চতুর্থ অ্যাশেজ টেস্টের প্রথম দিনেই ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল এক দৃশ্যের সাক্ষী হলো মেলবোর্ন। শুক্রবারের খেলায় মাত্র এক দিনেই দুই দলের মিলিয়ে পড়েছে রেকর্ড ২০ উইকেট। ব্যাটিং বিপর্যয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫২ রানে গুটিয়ে গেলেও ইংল্যান্ডকে আরও কম রানে অলআউট করে ৪২ রানের লিড নিতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
রেকর্ড দর্শকের সামনে উত্তাল এমসিজি
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম দিনের খেলা দেখতে হাজির হন ৯৪ হাজার ১৯৯ দর্শক। একদিনের ক্রিকেটে এটিই বিশ্বরেকর্ড দর্শক উপস্থিতি। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ম্যাচে দর্শক ছিল ৯৩ হাজার ১৩ জন।
দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার এগিয়ে থাকা
দিনের শেষ ভাগে অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামতে হয়। এক ওভার সামলে তারা কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪ রান তোলে। সব মিলিয়ে তাদের লিড দাঁড়ায় ৪৬ রানে।
বক্সিং ডে টেস্টে নতুন রেকর্ড
এক দিনে ২০ উইকেট পড়া বক্সিং ডে টেস্টের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ড ছিল ১৯৯৮ সালের অ্যাশেজে পড়া ১৮ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটের একদিনে সর্বোচ্চ ২৭ উইকেট পড়েছিল ১৮৮৮ সালের লর্ডস অ্যাশেজে।

অ্যাশেজ আগেই ধরে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া
সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে টানা হারের কারণে মাত্র ১১ দিনের মাঠের লড়াইয়েই অ্যাশেজ ধরে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ টেস্টেও তারা শক্ত অবস্থান তৈরি করল প্রথম দিনেই।
টাংয়ের আগুনে অস্ট্রেলিয়ার ধস
টস জিতে বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। জশ টাং নিজের ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করে ৫ উইকেট নেন ৪৫ রানে। তার সুইং ও বাউন্সে অস্ট্রেলিয়া দ্রুত চাপে পড়ে। মধ্যাহ্নভোজের আগেই স্কোর দাঁড়ায় ৭২ রানে ৪ উইকেট।
স্টিভ স্মিথ ও লাবুশানের বিদায়
ট্রাভিস হেড ও জেক ওয়েদারাল্ড দ্রুত ফিরলে চাপ বাড়ে অস্ট্রেলিয়ার ওপর। মার্নাস লাবুশান স্লিপে ক্যাচ দেন, আর অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ড্রাইভ করতে গিয়ে মিডল স্টাম্প হারান। স্মিথকে আউট করতে পেরে উচ্ছ্বসিত টাং বলেন, ছোটবেলা থেকে তাকে দেখে বড় হয়েছেন, তাই এই উইকেট বিশেষ অনুভূতির।
শেষের দিকের লড়াই ও দ্রুত পতন
উসমান খাজা ২৯ রান করলেও বেশি দূর এগোতে পারেননি। নেসার ও ক্যামেরন গ্রিন ৫২ রানের জুটি গড়েন। তবে গ্রিন রানআউট হলে আবার ধস নামে। টাং এক ওভারে নেসার ও স্কট বোল্যান্ডকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ড শিবিরে প্রাণ ফেরান।

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বিপর্যয়
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডও টিকতে পারেনি। শুরুতেই তিন উইকেট হারায় দলটি। জো রুট শূন্য রানে আউট হলে স্কোর দাঁড়ায় ১৬ রানে ৪ উইকেট। এরপর হ্যারি ব্রুক ঝড়ো ব্যাটিং করে ৩৪ বলে ৪১ রান করেন। তবে বোল্যান্ডের টানা আঘাতে ইংল্যান্ডের ইনিংস ভেঙে পড়ে।
নেসারের উচ্ছ্বাস
ম্যাচ শেষে মাইকেল নেসার বলেন, একদিনে ২০ উইকেট পড়া ছিল পুরোপুরি ঘূর্ণিঝড়ের মতো। ছোটবেলা থেকে এমন দিনের স্বপ্ন দেখেছেন তিনি, ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়।
আর্চারকে হারানো ইংল্যান্ড
ম্যাচের আগে ইংল্যান্ড দলে বড় ধাক্কা আসে। তারকা পেসার জোফরা আর্চার সিরিজের বাকি অংশ থেকে ছিটকে যান। সিডনিতে ৪ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া পঞ্চম ও শেষ টেস্টেও তাকে পাবে না ইংল্যান্ড।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















