শ্রী নিখিলনাথ রায়
এতদ্ব্যতীত মণিবেগম প্রভৃতির সঞ্চিত তহবিলে যে সমস্ত টাকা’ জমিয়াছিল, গবর্ণমেন্ট নবাব নাজিমকে তাহাও প্রদান করিতে অস্বীকৃত হন। লর্ড ডালহৌসির সময় হইতেই নবাব-নাজিমের গৌরবহ্রাসের সূচনা হয়। যিনি দেশীয় রাজন্যবর্গের ক্ষমতাহ্রাসের জন্য সংহারমূর্ত্তিতে ভারতে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, যাঁহার কুটিল কটাক্ষে অযোধ্যা, পঞ্জাব, সেতারা প্রভৃতি প্রদেশ হইতে স্বাধীনতালক্ষ্মী চিরদিনের জন্য অন্তর্হিতা হন, বাঙ্গলার নবাব-নাজিমের যে কিছু গৌরব ও ক্ষমতা ছিল, তাহারও লাঘব করিতে তিনি সঙ্কুচিত হইবেন কেন? তাই তিনি প্রথমে তাহার সূচনা করিয়া যান।
পরে ক্রমে ক্রমে অন্যান্য সবর্ণর জেনারেলও তাঁহারই রীতির অনুসরণ করেন। নবাব-নাজিম এই সমস্ত বিষয়ের জন্য’ ষ্টেট সেক্রেটারী সার্ চার্লস্ উডের নিকট আবেদন করিয়াছিলেন; পরে ‘স্বয়ং ইংলণ্ড যাত্রা করিতে বাধ্য হন। ব্রিটিশ গবর্ণমেন্ট তাঁহাকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়া নিরস্ত করেন। ইংলণ্ড হইতে বাঙ্গলায় প্রত্যাগত হইয়া, তিনি বাঙ্গলা, বিহার, উড়িষ্যার নবাব-নাজিম উপাধি চিরদিনের জন্য পরিত্যাগ করেন। তাহার পর হইতে তদ্বংশীয়েরা কেবল মুর্শিদাবাদের নবাব বাহাদুর নামে অভিহিত হইয়া আসিতেছেন।
সমস্ত বাঙ্গলা, বিহার, উড়িষ্যা যাঁহাদের নামের সহিত বিজড়িত ছিল, এক্ষণে কেবল মুর্শিদাবাদ তাহার স্থান অধিকার করিয়াছে! নাজিমের পরিবর্তে বাহাদুর মাত্র নবাবের সহিত যুক্ত হইয়াছে! মনসুর আলি খাঁ ১৮৮৪ খৃঃ অব্দের ৫ই নবেম্বর বেলা ১টা হইতে ২ টার মধ্যে পরলোক গত হন। সেই দিবসই তাঁহার অন্যতম ভাৰ্য্যা মালকা জামানিয়া বেগম স্বামীর পশ্চাদনুসরণ করিয়াছিলেন। মনসুর আলিকে প্রথমে জাফরাগঞ্জের সমাধিভবনে হুমায়ুজার পার্শ্বেই সমাহিত করা হইয়াছিল; পরে তাঁহার মৃতদেহ মক্কায় প্রেরিত হয়।
Sarakhon Report 



















