অস্ট্রেলিয়ায় চলমান অ্যাশেজ সিরিজে একের পর এক হার, মাঠের বাইরের বিতর্ক আর টানা সমালোচনার মধ্যে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস স্বীকার করেছেন, নেতৃত্ব জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন তিনি। তবে এই চাপ থেকে পালাতে চান না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন স্টোকস। বরং সতীর্থদের মানসিক অবস্থার কথা ভেবে সবার কাছেই সহমর্মিতা প্রত্যাশা করেছেন।

অ্যাশেজে বিপর্যয় আর বিতর্ক

তিন টেস্ট শেষে অস্ট্রেলিয়ার কাছে শূন্য–তিনে পিছিয়ে পড়েছে ইংল্যান্ড। সিরিজ জয়ের আশা কার্যত শেষ। এর মধ্যেই খেলোয়াড়দের অতিরিক্ত মদ্যপানের অভিযোগ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টের মাঝখানে কুইন্সল্যান্ডের নুসা শহরে বিরতির সময় কিছু খেলোয়াড়ের আচরণ খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন দলের শীর্ষ কর্তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওপেনার বেন ডাকেটকে ঘিরে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। যদিও বিষয়টি যাচাইয়ের কথা জানিয়েছে বোর্ড।

স্টোকসের কণ্ঠে ক্লান্তির স্বীকারোক্তি

চতুর্থ টেস্টের আগে স্টোকস বলেন, ইংল্যান্ড অধিনায়ক হিসেবে এই সময়টাই সবচেয়ে কঠিন। তবু তিনি দলের পাশে থাকতে চান এবং পুরো সফরে নেতৃত্ব দিয়ে যেতে চান। তার মতে, বছরের পর বছর তিন সংস্করণে খেলে খেলোয়াড়দের বাড়ির বাইরে থাকতে হয়, যা মানসিকভাবে ভীষণ চাপের। হারতে থাকলে সেই চাপ আরও বেড়ে যায়। এই বাস্তবতা না বুঝে কেবল সমালোচনা করলে সমস্যার সমাধান হয় না।

সহমর্মিতার আহ্বান

স্টোকস মনে করিয়ে দেন, খেলোয়াড়রাও মানুষ। মাঠের ব্যর্থতার সঙ্গে ব্যক্তিগত অনুভূতি, দূরে থাকার কষ্ট আর সর্বক্ষণ নজরদারির চাপ একসঙ্গে সামলাতে হয়। তাই এই মুহূর্তে সবার কাছ থেকে সামান্য সহমর্মিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। নিজের ক্যারিয়ারের কঠিন সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে স্টোকস বলেন, চাপ একসঙ্গে জমলে তা কতটা ভারী হয়ে ওঠে, তিনি ভালোই জানেন।

ডাকেটকে সমর্থন আর নেতৃত্বের দায়

সমালোচনার মাঝেও বেন ডাকেটকে দলে রেখে চতুর্থ টেস্টে নামাচ্ছে ইংল্যান্ড। স্টোকস জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ডাকেটের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। তার চোখে ডাকেট দলের ভেতরে প্রভাবশালী একজন সদস্য। একই সঙ্গে স্টোকস পরিষ্কার করেছেন, অধিনায়ক হিসেবে তার প্রধান দায়িত্ব এখন ড্রেসিংরুমের সবাইকে মানসিকভাবে ঠিক রাখা।

সামনে কঠিন পরীক্ষা

অস্ট্রেলিয়ায় টানা আঠারো টেস্ট জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। বাকি দুই ম্যাচের অন্তত একটিতে হার এড়াতে না পারলে শূন্য–পাঁচে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা সামনে আসতে পারে। তবু স্টোকসের বিশ্বাস, এই সমালোচনাকেই প্রেরণা হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। বক্সিং ডে টেস্টে সেই লড়াইয়েরই প্রস্তুতি নিচ্ছে দল।