১১:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপে পঞ্চদম সংশোধনী বাতিল চাওয়া রিটে যুক্ত হলো বিএনপি : বুধবার শুনানী

  • Sarakhon Report
  • ০৯:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • 13

নিজস্ব প্রতিনিধি 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল চাওয়া রিটে যুক্ত হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ বিষয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আবেদন করলে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার মঞ্জুর করে আদেশ প্রদান করেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের ওপর আজ বুধবার শুনানী হবার কথা রয়েছে।

আদালতে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল চেয়ে করা রিটে পক্ষভুক্ত হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) করা রিটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পুরো বিষয়টি না আসায় বিএনপি পক্ষভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সাথে ছিলেন ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল।

এর আগে ১৯ আগস্ট জনস্বার্থে পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তির করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফয়েজ আহমেদ। পরে আবেদনকারী পক্ষ রুলটি শুনানির জন্য বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন কোর্টে উপস্থাপন করেন।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এ ছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়; সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয়। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয় ওই সংশোধনীর মাধ্যমেই।

১৯ আগস্ট আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে আছে একসঙ্গে অনেকগুলো অনুচ্ছেদে পরিবর্তন বা সংশোধনী আনতে হলে গণভোট করতে হবে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের অনেকগুলো অনুচ্ছেদের পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু কোনো গণভোট করা হয়নি। গণভোট না করে সংশোধনী পাস করা সংবিধান পরিপন্থী।

‘তাছাড়া ত্রয়োদশ সংশোধনী সংক্রান্ত মামলার লিখিত সংক্ষিপ্ত আদেশে আপিল বিভাগ বলেছিলেন, পরবর্তী দুটি (দশম এবং একদশ) জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। কিন্তু সেই আদেশকে অমান্য করে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া হয়।

ফলে দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না করে দলীয় সরকারের অধীনে করা হয়। এ কারণে পঞ্চদশ সংশোধনী আপিল বিভাগের আদেশের সাথেও সাংঘর্ষিক এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিপন্থী’ -বলে জানান আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপে পঞ্চদম সংশোধনী বাতিল চাওয়া রিটে যুক্ত হলো বিএনপি : বুধবার শুনানী

০৯:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল চাওয়া রিটে যুক্ত হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ বিষয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আবেদন করলে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার মঞ্জুর করে আদেশ প্রদান করেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের ওপর আজ বুধবার শুনানী হবার কথা রয়েছে।

আদালতে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল চেয়ে করা রিটে পক্ষভুক্ত হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) করা রিটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পুরো বিষয়টি না আসায় বিএনপি পক্ষভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সাথে ছিলেন ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল।

এর আগে ১৯ আগস্ট জনস্বার্থে পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তির করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফয়েজ আহমেদ। পরে আবেদনকারী পক্ষ রুলটি শুনানির জন্য বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন কোর্টে উপস্থাপন করেন।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এ ছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়; সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয়। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয় ওই সংশোধনীর মাধ্যমেই।

১৯ আগস্ট আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে আছে একসঙ্গে অনেকগুলো অনুচ্ছেদে পরিবর্তন বা সংশোধনী আনতে হলে গণভোট করতে হবে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের অনেকগুলো অনুচ্ছেদের পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু কোনো গণভোট করা হয়নি। গণভোট না করে সংশোধনী পাস করা সংবিধান পরিপন্থী।

‘তাছাড়া ত্রয়োদশ সংশোধনী সংক্রান্ত মামলার লিখিত সংক্ষিপ্ত আদেশে আপিল বিভাগ বলেছিলেন, পরবর্তী দুটি (দশম এবং একদশ) জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। কিন্তু সেই আদেশকে অমান্য করে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া হয়।

ফলে দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না করে দলীয় সরকারের অধীনে করা হয়। এ কারণে পঞ্চদশ সংশোধনী আপিল বিভাগের আদেশের সাথেও সাংঘর্ষিক এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিপন্থী’ -বলে জানান আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।