০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
পাথুরে সূচনা: আমরা কীভাবে পেলাম অক্সিজেন ভিন্ন একটি চিন্তা… সিরিয়ায় কেন এখনো মার্কিন সেনা? উপস্থিতির পেছনের কারণ ও বর্তমান বাস্তবতা পূর্ব কঙ্গোতে সবচেয়ে সংকটময় সময়ে বন্ধ হলো বিনা খরচের প্রসূতি সেবা হারিয়ে যাচ্ছে শকুন এশিয়ার মহাকাশ মানচিত্রে নতুন কেন্দ্র হতে চায় হোক্কাইডো স্পেসপোর্ট অমিতাভ ঘোষের নতুন বই ‘ঘোস্ট-আই’: অতীত, জলবায়ু সংকট আর এক অদ্ভুত বাস্তবতার খোঁজ ভোট না দিলে ঘরে থাকার হুঁশিয়ারি: শরীয়তপুরে বিএনপি নেতার বক্তব্যে তোলপাড় হাদিকে গুলির ঘটনায় ‘মাথায় বাজ পড়ার মতো’ ধাক্কা খেলেন সিইসি হাদির অবস্থা আরও সংকটজনক, সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কের ফোলা বেড়েছে

ব্রিটেনের দীর্ঘতম রেলসেতু সম্পন্ন হলো, তবু অনিশ্চিত রইল ট্রেন চলাচল

এক দশকের প্রচেষ্টার ফল

ইঞ্জিনিয়াররা সম্পন্ন করেছেন ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলসেতু — কোলন ভ্যালি ভায়াডাক্ট। প্রায় ১০ বছরের পরিকল্পনা ও নির্মাণ শেষে তৈরি হয়েছে এই সেতুটি, যা মূলত প্রস্তাবিত হাই-স্পিড টু (HS2) প্রকল্পের অংশ। তবে এখনো বড় প্রশ্ন রয়ে গেছে—এ সেতুর ওপর দিয়ে আদৌ কখনো দ্রুতগামী ট্রেন চলবে কি না।

দৈর্ঘ্যে নতুন রেকর্ড

কোলন ভ্যালি ভায়াডাক্টের দৈর্ঘ্য ২.১ মাইল। এটি উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হেয়ারফিল্ড থেকে বাকিংহ্যামশায়ারের ডেনহ্যাম পর্যন্ত বিস্তৃত, এম-২৫ মহাসড়কের কাছাকাছি।
এই সেতুটি বর্তমান রেকর্ডধারী টে ব্রিজের চেয়ে ৪৫০ ফুট দীর্ঘ। টে ব্রিজ ১৮৮৭ সাল থেকে ব্রিটেনের দীর্ঘতম রেলসেতুর খেতাব ধরে রেখেছিল।

প্রকৌশলগত জটিলতা ও খরচ

সেতুটি নদী কোলন, গ্র্যান্ড ইউনিয়ন খাল, একাধিক সড়ক ও হ্রদের ওপর দিয়ে বাঁক নিয়ে গেছে। নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে ১,০০০ ভিন্ন আকারের ডেক। এর ফলে এটি HS2 প্রকল্পের অন্যতম জটিল অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত।
এ প্রকল্পের দক্ষিণাংশ (লন্ডন থেকে বার্মিংহাম) ইতিমধ্যেই খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন পাউন্ডে।

গতি ও প্রশংসা

ভবিষ্যতে এই সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ২০০ মাইল গতিতে ট্রেন চলতে পারবে। HS2–এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক বিলি আহলুওয়ালিয়া একে বলেছেন—“একটি বিস্ময়কর প্রকৌশল কীর্তি, যা সময়ের পরীক্ষায় টিকে থাকবে।”

অনিশ্চয়তার ছায়া

সরকারি নির্দেশে HS2 প্রকল্পের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও বিলম্ব সামাল দিতে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ফলে ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত কোনো বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অবস্থা আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে যখন নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে দল ঘোষণা করেছে—তারা ক্ষমতায় এলে পুরো প্রকল্প বাতিল করে দেবে। সে ক্ষেত্রে সেতুটি অকাজে পড়ে থাকবে, যদিও এটি গত বছর রয়্যাল ফাইন-আর্ট কমিশনের সৌন্দর্য পুরস্কার পেয়েছিল।

নির্মাণ প্রক্রিয়া

সেতুটি নির্মাণ করেছে ব্রিটিশ নির্মাতা স্যার রবার্ট ম্যাকঅ্যালপাইন ও ফরাসি কোম্পানি বুইগসসহ একটি কনসোর্টিয়াম। পুরো ১.৬ বিলিয়ন পাউন্ডের এই অংশে আরও রয়েছে চিলটার্ন অঞ্চলের ১০ মাইল দীর্ঘ টানেল।
গত বছর একটি ৭০০ টন ওজনের মেশিন, যার নাম রাখা হয়েছিল ‘ডোমিনিক’, ব্যবহার করে কংক্রিট ডেক বসানো হয়। সম্প্রতি শব্দনিয়ন্ত্রণ প্রাচীর, নিষ্কাশন ব্যবস্থা, সেন্সর ও ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।

অন্যত্র বাধা

গত মাসে বার্মিংহামের নতুন কার্‌জন স্ট্রিট স্টেশনের কাছাকাছি আরেকটি সেতু প্রকল্পে কাজ আটকে যায়। সেখানে ৭,০০০ টন ওজনের ভায়াডাক্ট বসানোর পরিকল্পনা ছিল, তবে ওয়েল্ডিং সমস্যা ও শ্রমশক্তির সংকটের কারণে কাজ স্থগিত হয়। এ জন্য একটি সপ্তাহ ধরে বিদ্যমান লাইন বন্ধ রাখলেও কাজ সম্পন্ন করা যায়নি।

জনপ্রিয় সংবাদ

পাথুরে সূচনা: আমরা কীভাবে পেলাম অক্সিজেন

ব্রিটেনের দীর্ঘতম রেলসেতু সম্পন্ন হলো, তবু অনিশ্চিত রইল ট্রেন চলাচল

০৪:৪০:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এক দশকের প্রচেষ্টার ফল

ইঞ্জিনিয়াররা সম্পন্ন করেছেন ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলসেতু — কোলন ভ্যালি ভায়াডাক্ট। প্রায় ১০ বছরের পরিকল্পনা ও নির্মাণ শেষে তৈরি হয়েছে এই সেতুটি, যা মূলত প্রস্তাবিত হাই-স্পিড টু (HS2) প্রকল্পের অংশ। তবে এখনো বড় প্রশ্ন রয়ে গেছে—এ সেতুর ওপর দিয়ে আদৌ কখনো দ্রুতগামী ট্রেন চলবে কি না।

দৈর্ঘ্যে নতুন রেকর্ড

কোলন ভ্যালি ভায়াডাক্টের দৈর্ঘ্য ২.১ মাইল। এটি উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হেয়ারফিল্ড থেকে বাকিংহ্যামশায়ারের ডেনহ্যাম পর্যন্ত বিস্তৃত, এম-২৫ মহাসড়কের কাছাকাছি।
এই সেতুটি বর্তমান রেকর্ডধারী টে ব্রিজের চেয়ে ৪৫০ ফুট দীর্ঘ। টে ব্রিজ ১৮৮৭ সাল থেকে ব্রিটেনের দীর্ঘতম রেলসেতুর খেতাব ধরে রেখেছিল।

প্রকৌশলগত জটিলতা ও খরচ

সেতুটি নদী কোলন, গ্র্যান্ড ইউনিয়ন খাল, একাধিক সড়ক ও হ্রদের ওপর দিয়ে বাঁক নিয়ে গেছে। নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে ১,০০০ ভিন্ন আকারের ডেক। এর ফলে এটি HS2 প্রকল্পের অন্যতম জটিল অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত।
এ প্রকল্পের দক্ষিণাংশ (লন্ডন থেকে বার্মিংহাম) ইতিমধ্যেই খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন পাউন্ডে।

গতি ও প্রশংসা

ভবিষ্যতে এই সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ২০০ মাইল গতিতে ট্রেন চলতে পারবে। HS2–এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক বিলি আহলুওয়ালিয়া একে বলেছেন—“একটি বিস্ময়কর প্রকৌশল কীর্তি, যা সময়ের পরীক্ষায় টিকে থাকবে।”

অনিশ্চয়তার ছায়া

সরকারি নির্দেশে HS2 প্রকল্পের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও বিলম্ব সামাল দিতে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ফলে ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত কোনো বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অবস্থা আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে যখন নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে দল ঘোষণা করেছে—তারা ক্ষমতায় এলে পুরো প্রকল্প বাতিল করে দেবে। সে ক্ষেত্রে সেতুটি অকাজে পড়ে থাকবে, যদিও এটি গত বছর রয়্যাল ফাইন-আর্ট কমিশনের সৌন্দর্য পুরস্কার পেয়েছিল।

নির্মাণ প্রক্রিয়া

সেতুটি নির্মাণ করেছে ব্রিটিশ নির্মাতা স্যার রবার্ট ম্যাকঅ্যালপাইন ও ফরাসি কোম্পানি বুইগসসহ একটি কনসোর্টিয়াম। পুরো ১.৬ বিলিয়ন পাউন্ডের এই অংশে আরও রয়েছে চিলটার্ন অঞ্চলের ১০ মাইল দীর্ঘ টানেল।
গত বছর একটি ৭০০ টন ওজনের মেশিন, যার নাম রাখা হয়েছিল ‘ডোমিনিক’, ব্যবহার করে কংক্রিট ডেক বসানো হয়। সম্প্রতি শব্দনিয়ন্ত্রণ প্রাচীর, নিষ্কাশন ব্যবস্থা, সেন্সর ও ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।

অন্যত্র বাধা

গত মাসে বার্মিংহামের নতুন কার্‌জন স্ট্রিট স্টেশনের কাছাকাছি আরেকটি সেতু প্রকল্পে কাজ আটকে যায়। সেখানে ৭,০০০ টন ওজনের ভায়াডাক্ট বসানোর পরিকল্পনা ছিল, তবে ওয়েল্ডিং সমস্যা ও শ্রমশক্তির সংকটের কারণে কাজ স্থগিত হয়। এ জন্য একটি সপ্তাহ ধরে বিদ্যমান লাইন বন্ধ রাখলেও কাজ সম্পন্ন করা যায়নি।