপা জয়, শীর্ষে নতুন নাম—সবই এসেছে। পুরুষদের ট্যুরে কার্লোস আলকারাস ও জানিক সিনারের দ্বৈরথ দর্শকদের মুগ্ধ করেছে, দীর্ঘতম ফাইনালও দেখা গেছে। তবু মৌসুম জুড়ে চোট আর ক্লান্তির ছায়া ছিল স্পষ্ট।
সংস্কার কেন জরুরি
ট্যুর সংক্ষিপ্ত না হলে এই সংকট বাড়বে—এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন খেলোয়াড়রাই। পয়েন্টের চাপ, র্যাঙ্কিংয়ের হিসাব আর দীর্ঘ সফর—সব মিলিয়ে শরীর-মন দুইই নাজুক হয়ে পড়ছে। টেনিসের জন্য প্রয়োজন প্রকৃত বিশ্রাম আর ভারসাম্যপূর্ণ ক্যালেন্ডার।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















