সারাক্ষণ রিপোর্ট
রাজনীতিতে পুনরাগমন
সান ফ্রান্সিসকোতে এক গালা অনুষ্ঠানে সাবেক ভাইস–প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আবার জাতীয় মঞ্চে ফিরলেন। তিনি সমর্থকদের আহ্বান জানালেন—ডোনাল্ড ট্রাম্পের “সংকীর্ণ, স্বার্থপর” এজেন্ডার বিরুদ্ধে সংগঠিত হতে হবে, যা অর্থনীতি ও গণতন্ত্র উভয়েরই ক্ষতি করছে।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে কঠোর আক্রমণ
হ্যারিস বলেন, ট্রাম্পের ওঠানামা করা শুল্কই “আধুনিক সময়ের মানুষের সৃষ্ট সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সঙ্কট” তৈরি করেছে। এই নীতির ফলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, অবসর সঞ্চয় কমেছে এবং শ্রমবাজার সংকুচিত হয়েছে—সব মিলিয়ে “মন্দা আমন্ত্রণ জানানো” হচ্ছে।
গণতান্ত্রিক ভিত্তি বিপন্ন হওয়ার সতর্কবার্তা
ট্রাম্প প্রশাসন ফেডারেল কোর্টের আদেশ উপেক্ষা করছে, গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক কর্মসূচিতে কাটছাঁট করছে এবং “সত্য‑বাদীদের শাস্তি দিয়ে অনুগতদের পুরস্কৃত” করছে—এভাবে যুক্তরাষ্ট্র “সাংবিধানিক সঙ্কটের” মুখে, বলে হ্যারিস হুঁশিয়ার করেন।
“সাহস সংক্রামক”—সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা
“ভয় শুধু সংক্রামক নয়, সাহসও সংক্রামক,” উল্লেখ করে তিনি ডেমোক্র্যাটদের একসঙ্গে দাঁড়ানো ও প্রেসিডেন্টের “অসংবিধানিক ক্ষমতা কুক্ষিগত” প্রচেষ্টার মোকাবিলা করার আহ্বান জানান। বার্নি স্যান্ডার্স, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও‑কর্তেজ, কোরি বুকারসহ বিভিন্ন ডেমোক্র্যাট নেতার উদাহরণ দিয়ে তিনি দেখান, ‘নৈতিক স্পষ্টবাদিতা’ এখন জরুরি।
নীরবতার পর দৃশ্যপট বদলের ইঙ্গিত
২০২৪‑এর নির্বাচনে পরাজয়ের পর ওয়াশিংটন ছেড়ে তিনি তুলনামূলক নিরব ছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়ায় গর্ভনর পদে দাঁড়াবেন, নাকি ২০২৮‑এ জাতীয় নির্বাচনে ফিরবেন—এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য হ্যারিস নিজেকে এই গ্রীষ্মের শেষ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। রাজ্যের ভেতরে তাঁর ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি অনেককে ধারণা দিচ্ছে, তিনি হয়তো গর্ভনর দৌড়ে নামবেন।
ডোনার ও প্রার্থীদের অস্থিরতা
হ্যারিস সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত বড় দাতারা অর্থ ধরে রাখছেন; ফলে তহবিল সংগ্রহ কার্যত স্থবির। মুখ্য প্রার্থী কেটি পোর্টার স্বীকার করেছেন—হ্যারিস নেমে পড়লে “প্রায় সব মাঠ খালি” হয়ে যেতে পারে। অন্য অনেকে ইতোমধ্যে বিকল্প পদ অনুসন্ধান শুরু করেছেন।
দলীয় প্রশিক্ষণ মঞ্চে ঘরে ফেরার উল্লাস
প্যালেস হোটেলের সোনালি ঝলমলে বলরুমে ‘ইমার্জ আমেরিকা’র ২০‑বছর পূর্তি গালায় হ্যারিসকে ‘রক‑স্টার’‑এর মতো অভ্যর্থনা জানানো হয়। ২০০৩‑এ সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি পদে তাঁর জয়ই ছিল ইমার্জ‑এর পথপ্রেরণা। সেই সংযোগ আজও অব্যাহত, আর হ্যারিস সেই স্মৃতি টেনে সমর্থকদের উজ্জীবিত করেন।
পরবর্তী পদক্ষেপের প্রতীক্ষা
রাজনীতির ভুবনে হ্যারিসের ‘পরবর্তী ধাপ’ এখন কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু। নিজের মুখের ভাষা আর সূক্ষ্ম ‘দৃকভঙ্গিমা’ দিয়ে তিনি একই সঙ্গে ট্রাম্প‑বিরোধী বার্তা ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি হাজির করতে পারবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা মনে করেন। তবে নির্বাচনের পর থেকে ‘অতীত আক্ষেপ’ নয়—ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনাই হতে হবে তাঁর কৌশল, মত বিশেষজ্ঞদের।