সারসংক্ষেপ
- • ট্রাম্পের চাপ উপেক্ষা করে কিমেলকে ফিরিয়ে আনল ডিজনি
- • নেক্সস্টার ও সিনক্লেয়ার কিমেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার থেকে সরে দাঁড়াল
- • কিমেল তার মত প্রকাশের অধিকারে সমর্থন দেওয়া রক্ষণশীলদের ধন্যবাদ জানালেন
স্থগিতাদেশ কাটিয়ে টেলিভিশনে ফিরলেন জিমি কিমেল। মঙ্গলবার সম্প্রচারিত তার অনুষ্ঠান “জিমি কিমেল লাইভ!” এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ দর্শকসংখ্যা টানল বলে জানিয়েছে এবিসি।
দর্শকসংখ্যায় রেকর্ড
এবিসি জানিয়েছে, প্রায় ৬২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ অনুষ্ঠানটি দেখেছে। সাধারণত এই শো প্রতিদিন গড়ে ১৪ লাখ ২০ হাজার দর্শক পায়। স্থগিতাদেশ শেষে ফিরে আসা কিমেল সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান এবং ১৫ সেপ্টেম্বর করা তার মন্তব্য নিয়ে খোলামেলা বক্তব্য রাখেন।
কেবল সম্প্রচারিত পর্বই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে কিমেলের মনোলগ। এবিসির তথ্যমতে, ইউটিউবে ১ কোটি ৫৩ লাখ এবং ইনস্টাগ্রামে ৬৩ লাখ ভিউ মিলিয়ে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ২ কোটি ৬০ লাখের বেশি ভিউ হয়েছে।
ট্রাম্পকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি
কিমেলের বক্তব্যে যুক্ত হয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিডিও, যেখানে তিনি কিমেলকে “প্রতিভাহীন” এবং “রেটিংবিহীন” বলে ব্যঙ্গ করেন। জবাবে কিমেল মঞ্চে হেসে বলেন, “আজ রাতে তো আমার রেটিং আছে!”
ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ ও সামাজিক মাধ্যমে বিতর্কের জেরে এবিসি কিমেলকে ছয় দিনের জন্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছিল। কিন্তু ডিজনি দ্রুত সিদ্ধান্ত বদল করে তাকে ফিরিয়ে আনে। বিশ্লেষকরা এটিকে ট্রাম্পের মিডিয়া-বিরোধী অভিযানের মুখে করপোরেট প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন।
ভক্তদের চাপ ও ডিজনির প্রতিক্রিয়া
ডিজনি ভক্তদের চাপের মুখেও পড়ে, কারণ অনেকে ডিজনি+ ও হুলু সাবস্ক্রিপশন বাতিল করছিল। কিমেল তার মনোলগে রসিকতা করে বলেন, তাকে নাকি ডিজনির সাবস্ক্রিপশন পুনরায় চালুর নির্দেশ পড়তে বলা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, কোনো তরুণের হত্যাকে হালকা করে দেখা তার উদ্দেশ্য ছিল না। মঞ্চে উঠে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে বলেন, “এটা নিয়ে হাসির কিছু নেই।”
ট্রাম্পের পাল্টা হুমকি
ট্রাম্প নিজের প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে লেখেন, এবিসি কিমেলকে ফিরিয়ে দিয়ে ভুল করেছে। তিনি ইঙ্গিত দেন, এবিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। কিমেলকে তিনি ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির হাতিয়ার বলে অভিহিত করেন এবং তার কৌতুককে “অবৈধ প্রচার অনুদান” বলে দাবি করেন।
সম্প্রচার নিয়ে জটিলতা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় নেটওয়ার্ক নেক্সস্টার ও সিনক্লেয়ার তাদের ৭০টি এবিসি স্টেশনে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে সিয়াটল, ন্যাশভিল, নিউ অরলিন্সসহ বেশ কিছু বড় শহরে অনুষ্ঠানটি দেখা যায়নি। ওয়াশিংটন ডিসিতেও সম্প্রচার হয়নি। নেক্সস্টার জানিয়েছে, অনুষ্ঠানটির অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপ
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের চেয়ারম্যান ব্রেন্ডন কার এবিসি ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্তের হুমকি দেন এবং সম্প্রচার বন্ধ না করলে লাইসেন্স বাতিলের ইঙ্গিত দেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপ বাড়তে থাকে, ডেমোক্র্যাটরা তার পদত্যাগ দাবি করে আর কিছু রিপাবলিকানও সমালোচনায় যোগ দেন।
কিমেলের কৃতজ্ঞতা
মনোলগে কিমেল বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান সেই রক্ষণশীলদের, যারা তার মতের সঙ্গে একমত না হলেও তার মত প্রকাশের অধিকারে সমর্থন করেছেন। সেনেটর টেড ক্রুজের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মনে হয় এটাই প্রথমবার বলছি—টেড ক্রুজ ঠিক বলেছেন।”
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে শুধু টেলিভিশন রেটিং নয়, রাজনৈতিক মঞ্চেও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন কিমেল।