০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
পাঁচ হাজার ডলারের পথে সোনা, ২০২৬ সালেও ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকার আভাস জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমছে, ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা কাটছাঁট স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, আউন্সপ্রতি ছাড়াল ৪৪০০ ডলার এনসিপি নেতাকে গুলি: নারী সঙ্গী পলাতক, ফ্ল্যাট থেকে মাদকসংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার তারেক রহমানের দেশে ফেরা সামনে রেখে শঙ্কার কথা জানালেন মির্জা আব্বাস গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ওসমান হাদির বোন পাচ্ছেন অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান তিন যুগ, তিন ফাইনাল, একই বাধা ভারত—সারফরাজের নামেই আবার পাকিস্তানের জয়গাথা সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ে জট, দেশে ফেরা থামাচ্ছেন ভারতীয় কর্মীরা অ্যাশেজ ধরে রাখলো অস্ট্রেলিয়া মাত্র এগারো দিনে, কথিত দুর্বল দলেই ইংল্যান্ডকে ধস

জীবন আমার বোন (পর্ব-১১)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
  • 67

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

ভিতরের সব ঝনৎকার থেমে যায় এক সময়, খোকা বললে, ‘ব্যাস ব্যাস, থামো থামো মিউজিক কলেজের কাছে নেমে গেল খোকা।

কিছুক্ষণ কড়া নাড়ানাড়ির পর দরোজা খুলে দিলো সিদ্দিকাভাবী, নীলাভাবীর সতীন। বয়েস গড়িয়েছে ঢের, প্রায় রাজীব ভাইয়ের সমবয়েসী মনে হয়।

‘কে খোকা নাকি? ভিতরে এসো।’ দরোজা বন্ধ ক’রে সিদ্দিকাভাবী বললে, ‘অসুখ-বিসুখ ছিলো বুঝি?’

‘কই না তো?’

‘অনেকদিন এমুখো হওনি, তাই বলছি-‘

‘সময় পাইনি।’

‘চাকরি-বাকরিতে ঢুকে পড়েছো বুঝি?’

‘কই আর ”

‘বোনটাকে তো একবারও নিয়ে এলে না?’

‘আনবো আনবো ক’রে হ’য়ে ওঠে না আর কি!’

‘হবেও না কোনোদিন, তোমরা সব এক রসুনের গোড়া।’

একটা টুলের উপর টেবিলফ্যান চড়িয়ে সেটাকে চালিয়ে দিলো সিদ্দিকাভাবী। কাজের ভিতর থেকে কথা বলাটা সিদ্দিকাভাবীর পুরানো অভ্যেস; নিছক কথার প্রয়োজনে কখনও সময় খরচ করতে চায় না। খাটের তলা থেকে একটা পিকদান টেনে বের করতে করতে কিছুক্ষণ পর বললে, ‘খেয়েছো?’

‘হ্যাঁ।’

‘সত্যি তো?’

‘হ্যাঁ, সোজা বাড়ি থেকেই আপনাদের এখানে আসছি।’

‘বোসো তা’হলে, তোমার নীলাভাবী কুয়োতলায়’ উঠোনের দিকের দরোজার পর্দাটা ভালো ক’রে টেনে দিয়ে রান্নাঘরের দিকে চ’লে যায় সিদ্দিকাভাবী। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে খোকা। সিদ্দিকাভাবীর সামনে সবসময় সন্ত্রস্ত থাকে সে, মনে হয় অতি অল্পকালের মধ্যেই তাকে শিউরে উঠতে হবে। এমনভাবে কথা বলে, মনে হয় হাঁড়ির ভাত টিপছে, তারপর মাড় গালবে।

 

জীবন আমার বোন (পর্ব-১০)

জীবন আমার বোন (পর্ব-১০)

জনপ্রিয় সংবাদ

পাঁচ হাজার ডলারের পথে সোনা, ২০২৬ সালেও ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকার আভাস

জীবন আমার বোন (পর্ব-১১)

১২:০০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

ভিতরের সব ঝনৎকার থেমে যায় এক সময়, খোকা বললে, ‘ব্যাস ব্যাস, থামো থামো মিউজিক কলেজের কাছে নেমে গেল খোকা।

কিছুক্ষণ কড়া নাড়ানাড়ির পর দরোজা খুলে দিলো সিদ্দিকাভাবী, নীলাভাবীর সতীন। বয়েস গড়িয়েছে ঢের, প্রায় রাজীব ভাইয়ের সমবয়েসী মনে হয়।

‘কে খোকা নাকি? ভিতরে এসো।’ দরোজা বন্ধ ক’রে সিদ্দিকাভাবী বললে, ‘অসুখ-বিসুখ ছিলো বুঝি?’

‘কই না তো?’

‘অনেকদিন এমুখো হওনি, তাই বলছি-‘

‘সময় পাইনি।’

‘চাকরি-বাকরিতে ঢুকে পড়েছো বুঝি?’

‘কই আর ”

‘বোনটাকে তো একবারও নিয়ে এলে না?’

‘আনবো আনবো ক’রে হ’য়ে ওঠে না আর কি!’

‘হবেও না কোনোদিন, তোমরা সব এক রসুনের গোড়া।’

একটা টুলের উপর টেবিলফ্যান চড়িয়ে সেটাকে চালিয়ে দিলো সিদ্দিকাভাবী। কাজের ভিতর থেকে কথা বলাটা সিদ্দিকাভাবীর পুরানো অভ্যেস; নিছক কথার প্রয়োজনে কখনও সময় খরচ করতে চায় না। খাটের তলা থেকে একটা পিকদান টেনে বের করতে করতে কিছুক্ষণ পর বললে, ‘খেয়েছো?’

‘হ্যাঁ।’

‘সত্যি তো?’

‘হ্যাঁ, সোজা বাড়ি থেকেই আপনাদের এখানে আসছি।’

‘বোসো তা’হলে, তোমার নীলাভাবী কুয়োতলায়’ উঠোনের দিকের দরোজার পর্দাটা ভালো ক’রে টেনে দিয়ে রান্নাঘরের দিকে চ’লে যায় সিদ্দিকাভাবী। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে খোকা। সিদ্দিকাভাবীর সামনে সবসময় সন্ত্রস্ত থাকে সে, মনে হয় অতি অল্পকালের মধ্যেই তাকে শিউরে উঠতে হবে। এমনভাবে কথা বলে, মনে হয় হাঁড়ির ভাত টিপছে, তারপর মাড় গালবে।

 

জীবন আমার বোন (পর্ব-১০)

জীবন আমার বোন (পর্ব-১০)