সাত বছর পর বড় পর্দায় ফেরা
দীর্ঘ বিরতির পর অভিনেত্রী সন ইয়ে-জিন নতুন চলচ্চিত্র ‘নো আদার চয়েস’-এর মাধ্যমে আবার বড় পর্দায় ফিরেছেন। তিনি জানালেন, এই ছবিতে কাজ করতে গিয়ে পরিচালক পার্ক চান-উকের নিখুঁত নির্দেশনা ও সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে সহযোগিতায় অভিনয়ের আনন্দ নতুন করে আবিষ্কার করেছেন।
চরিত্র নিয়ে প্রথম দ্বিধা
সন স্বীকার করেন, প্রথমে তার চরিত্র ‘মি-রি’কে তিনি যথেষ্ট শক্তিশালী মনে করেননি। তার ভাষায়, “স্ক্রিপ্ট হাতে পাওয়ার পর মনে হয়েছিল চরিত্রে আলাদা কিছু নেই। ভাবছিলাম, আদৌ কি আমাকে এই কাজটা করা উচিত, নাকি আমি ভালোভাবে করতে পারব কি না।” তবে পরিচালক পার্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহই তাকে শেষ পর্যন্ত টেনে আনে। পরে পরিচালক চরিত্রটিকে আরও সমৃদ্ধ করে চূড়ান্ত রূপ দেন।
শুটিংয়ের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা
সনের মতে, শুটিংয়ের প্রথম দিনটি ছিল ভীষণ চাপের। “পার্ক স্যার কিছুই এড়িয়ে যান না। এমন নির্দেশনা দিতেন যা আগে মাথায় আসেনি। হঠাৎ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম,” তিনি বলেন। এমনকি সাধারণ শব্দের টোন পরিবর্তনের মতো সূক্ষ্ম বিষয়েও তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সন বলেন, “এটা যেন এক ছাত্রীর হোমওয়ার্ক খাতা চেক করানোর মতো ছিল, কিন্তু একবার অভিজ্ঞতা নেওয়ার পর বিষয়টা মজার মনে হয়েছে।”
সহ-অভিনেতাদের মানিয়ে নেওয়া
সন জানান, লি বিং-হুনসহ সিনিয়র অভিনেতারাও পার্কের এই সূক্ষ্ম নির্দেশনায় পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নেন। তিনি বলেন, “সেটের পরিবেশ ছিল বিশ্বাসে ভরপুর। আমরা জানতাম, এর ফল অসাধারণ হবে। তাই চাপের বদলে খুশিই বেশি পেয়েছি।”
কৌতুকপূর্ণ মুহূর্তের বিস্ময়
ছবির কিছু কৌতুকপূর্ণ দৃশ্য তাকে অবাক করেছে। “ড্রাগনফ্লাই দৃশ্যটা প্রথমে পড়ে মজার লাগেনি। কিন্তু যখন সিনেমাটা চতুর্থবার দেখলাম, তখন এমন সব জায়গায় হেসেছি যা আগে খেয়াল করিনি,” বলেন তিনি।
মাতৃত্বের প্রভাব
২০২২ সালে সন অভিনেতা হিউন বিনকে বিয়ে করে এক সন্তানের মা হন। তিনি মনে করেন, মাতৃত্ব তার চরিত্রে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
“যখন ছবিতে বলি, ‘মা মাটিতে গর্ত করেছে,’ তখন সেটা শুধু সান্ত্বনা হিসেবে বলিনি। সন্তানের মা হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে এক ধরনের কাঁপা-কাঁপা আবেগ নিয়ে বলেছি,” তিনি জানান। আবার স্বামী মান-সু (লি বিং-হুন) চরিত্রের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গিতেও মাতৃত্ব প্রভাব ফেলেছে।
রোমান্সে ফেরার ইচ্ছে
সন ইয়ে-জিন জানিয়েছেন, বিবাহ ও মাতৃত্বের পরও তার রোমান্টিক ছবিতে কাজের প্রবল ইচ্ছা আছে। “মেলোড্রামা আমার এখনও টানে। ‘সিক্রেট লাভ অ্যাফেয়ার’, ‘ক্র্যাশ ল্যান্ডিং অন ইউ’ কিংবা ‘দ্য ক্ল্যাসিক’-এর মতো গল্পে নতুনভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে চাই,” তিনি বলেন।
মাতৃত্বের কঠিন দিক
সন খোলাখুলি স্বীকার করেন, সন্তান জন্মের পর জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। “মাতৃত্ব মানে শুধু আনন্দ নয়, ক্লান্তিও বটে। ঘুমহীন রাত, চোখের নিচে দাগ—এসবের মধ্য দিয়েই বুঝেছি, সন্তান পালন কতটা কঠিন কাজ। অন্য মায়েদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়েছে,” তিনি বলেন।
কাজে ফেরার প্রাণশক্তি
তবে কাজে ফেরায় নতুন শক্তি পেয়েছেন সন। “শুধু সেটে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠলেই খুশি লাগত। নীরব মুহূর্তগুলো, অভিনয়ের টানটান উত্তেজনা, সিনিয়রদের সঙ্গে কাজ—সব মিলিয়ে আনন্দই পেয়েছি বেশি,” বলেন তিনি।
দাম্পত্য জীবন ও পর্দার বাইরের সম্পর্ক
স্বামী হিউন বিনের সঙ্গে জীবন নিয়ে তিনি জানান, সম্পর্কটা অনেক সহজ-সরল। এক প্রিমিয়ারে হিউন বিনের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে সন বলেন, “আমরা খুবই কুল দম্পতি। প্রশংসার ভাষা নেই আমাদের মধ্যে। শুধু বলল, ‘ভালো করেছ।’ এরপর অতিথিদের সঙ্গে ব্যস্ত থাকায় আর আলাপের সুযোগ হয়নি।”
পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি
মাতৃত্বের পর কাজের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। সনের মতে, “আগে কাজ মানেই ছিল দায়িত্ব। এখন বুঝি, নিরাপদে একটা দিন শেষ করাই বড় সুখ। নিজেকে এতটা চাপ দেওয়া উচিত নয়। এই অনুভূতিগুলো আমার অভিনয়েও ফুটে উঠবে।”