“সি-১০৯”-য়ের প্রতিটি ফ্লাইটে পাঁচজন রক্ষণাবেক্ষণ মেকানিক থাকতেন- এঁদের মধ্যে তিনজন ফ্লাইট ইনজিনীয়ার….
“বি-২৪” বোমারু বিমানকে রূপান্তরিত করে তৈরি হয় “সি-১০৯” এবং এর উড্ডয়ন সীমানাকে বা রেঞ্জ-কে দুই হাজার একশ’ মাইল (প্রায় তিন হাজার তিনশ’ আশি কিলোমিটার) পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। ফলস্বরূপ, উঁচু-নিচু কুঁজো’র মতো ছড়িয়ে থাকা হিমালয় পর্বতমালার “হাম্প”-কে টপকে উড়ে উড়ে চীনের দূর দূরাঞ্চলগুলোতে সাপ্লাই পাঠানো সহজ হয়ে যায়।
তাছাড়াও, বিমান বাহনটি দূর-পাল্লার হওয়াতে এক সঙ্গে প্রায় নয় হাজার পাউন্ড (চার হাজার কিলোগ্রামের সামান্য বেশি) ওজনের সাপ্লাই বহন করতে সক্ষম ছিলো। স্মৃতিচারণের সময় অ্যান্থনি আমাকে বলেন যে, কুর্মিটোলা-টু-চীন ফুটে, “সি-১০৯”-য়ের প্রতিটি ফ্লাইটে পাঁচজন রক্ষণাবেক্ষণ মেকানিক থাকতেন- এঁদের মধ্যে তিনজন ফ্লাইট ইনজিনীয়ার, দুইজন গ্রাউন্ড মেকানিক থাকতেন। এটি ছিলো ‘রুল’, কাজেই মান্য করতে হবে।
বিমানের পাঁচ যাত্রিই যখন এয়ারক্র্যাফট-মেকানিক থাকতেন এমতাবস্থায় তাদের মধ্য থেকে আমরা তিনজন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতাম। পাঁচ পাঁচজন ক্রু থাকার হিসেবটি ছিলো এরকম পাঁচজনের মধ্যে একজন রেডি বা প্রস্তুত থাকতেন পরবর্তী ফ্লাইটে প্রস্থানের জন্য, একজন থাকতেন বিগত-ফ্লাইট থেকে নিদ্রিত অবস্থায় এবং তৃতীয় ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার বাকি দু’জনের সঙ্গে কাজে যুক্ত থাকতেন।
দুই গ্রাউন্ড মেকানিকের কাজ ছিল, গন্তব্যস্থানে পৌঁছানোমাত্রই প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ সম্পাদন করে বিমানটিকে ফিরতি যাত্রার জন্য রেডি রাখা। ফিরতি যাত্রায় বিমানটি যখন আবার আকাশে উঠত, তখন- গন্তব্যস্থলে যাওয়ার পথে হিমালয়ের “হাম্পের” উপর দিয়ে যাওয়ার সময় যে ক্রু আরামসে ঘুমোতেন, ফিরতি যাত্রায় তিনি ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজে নামতেন এবং ঝামেলাবিহীন নিরাপদ উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিতেন।
(চলবে)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৭)
নাঈম হক 


















