আর্কাদি গাইদার
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
নিরুত্তাপ গলায় বলল, ‘কী, এখনও প্রাণটা বেরোয় নি, না? ভেবেছিলি মস্ত একজন কমরেড পেয়ে গেছিস, তাই না, কুত্তা কাঁহাকা? আমি দোনে যাচ্ছি ঠিকই, তবে তোদের ওই শুয়োরের বাচ্চা সিভের্সের কাছে নয়। যাচ্ছি কোথায় জানিস?
খাচ্ছি জেনারেল ক্রাস্স্নভের দলে যোগ দিতে।’
আমার দু-পা দূরে দাঁড়িয়ে ও হাতের ভারি লাঠিটা নাচাচ্ছিল।
বুকটা আমার ধকধক করতে লাগল। কোনো একটা দৃঢ়, কঠিন জিনিসের গায়ে বারবার আমার তোলপাড়-করা বুকটা ঠেকছিল। এক পাশ ফিরে শুয়ে ছিলুম আমি, ডান হাতটা ছিল বুকের ওপর। আর খুব সাবধানে, প্রায় বোঝা-যায়-না এমন ভাবে আমার আঙুলগুলো জ্যাকেটের নিচে, যেখানে গ্রুপ পকেটের মধ্যে ছিল আমার মাওজারটা, সেইখানে ঢুকতে লাগল।
ছেলেটা তখন যদি আমার হাতের এই নড়াচড়া লক্ষ্য করত তাহলেও ও সেদিকে নজর দিত না, কারণ আমার মাওজারের কথা ওর জানা ছিল না। এদিকে আঙুল দিয়ে মাওজারের গরম হাতলটা চেপে ধরে আন্তে-আন্তে সেফটি ক্যাটা খুলে নিলুম।
ইতিমধ্যে আমার শত্রু আমার কাছ থেকে আরও দু-তিন পা পিছিয়ে গেছে, হয় আমায় ভালোভাবে ঠাহর করে দেখতে, আর নয় তো (আর এই শেষের কারণটার সম্ভাবনাই ছিল বেশি) সপাটে লাঠি চালানোর সুবিধের জন্যে। হঠাৎ, কাঁপা-কাঁপা ঠোঁট দুটো প্রাণপণে চেপে আর অসাড় হয়ে-যাওয়া হাতটা সোজা করে পিস্তলটা পকেট থেকে টেনে বের করে ঝাঁপিয়ে-আসতে-তৈরি লোকটার দিকে তাক করলুম।
এক মূহূর্তের জন্যে ওর ভয়ে-বিকৃত মুখখানা দেখতে পেলুম। আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে ওর চিৎকার কানে এল একবার। আর সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রের মতো আমার আঙুল ট্রিগারে টান দিল….
আমার কাছ থেকে মাত্র হাত-দুই দূরে, মুঠো-করা হাতদুটো আমার দিকে ছড়িয়ে দিয়ে ও আছড়ে পড়ল। লাঠিটা গড়িয়ে পড়ল পাশে।