সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারসংক্ষেপ
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক ‘ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অর্থনৈতিক আপডেট’ সতর্ক করেছে—রাশিয়ার মন্দা ও দুর্বল বৈশ্বিক চাহিদার জেরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অঞ্চলটির গড় প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশে নেমে যেতে পারে। ২০২৪-এ যে ৩.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, তা ধরে রাখতে হলে দ্রুত কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।
আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধির বর্তমান চিত্র
• ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি টিকেছে মূলত বেসরকারি ভোগ, মজুরি বাড়া, রেমিট্যান্স আর সহজ ঋণের জোরে।
• ইইউ অর্থনীতির ধীর গতি রপ্তানি আয়কে টেনে ধরেছে, ফলে সামগ্রিক গতি ঝিমিয়ে পড়ছে।
মূল্যস্ফীতি ও নীতিসূদ
• খাদ্য ও সেবার দাম লাফিয়ে ওঠায় ২০২৫-এর ফেব্রুয়ারিতে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে—মধ্য-২০২৪-এর ৩.৬ শতাংশ থেকে বেশ উঁচু।
• পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদ বাড়িয়েছে বা কমানো স্থগিত করেছে।
উপ-অঞ্চলীয় পূর্বাভাস
• মধ্য এশিয়া : তেল খাতের ধীর গতি ও রেমিট্যান্স কমায় প্রবৃদ্ধি ২০২৫-২৬-এ ৪.৭ শতাংশে নেমে আসবে।
• দক্ষিণ ককেশাস : ট্রানজিট আয় ও পুঁজি-শ্রম প্রবাহ কমে গড় হার ৩.৫ শতাংশে নামবে।
• পশ্চিম বলকান : গতি থমকে ৩.৪ শতাংশ; কেন্দ্রীয় ইউরোপ সামান্য এগিয়ে ২.৭ শতাংশে পৌঁছাবে।
• রাশিয়া : প্রবৃদ্ধি ১.৩ শতাংশে সঙ্কুচিত হবে; তুর্কিয়ে ৩.৩ শতাংশ, ইউক্রেন ২০২৫-এ ২ শতাংশে থাকবে।
টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধির রূপরেখা
উদ্ভাবন ও নতুন প্রযুক্তি দ্রুত গ্রহণে সহায়তা বাড়াতে হবে।
পুরো এসএমই-খাতে ছড়ানো ভর্তুকির বদলে তরুণ উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা দিন।
ভেঞ্চার ক্যাপিটালসহ দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি মূলধনের প্রবেশাধিকার সহজ করুন।
প্রতিযোগিতা নীতি শক্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ত বড় প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া দখল ভাঙুন।
গবেষণা-উন্নয়নে (R & D) লক্ষ্যভিত্তিক প্রণোদনা চালু রাখুন।
দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে প্রশিক্ষণ জোরদার করুন এবং অভিবাসী প্রতিভা ধরে রাখার উদ্যোগ নিন।
বিশেষজ্ঞ মত
• অ্যান্টোনেলা বাস্সানি (বিশ্বব্যাংক VP): “বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা ও দুর্বল বাণিজ্য অংশীদার প্রবৃদ্ধিকে চাপে ফেলছে—সংস্কারে আর দেরি করলে বাজে প্রভাব বাড়বে।”
• ইভাইলো ইজভর্সকি (প্রধান অর্থনীতিবিদ): “উচ্চ-আয়ের দলে পৌঁছাতে হলে কোম্পানিগুলোকে বড় হতে, উদ্ভাবন করতে ও প্রতিযোগিতা করতে দিতে হবে।”
উপসংহার
অঞ্চলটির প্রবৃদ্ধি শ্লথ হলেও সম্ভাবনা ফুরায়নি। উদ্যোক্তা-চালিত উদ্ভাবন, দ্রুত প্রযুক্তি গ্রহণ ও লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগই নতুন গতির ইঞ্জিন হতে পারে। নীতিনির্ধারকদের ঝুঁকি নেওয়া ও বেসরকারি খাতকে সামনে আনার সিদ্ধান্ত এখন সময়ের দাবি।
Leave a Reply