ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস
শাসনব্যবস্থা বা সরকার-এর কাঠামো বলতে এখন যা বোঝায় তা আজতেকদের সময় ছিল না। সামাজিক কাঠামোর ওপর সরকার বা শাসনপ্রক্রিয়া নির্ভর করত। সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস-এর একটি প্রথা আজতেকদের মধ্যে চালু ছিল। সবচেয়ে প্রথম বা উঁচুতে ছিল পিল্লি (Pilli) বা অভিজাত (Nobilty)।
প্রথমে এই অভিজাতব্যবস্থা বংশনুক্রমিক ছিল না (Hereditary) কিন্তু বাস্তবে উত্তরসূরী হিসাবে ছেলে/সন্তান বা সমাজজীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ পেত। এর মধ্যে ছিল সামাজিক সম্পদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার অন্যান্য জরুরী কেন্দ্র। জীবনযাত্রার বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই বৈষম্যমূলক সুযোগ সুবিধা ভোগ করার জন্য এই প্রজন্মের ছেলেরা পিল্লির পদে আসীন হবার সুযোগ পেত।
সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের দ্বিতীয় স্তরটি হল মাসে হুয়াল্লি (Macehulli)। এরা প্রথম দিকে ছিল চাষী। এদুয়ার্দো নোগুয়েরা (Eduardo Noguera) একটি হিসেব করে দেখেছিলেন যে পরবর্তীকালে মাত্র শতকরা কুড়িভাগ মানুষ কৃষি এবং খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। জনসংখ্যার বাকি আশি ভাগ ছিল কারিগর, ব্যবসায়ী এবং সৈনিক বা যোদ্ধা।
ঘটনাক্রমে মাসেহুয়ালিসদের বেশিরভাগ হস্তশিল্প বা অন্যান্য শিল্প সংক্রান্ত কাজে বিশেষ মনোযোগী ছিল। এইসব শিল্পীদের কাজ থেকে ভাল আয় করা সম্ভব ছিল এবং শহরের রাজস্বর অনেকটা জোগান দিত এইসব হস্তশিল্পী এবং কারিগর।
(চলবে)
আজতেক সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-১০)