০১:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
দক্ষিণ ব্রাজিলে ভয়াবহ টর্নেডোতে অন্তত ৬ জন নিহত, আহত শতাধিক ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন ‘ফুং-ওয়ং’-এর আঘাত: কালমাগি’র ধ্বংসের পর নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত মার্ক উড আশ্বাস দিলেন, অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ার কটাক্ষ সত্ত্বেও আত্মবিশ্বাসী ইংল্যান্ড দল তাপ থেরাপিতে রক্তচাপ কমানোর আশার আলো: নতুন গবেষণায় চমকপ্রদ ফলাফল জাকার্তার মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: আতঙ্কে শহর, আহত ৫৫ জন গাজায় বর্জ্য সংকট: দূষণে ডুবে স্বাস্থ্য বিপর্যয় তানজানিয়ায় রক্তে রাঙানো দমন-পীড়ন: এক ভয়াবহ নতুন বাস্তবতা ভারতের অদ্ভুত স্থিতিশীলতা একক জীবন: বৈশ্বিক এককতা বৃদ্ধির কারণ এবং প্রভাব

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৬৬)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • 63
শশাঙ্ক মণ্ডল
চিনি গুড় শিল্প

তৃতীয় অধ্যায়

সুন্দরবন এলাকার উত্তরাংশে ব্রিটিশ রাজত্বে চিনি ও গুড় শিল্প এক উল্লেখযোগ্য শিল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। কৃষকরা বেশি করে এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে তা উনিশ শতকের শুরুতে লক্ষ করা যাচ্ছিল। চিনি শিল্পে কাঁচামাল সংগ্রহ করা হত প্রধানত খেজুর গাছ থেকে। অবশ্য অনেক জমিতে সে যুগে আখ চাষ করা হত।

১৭৯১ এর পরে এই এলাকায় আখের চাষ কমেছে। ৭৬ মন্বন্তর এর পরবর্তী বছরগুলিতে বিশেষ করে ১৭৮৬-৮৮ এর বন্যার পরবর্তীকালে চাষিরা ধান চাষের দিকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছিল। আখের চাষ কম হলেও খেজুর গাছকে কেন্দ্র করে এই বিরাট এলাকায় উনিশ শতকের শেষ দশক পর্যন্ত এই শিল্পের বিশেষ অগ্রগতি লক্ষ করা যায়।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন যশোর জেলায় বেশ কয়েকজন সাহেব কয়েকটি চিনিকল প্রতিষ্ঠা করেন। কোটচাঁদপুরে ‘দি ধোবা সুগার ফ্যাকটরিতে’ ইউরোপীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয় এবং পাশ্চাত্য দেশীয় পদ্ধতিতে চিনি উৎপাদনের চেষ্টা হয়। ১৮৪২ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে এই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।

মিঃ মিডহাউস কোটচাঁদপুরের এই কারখানা কিনে নেন। Westland-এর রিপোর্টে জানা যাচ্ছে ১৮৭১ খ্রীষ্টাব্দেও ঐ কারখানা চলছে। Glatstone Wylee Co. ১৮৪২ খ্রীষ্টাব্দে চৌগাছাতে চিনির কারখানা খোলে এবং মালকেনার জন্য কেশবপুর ক্রিমোহিনী, ঝিঙ্গেগাছা, নারকেলবেড়িয়া, কোটচাদপুর, চাঁদুড়িয়া, সাড়াপুল, বাদুড়িয়াতে আড়ত খোলে। ১৮৫০-এর দিকে এই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, তাহেরপুরে খেজুরের গুড় থেকে মদ তৈরির জন্য একটা কারখানা সাহেবরা প্রতিষ্ঠা করে।

কিন্তু ব্রিটিশ কোম্পানিগুলি চিনি শিল্পের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। দেশীয় বণিকরা এই শিল্পে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। দেশীয় শিল্পীরা ছোট ছোট কারখানার মাধ্যমে চিনি শিল্পের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারী শক্তি হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দক্ষিণ ব্রাজিলে ভয়াবহ টর্নেডোতে অন্তত ৬ জন নিহত, আহত শতাধিক

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৬৬)

১২:০০:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
শশাঙ্ক মণ্ডল
চিনি গুড় শিল্প

তৃতীয় অধ্যায়

সুন্দরবন এলাকার উত্তরাংশে ব্রিটিশ রাজত্বে চিনি ও গুড় শিল্প এক উল্লেখযোগ্য শিল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। কৃষকরা বেশি করে এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে তা উনিশ শতকের শুরুতে লক্ষ করা যাচ্ছিল। চিনি শিল্পে কাঁচামাল সংগ্রহ করা হত প্রধানত খেজুর গাছ থেকে। অবশ্য অনেক জমিতে সে যুগে আখ চাষ করা হত।

১৭৯১ এর পরে এই এলাকায় আখের চাষ কমেছে। ৭৬ মন্বন্তর এর পরবর্তী বছরগুলিতে বিশেষ করে ১৭৮৬-৮৮ এর বন্যার পরবর্তীকালে চাষিরা ধান চাষের দিকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছিল। আখের চাষ কম হলেও খেজুর গাছকে কেন্দ্র করে এই বিরাট এলাকায় উনিশ শতকের শেষ দশক পর্যন্ত এই শিল্পের বিশেষ অগ্রগতি লক্ষ করা যায়।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন যশোর জেলায় বেশ কয়েকজন সাহেব কয়েকটি চিনিকল প্রতিষ্ঠা করেন। কোটচাঁদপুরে ‘দি ধোবা সুগার ফ্যাকটরিতে’ ইউরোপীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয় এবং পাশ্চাত্য দেশীয় পদ্ধতিতে চিনি উৎপাদনের চেষ্টা হয়। ১৮৪২ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে এই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।

মিঃ মিডহাউস কোটচাঁদপুরের এই কারখানা কিনে নেন। Westland-এর রিপোর্টে জানা যাচ্ছে ১৮৭১ খ্রীষ্টাব্দেও ঐ কারখানা চলছে। Glatstone Wylee Co. ১৮৪২ খ্রীষ্টাব্দে চৌগাছাতে চিনির কারখানা খোলে এবং মালকেনার জন্য কেশবপুর ক্রিমোহিনী, ঝিঙ্গেগাছা, নারকেলবেড়িয়া, কোটচাদপুর, চাঁদুড়িয়া, সাড়াপুল, বাদুড়িয়াতে আড়ত খোলে। ১৮৫০-এর দিকে এই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, তাহেরপুরে খেজুরের গুড় থেকে মদ তৈরির জন্য একটা কারখানা সাহেবরা প্রতিষ্ঠা করে।

কিন্তু ব্রিটিশ কোম্পানিগুলি চিনি শিল্পের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। দেশীয় বণিকরা এই শিল্পে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। দেশীয় শিল্পীরা ছোট ছোট কারখানার মাধ্যমে চিনি শিল্পের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারী শক্তি হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করে।