০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

কানসাসের সংগ্রামী কৃষক পরিবারের অবিরাম লড়াই

প্রেক্ষাপট

নতুন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর কৃষিখাতে বড় ধরনের তহবিল কাটছাঁট ও মাশুল–অনিশ্চয়তার ঢেউ বয়ে যায়। কানসাসের লিভেনওয়ার্থ এলাকায় তৃতীয় প্রজন্মের কৃষক জ্যাকব ও জেনিফার থমাস দম্পতির ১৫ একর সবজি ক্ষেত আর পাঁচশ একর খামারের গরু-ভেড়া এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে।

কোথায় থেকে শুরু হল সংকট

– স্থানীয় স্কুল ও ফুড ব্যাংকে তাজা পণ্য সরবরাহের দুটি প্রকল্পে হঠাৎ ১ বিলিয়ন ডলার কর্তন হওয়ায় থমাসদের আয় ১০ শতাংশ কমে যায়; শুধু এ খাতেই প্রায় ৮ হাজার ডলারের ক্ষতি।


– খামারে উৎপাদন বাড়াতে ৭৫০ হাজার ডলারের ফেডারেল অনুদান প্রথমে স্থগিত, পরে পুনরায় চালু হলেও নির্মাণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় গুদাম প্রকল্পটি ঝুলে আছে।
– নতুন গ্রীনহাউসের জন্য নির্ভর করা ৮ হাজার ডলারের আরেকটি অনুদান পুরোই বাতিল।
– কানাডা থেকে আনানো ২ হাজার ক্রিস্যানথেমাম চারা যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা শুল্ক বিতর্কে আটকে পড়তে পারে—নতুন উদ্বেগ।

মানসিক চাপ পারিবারিক লড়াই

দীর্ঘদিন ধরে লাভের সীমারেখায় চলা খামারটির আর্থিক অনিশ্চয়তায় জ্যাকব থমাস হতাশা ও উদ্বেগে আক্রান্ত হন; গত শরতে চিকিৎসা শুরু করেছেন। স্ত্রী জেনিফারের ভাষায়, ‘‘বাচ্চাদের সামনে এখন আর টাকার কথা বলি না।’’ তবু পরিবারের তিন প্রজন্ম—জ্যাকব, জেনিফার, বাবা-মা ডেল ও ক্রিস—একসঙ্গে কাজ করে খামার টিকিয়ে রাখার চেষ্টায় আছেন।

মাঠে বাড়তি চাপ

– সরকারের ‘‘সহনশীল সময়’’ আবেদনের পরই কৃষিপণ্য কেনার অনুদান বাতিল; শুধু কানসাসেই কৃষকেরা ২৬ লাখ ডলার হারিয়েছেন।
– ৪৫ বছর ধরে ভাড়া নেওয়া ৬৪০ একর জমি বাড়িওয়ালা হঠাৎ ফেরত নেওয়ায় খড়গ নেমে আসে।
– অবশেষে স্থানীয় মার্কেটে প্রথম দিনে ১ হাজার ৮০০ ডলার বিক্রি কিছুটা আশার সঞ্চার করে—কিন্তু ৬০ ডজন ডিমের সিংহভাগ থেকেই গেছে।

সম্প্রদায়ের সহমর্মিতা

ফেসবুকে ৭ হাজারের বেশি ভক্ত, নামে তর্ক হয়—পটিং শেডে আশ্রয় নেওয়া ব্যাঙটির নাম হবে কি না। স্থানীয় মেয়র প্রোটেম থেকে শুরু করে প্রবীণ ক্রেতা সবাই স্টলে এসে খোঁজ নেন; কেউ কেউ জানান, অন্য কৃষক বিক্রি করে দিচ্ছে। ওয়াইন প্রসেসর ও সাবেক রেপাবলিকান প্রার্থী ব্রায়ান জেসিগার বলেন, ‘‘প্রতিটি কৃষকের জন্যই এ ধাক্কা জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছে।’’

আশার ঝিলিক

– কম আয়ের বাসিন্দাদের জন্য ক্যানসাস সিটিতে তাজা পণ্য সরবরাহ প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত বহাল রয়েছে।
– অবসর‑প্রস্তুত এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে নতুন জমি ভাড়ার সম্ভাবনা জেগেছে।
– বাজারে বিক্রি ভালো চললে খোয়া যাওয়া ৮ হাজার ডলার পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে।

সামনের পথে কী

থমাস পরিবার মনে করে, বছর এখনো অনেক বাকি; একটি দরজা বন্ধ হলে আরেকটি খোলা যায়। তবু সরকারি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, অনুদান স্থগিত আর বাজার অনিশ্চয়তার জোড়া চাপ তাদের মনে শঙ্কা জাগিয়েছে—‘‘এই প্রথমবার, সরকারের কথায় ভরসা রাখছি না,’’ বললেন জ্যাকব। তবু ফসল, পরিবার আর সম্প্রদায়ের প্রতি ভালোবাসাই তাদের চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে: ‘‘আমরা থামব না—যতক্ষণ মানুষ খেতে চায়, ততক্ষণ আমরা ফলাতে চাই।’’

শেষ কথা

কৃষকদের উপর নির্ভরশীল আমেরিকান খাদ্যব্যবস্থা নীতিনির্ধারকদের এক সিদ্ধান্তেই নড়বড়ে হতে পারে—থমাস পরিবারের সংগ্রাম তারই জীবন্ত উদাহরণ। অনিয়ন্ত্রিত কাটছাঁট ও ট্যারিফ যুদ্ধের চাপ কমাতে না পারলে গ্রামীণ আমেরিকার বহু এমন ছোটখাটো খামার হয়তো আর দম নিতেই পারবে না।

 

 

 

 

 

কানসাসের সংগ্রামী কৃষক পরিবারের অবিরাম লড়াই

০১:১৯:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

প্রেক্ষাপট

নতুন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর কৃষিখাতে বড় ধরনের তহবিল কাটছাঁট ও মাশুল–অনিশ্চয়তার ঢেউ বয়ে যায়। কানসাসের লিভেনওয়ার্থ এলাকায় তৃতীয় প্রজন্মের কৃষক জ্যাকব ও জেনিফার থমাস দম্পতির ১৫ একর সবজি ক্ষেত আর পাঁচশ একর খামারের গরু-ভেড়া এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে।

কোথায় থেকে শুরু হল সংকট

– স্থানীয় স্কুল ও ফুড ব্যাংকে তাজা পণ্য সরবরাহের দুটি প্রকল্পে হঠাৎ ১ বিলিয়ন ডলার কর্তন হওয়ায় থমাসদের আয় ১০ শতাংশ কমে যায়; শুধু এ খাতেই প্রায় ৮ হাজার ডলারের ক্ষতি।


– খামারে উৎপাদন বাড়াতে ৭৫০ হাজার ডলারের ফেডারেল অনুদান প্রথমে স্থগিত, পরে পুনরায় চালু হলেও নির্মাণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় গুদাম প্রকল্পটি ঝুলে আছে।
– নতুন গ্রীনহাউসের জন্য নির্ভর করা ৮ হাজার ডলারের আরেকটি অনুদান পুরোই বাতিল।
– কানাডা থেকে আনানো ২ হাজার ক্রিস্যানথেমাম চারা যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা শুল্ক বিতর্কে আটকে পড়তে পারে—নতুন উদ্বেগ।

মানসিক চাপ পারিবারিক লড়াই

দীর্ঘদিন ধরে লাভের সীমারেখায় চলা খামারটির আর্থিক অনিশ্চয়তায় জ্যাকব থমাস হতাশা ও উদ্বেগে আক্রান্ত হন; গত শরতে চিকিৎসা শুরু করেছেন। স্ত্রী জেনিফারের ভাষায়, ‘‘বাচ্চাদের সামনে এখন আর টাকার কথা বলি না।’’ তবু পরিবারের তিন প্রজন্ম—জ্যাকব, জেনিফার, বাবা-মা ডেল ও ক্রিস—একসঙ্গে কাজ করে খামার টিকিয়ে রাখার চেষ্টায় আছেন।

মাঠে বাড়তি চাপ

– সরকারের ‘‘সহনশীল সময়’’ আবেদনের পরই কৃষিপণ্য কেনার অনুদান বাতিল; শুধু কানসাসেই কৃষকেরা ২৬ লাখ ডলার হারিয়েছেন।
– ৪৫ বছর ধরে ভাড়া নেওয়া ৬৪০ একর জমি বাড়িওয়ালা হঠাৎ ফেরত নেওয়ায় খড়গ নেমে আসে।
– অবশেষে স্থানীয় মার্কেটে প্রথম দিনে ১ হাজার ৮০০ ডলার বিক্রি কিছুটা আশার সঞ্চার করে—কিন্তু ৬০ ডজন ডিমের সিংহভাগ থেকেই গেছে।

সম্প্রদায়ের সহমর্মিতা

ফেসবুকে ৭ হাজারের বেশি ভক্ত, নামে তর্ক হয়—পটিং শেডে আশ্রয় নেওয়া ব্যাঙটির নাম হবে কি না। স্থানীয় মেয়র প্রোটেম থেকে শুরু করে প্রবীণ ক্রেতা সবাই স্টলে এসে খোঁজ নেন; কেউ কেউ জানান, অন্য কৃষক বিক্রি করে দিচ্ছে। ওয়াইন প্রসেসর ও সাবেক রেপাবলিকান প্রার্থী ব্রায়ান জেসিগার বলেন, ‘‘প্রতিটি কৃষকের জন্যই এ ধাক্কা জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছে।’’

আশার ঝিলিক

– কম আয়ের বাসিন্দাদের জন্য ক্যানসাস সিটিতে তাজা পণ্য সরবরাহ প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত বহাল রয়েছে।
– অবসর‑প্রস্তুত এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে নতুন জমি ভাড়ার সম্ভাবনা জেগেছে।
– বাজারে বিক্রি ভালো চললে খোয়া যাওয়া ৮ হাজার ডলার পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে।

সামনের পথে কী

থমাস পরিবার মনে করে, বছর এখনো অনেক বাকি; একটি দরজা বন্ধ হলে আরেকটি খোলা যায়। তবু সরকারি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, অনুদান স্থগিত আর বাজার অনিশ্চয়তার জোড়া চাপ তাদের মনে শঙ্কা জাগিয়েছে—‘‘এই প্রথমবার, সরকারের কথায় ভরসা রাখছি না,’’ বললেন জ্যাকব। তবু ফসল, পরিবার আর সম্প্রদায়ের প্রতি ভালোবাসাই তাদের চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে: ‘‘আমরা থামব না—যতক্ষণ মানুষ খেতে চায়, ততক্ষণ আমরা ফলাতে চাই।’’

শেষ কথা

কৃষকদের উপর নির্ভরশীল আমেরিকান খাদ্যব্যবস্থা নীতিনির্ধারকদের এক সিদ্ধান্তেই নড়বড়ে হতে পারে—থমাস পরিবারের সংগ্রাম তারই জীবন্ত উদাহরণ। অনিয়ন্ত্রিত কাটছাঁট ও ট্যারিফ যুদ্ধের চাপ কমাতে না পারলে গ্রামীণ আমেরিকার বহু এমন ছোটখাটো খামার হয়তো আর দম নিতেই পারবে না।