১২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

আব্দালি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ: উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের শক্তি প্রদর্শন

  • Sarakhon Report
  • ০৭:২৪:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
  • 49

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সফল উৎক্ষেপণ ও লক্ষ্য

পাকিস্তান শনিবার সফলভাবে স্বল্প-পাল্লার আব্দালি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রশিক্ষণমূলক উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৪৫০ কিলোমিটার এবং এতে উন্নত ন্যাভিগেশন প্রযুক্তি ও কৌশলগত গতিশীলতা রয়েছে।

আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়, এই উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতির মূল্যায়ন ও প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য যাচাই করা।

মহড়ার অংশ হিসেবে এক্স ইন্ডাস

এই উৎক্ষেপণ ছিল ‘এক্স ইন্ডাস’ নামক মহড়ার অংশ, যেখানে উপস্থিত ছিলেন আর্মি স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের (এএফএসসি) কমান্ডার, কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এবং পাকিস্তানের কৌশলগত সংস্থার বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা।

আইএসপিআর এক ভিডিও-ও প্রকাশ করেছে, যাতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সফল দৃশ্য দেখা গেছে।

 

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, চিফ অব জয়েন্ট চিফস জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা এই সফলতার জন্য সেনা সদস্য, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তারা পাকিস্তানের কৌশলগত বাহিনীর প্রস্তুতি ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে বলেন, এই সক্ষমতা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও প্রতিপক্ষকে নিরুৎসাহিত করতে যথেষ্ট।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পটভূমি

এই উৎক্ষেপণ এমন এক সময় হলো, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা চরমে। ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে এক ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যা ইসলামাবাদ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

এ ঘটনার পর পাকিস্তান সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে “অপারেশনাল ফ্রিডম” দিয়েছেন। ২৫ এপ্রিল থেকে আজাদ কাশ্মীরে (এজেকে) নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এক সপ্তাহ ধরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের অকারণে গোলাবর্ষণের পাল্টা জবাব দেয়।

প্রতিরোধের বার্তা

পাকিস্তানের বিশ্লেষকরা জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ছিল ভারতের প্রতি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি।

সামরিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি রিজভি এএফপি-কে বলেন, “এটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, ভারতের মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে। এটা শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই একটি বার্তা যে আমরা প্রস্তুত।”

সেনাপ্রধানের কড়া বার্তা

প্রধান সেনাপতি জেনারেল আসিম মুনির বৃহস্পতিবার বলেন, ভারতের যেকোনো “দুঃসাহসিকতা”র জবাব দেওয়া হবে “দ্রুত, কঠোর ও উন্নত পর্যায়ের” প্রতিক্রিয়ায়। পরদিন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সতর্ক করে বলেন, যদি ভারত যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে পাকিস্তান নিশ্চিত ও চূড়ান্ত জবাব দেবে।

কূটনৈতিক তৎপরতা

পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও, পাকিস্তান কূটনৈতিক স্তরে সংঘাত এড়াতে তৎপরতা চলছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুই পক্ষের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

এর আগে ২০২৪ সালের আগস্টে পাকিস্তান শাহিন-২ নামক আরেকটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করেছিল।

সূত্র: ডন ডটকমএএফপি

আব্দালি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ: উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের শক্তি প্রদর্শন

০৭:২৪:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সফল উৎক্ষেপণ ও লক্ষ্য

পাকিস্তান শনিবার সফলভাবে স্বল্প-পাল্লার আব্দালি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রশিক্ষণমূলক উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৪৫০ কিলোমিটার এবং এতে উন্নত ন্যাভিগেশন প্রযুক্তি ও কৌশলগত গতিশীলতা রয়েছে।

আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়, এই উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতির মূল্যায়ন ও প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য যাচাই করা।

মহড়ার অংশ হিসেবে এক্স ইন্ডাস

এই উৎক্ষেপণ ছিল ‘এক্স ইন্ডাস’ নামক মহড়ার অংশ, যেখানে উপস্থিত ছিলেন আর্মি স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের (এএফএসসি) কমান্ডার, কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এবং পাকিস্তানের কৌশলগত সংস্থার বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা।

আইএসপিআর এক ভিডিও-ও প্রকাশ করেছে, যাতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সফল দৃশ্য দেখা গেছে।

 

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, চিফ অব জয়েন্ট চিফস জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা এই সফলতার জন্য সেনা সদস্য, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তারা পাকিস্তানের কৌশলগত বাহিনীর প্রস্তুতি ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে বলেন, এই সক্ষমতা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও প্রতিপক্ষকে নিরুৎসাহিত করতে যথেষ্ট।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পটভূমি

এই উৎক্ষেপণ এমন এক সময় হলো, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা চরমে। ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে এক ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যা ইসলামাবাদ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

এ ঘটনার পর পাকিস্তান সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে “অপারেশনাল ফ্রিডম” দিয়েছেন। ২৫ এপ্রিল থেকে আজাদ কাশ্মীরে (এজেকে) নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এক সপ্তাহ ধরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের অকারণে গোলাবর্ষণের পাল্টা জবাব দেয়।

প্রতিরোধের বার্তা

পাকিস্তানের বিশ্লেষকরা জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ছিল ভারতের প্রতি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি।

সামরিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি রিজভি এএফপি-কে বলেন, “এটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, ভারতের মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে। এটা শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই একটি বার্তা যে আমরা প্রস্তুত।”

সেনাপ্রধানের কড়া বার্তা

প্রধান সেনাপতি জেনারেল আসিম মুনির বৃহস্পতিবার বলেন, ভারতের যেকোনো “দুঃসাহসিকতা”র জবাব দেওয়া হবে “দ্রুত, কঠোর ও উন্নত পর্যায়ের” প্রতিক্রিয়ায়। পরদিন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সতর্ক করে বলেন, যদি ভারত যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে পাকিস্তান নিশ্চিত ও চূড়ান্ত জবাব দেবে।

কূটনৈতিক তৎপরতা

পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও, পাকিস্তান কূটনৈতিক স্তরে সংঘাত এড়াতে তৎপরতা চলছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুই পক্ষের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

এর আগে ২০২৪ সালের আগস্টে পাকিস্তান শাহিন-২ নামক আরেকটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করেছিল।

সূত্র: ডন ডটকমএএফপি