১২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও: পরিবর্তনের ভেতর টিকে থাকার অভিনয়শিল্পী কেপপ ডেমন হান্টার্স: আবেগ থেকে বৈশ্বিক উন্মাদনা, এক অ্যানিমেশনের অসম্ভব জয়যাত্রা ভেনিজুয়েলা প্রশ্নে ট্রাম্পে আস্থা, মাদুরো হটাতে পারলেই সব ক্ষমা ডোরালের নির্বাসিতদের কণ্ঠ যুদ্ধবিরতি ছাড়াই শেষ আসিয়ান বৈঠক, আবার আলোচনায় বসছে থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ডেটা সেন্টারে বড় ঝাঁপ আদানির, পারমাণবিক বিদ্যুৎ নিয়েও ভাবনা হাদি হত্যায় তিন শ’ আসনের প্রার্থীদের নিরাপত্তা শঙ্কা: জামায়াত চীনের নববর্ষে পর্যটনে উল্লম্ফন, ঘরোয়া ভোগ ব্যয়ে নতুন গতি শিশু যত্নসেবায় নতুন দিগন্ত: জাতীয় আইন আনছে চীন রাশিয়ার রাজধানীতে গাড়িবোমা হামলা, শীর্ষ সেনা জেনারেল নিহত চিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে চার হাজার তিনশো মিটার উচ্চতায় প্রাগৈতিহাসিক মানুষের চিহ্ন, ইতিহাসে নতুন দিগন্ত

গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিশুর গল্প: গত এক মাসে মুখে ওঠেনি একটি ডিমও

শিশুটির পরিচয় ও পারিবারিক অবস্থা

পাহাড়ঘেরা এক গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রাকিবুল (ছদ্মনাম)। বয়স মাত্র নয় বছর। বাবা দিনমজুর, মা গৃহিণী। সংসারে তিন ভাইবোন—রাকিবুল সবচেয়ে বড়। বাবা প্রতিদিন মাঠে বা ইটভাটায় কাজ খুঁজে পান, কিন্তু কাজ থাকলেও আয় খুব সামান্য। দিন শেষে সেই টাকায় চাল, ডাল, সামান্য শাকসবজি জোটে, কিন্তু ডিম—তা এখন বিলাসিতার মতো।

ডিম কেন পৌঁছায় না তার থালায়

এক সময়ে গ্রামের বাজারে সেদিনের ডিমের দাম ছিল হাতের নাগালে। স্কুলে দুপুরের খাবার কর্মসূচিতে সপ্তাহে অন্তত একদিন ডিমের ভর্তা বা সেদ্ধ ডিম পাওয়া যেত। কিন্তু গত কয়েক মাসে বাজারে ডিমের দাম বেড়ে গেছে অনেক গুণ, আর স্কুলের খাবারের কর্মসূচিও নানা কারণে ঠিকমতো চলছে না। ফলে রাকিবুলের থালায় গত এক মাসে একটিও ডিম আসেনি।

সুপারফুড ডিম দিনে কয়টি খাওয়া নিরাপদ

পুষ্টির ঘাটতি ও প্রভাব

পুষ্টিবিদরা বলেন, ডিম শিশুর জন্য প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের অন্যতম সহজ উৎস। কিন্তু রাকিবুলের মতো অনেক শিশু এখন সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এর প্রভাব পড়ছে তাদের শারীরিক বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও পড়াশোনায় মনোযোগে। শিক্ষক জানালেন, রাকিবুল পড়াশোনায় আগ্রহী হলেও শারীরিক দুর্বলতার কারণে প্রায়ই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

মায়ের কণ্ঠে অভাবের কষ্ট

রাকিবুলের মা বলেন, “আগে সপ্তাহে অন্তত এক-দুই দিন ডিম কিনে দিতাম। এখন তো দাম এত বেড়েছে যে, চাল-ডাল কেনার পর আর ডিম কেনা সম্ভব হয় না। বাচ্চারা চায়, কিন্তু আমি দিতে পারি না—এটাই সবচেয়ে কষ্টের।”

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলছে ৪ আগস্ট

গ্রামের চিত্র: এক শিশুর নয়, শত শত শিশুর গল্প

রাকিবুল একা নয়। গ্রামের অন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিশুরাও একই সমস্যার মুখোমুখি। অনেক পরিবারেই এখন ডিম মাসে একবারও কিনে খাওয়া হয় না। শিক্ষকরা বলছেন, পুষ্টিকর খাবারের অভাব শিশুদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করছে।

সমাধান ও প্রত্যাশা

স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা মনে করেন, স্কুল পর্যায়ে খাবারের কর্মসূচি পুনরায় চালু করে ডিম অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। পাশাপাশি, দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য সরকারিভাবে পুষ্টি সহায়তা দেওয়া হলে শিশুরা অন্তত সপ্তাহে কয়েক দিন ডিম খাওয়ার সুযোগ পাবে।

রাকিবুলের চোখে এখনো সেই ছোট্ট স্বপ্ন—একদিন স্কুলের দুপুরের খাবারে আবারও সেদ্ধ ডিম পাওয়া যাবে, আর সে প্রথম কামড়েই মনে করবে—এটাই সবচেয়ে মিষ্টি স্বাদ।

জনপ্রিয় সংবাদ

লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও: পরিবর্তনের ভেতর টিকে থাকার অভিনয়শিল্পী

গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিশুর গল্প: গত এক মাসে মুখে ওঠেনি একটি ডিমও

০৭:১২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

শিশুটির পরিচয় ও পারিবারিক অবস্থা

পাহাড়ঘেরা এক গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রাকিবুল (ছদ্মনাম)। বয়স মাত্র নয় বছর। বাবা দিনমজুর, মা গৃহিণী। সংসারে তিন ভাইবোন—রাকিবুল সবচেয়ে বড়। বাবা প্রতিদিন মাঠে বা ইটভাটায় কাজ খুঁজে পান, কিন্তু কাজ থাকলেও আয় খুব সামান্য। দিন শেষে সেই টাকায় চাল, ডাল, সামান্য শাকসবজি জোটে, কিন্তু ডিম—তা এখন বিলাসিতার মতো।

ডিম কেন পৌঁছায় না তার থালায়

এক সময়ে গ্রামের বাজারে সেদিনের ডিমের দাম ছিল হাতের নাগালে। স্কুলে দুপুরের খাবার কর্মসূচিতে সপ্তাহে অন্তত একদিন ডিমের ভর্তা বা সেদ্ধ ডিম পাওয়া যেত। কিন্তু গত কয়েক মাসে বাজারে ডিমের দাম বেড়ে গেছে অনেক গুণ, আর স্কুলের খাবারের কর্মসূচিও নানা কারণে ঠিকমতো চলছে না। ফলে রাকিবুলের থালায় গত এক মাসে একটিও ডিম আসেনি।

সুপারফুড ডিম দিনে কয়টি খাওয়া নিরাপদ

পুষ্টির ঘাটতি ও প্রভাব

পুষ্টিবিদরা বলেন, ডিম শিশুর জন্য প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের অন্যতম সহজ উৎস। কিন্তু রাকিবুলের মতো অনেক শিশু এখন সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এর প্রভাব পড়ছে তাদের শারীরিক বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও পড়াশোনায় মনোযোগে। শিক্ষক জানালেন, রাকিবুল পড়াশোনায় আগ্রহী হলেও শারীরিক দুর্বলতার কারণে প্রায়ই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

মায়ের কণ্ঠে অভাবের কষ্ট

রাকিবুলের মা বলেন, “আগে সপ্তাহে অন্তত এক-দুই দিন ডিম কিনে দিতাম। এখন তো দাম এত বেড়েছে যে, চাল-ডাল কেনার পর আর ডিম কেনা সম্ভব হয় না। বাচ্চারা চায়, কিন্তু আমি দিতে পারি না—এটাই সবচেয়ে কষ্টের।”

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলছে ৪ আগস্ট

গ্রামের চিত্র: এক শিশুর নয়, শত শত শিশুর গল্প

রাকিবুল একা নয়। গ্রামের অন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিশুরাও একই সমস্যার মুখোমুখি। অনেক পরিবারেই এখন ডিম মাসে একবারও কিনে খাওয়া হয় না। শিক্ষকরা বলছেন, পুষ্টিকর খাবারের অভাব শিশুদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করছে।

সমাধান ও প্রত্যাশা

স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা মনে করেন, স্কুল পর্যায়ে খাবারের কর্মসূচি পুনরায় চালু করে ডিম অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। পাশাপাশি, দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য সরকারিভাবে পুষ্টি সহায়তা দেওয়া হলে শিশুরা অন্তত সপ্তাহে কয়েক দিন ডিম খাওয়ার সুযোগ পাবে।

রাকিবুলের চোখে এখনো সেই ছোট্ট স্বপ্ন—একদিন স্কুলের দুপুরের খাবারে আবারও সেদ্ধ ডিম পাওয়া যাবে, আর সে প্রথম কামড়েই মনে করবে—এটাই সবচেয়ে মিষ্টি স্বাদ।