ভূমিকা
থাইল্যান্ডকে সাধারণত মনে করা হয় সমুদ্রসৈকত ও দ্বীপের দেশ। তবে প্রকৃত অর্থে মুগ্ধ করে এর জীববৈচিত্র্যময় জঙ্গল, কুয়াশা ঘেরা পাহাড়, ঝরনা আর জাতীয় উদ্যান। এর পাশাপাশি রয়েছে ঐতিহাসিক নগরী আয়ুথিয়া ও সুথথাইয়ের ধ্বংসাবশেষ, মহিমান্বিত রাজপ্রাসাদ এবং আধুনিকতার সঙ্গে ছুটে চলা ব্যাংকক।
লেখকের প্রথম ভ্রমণ শুরু হয়েছিল ১৯৮০-র দশকে, আর কয়েক দশক পর তিনি ফুকেটে বসবাসও করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া দ্বীপ, পাহাড়, জঙ্গল ও শহরের সৌন্দর্য তাঁকে প্রায় প্রতি মাসেই ফিরিয়ে নিয়ে যায় থাইল্যান্ডে। নিচে তুলে ধরা হলো থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সুন্দর ১০টি জায়গা।
১. সিমিলান দ্বীপপুঞ্জ, ফাং ঙ্গা
অ্যান্ডামান সাগরের নীল জলে ভাসমান ১১টি দ্বীপ। এখানে রয়েছে ঘনবর্ষা অরণ্য, সাদা বালুকাবেলা আর পানির নিচে রঙিন প্রবালপ্রাচীর, শত শত প্রজাতির মাছ, কচ্ছপ ও রিফ শার্ক। স্নরকেলিং বা ডাইভিংয়ের জন্য এটি স্বর্গীয় গন্তব্য।
২. গ্র্যান্ড প্যালেস ও ওয়াত ফো, ব্যাংকক
সোনালি স্তূপ, কাঠের কারুকাজ, টাইলস মোড়া স্তম্ভ আর বিশাল দেয়ালচিত্রে সজ্জিত এই দুটি স্থাপনা এশিয়ার অন্যতম সম্মানিত নিদর্শন। ভিড় এড়াতে সকালে তাড়াতাড়ি যাওয়া ভালো। অবশ্যই দেখতে হবে এমেরাল্ড বুদ্ধ মূর্তি।
৩. তুবকাক সৈকত, ক্রাবি
ক্রাবির আও নাং সমুদ্রসৈকত ভ্রমণকারীতে ভরা থাকে। তবে শান্তিপ্রেমীরা যান তুবকাকে, যেখানে স্বচ্ছ জলে পাথুরে পাহাড় ও সাগরগুহা দেখা যায়। ভাটার সময় সৈকতের বালির রঙ ও আকৃতি বদলে যায়।
৪. খাও ইয়াই জাতীয় উদ্যান, নাখন রাতচাসিমা
ব্যাংকক থেকে তিন ঘণ্টার দূরত্বে প্রায় পাঁচ লাখ একর জুড়ে বিস্তৃত বনভূমি। এখানে পাওয়া যায় বিরল প্রাণী—এশীয় কালো ভাল্লুক, স্লো লরিস, গিবন, হাতি ও শকুনজাতীয় পাখি। নানা রঙের গিরগিটি আর বিশাল বৃক্ষ এই জঙ্গলের বিশেষত্ব।
৫. ব্যাং পা-ইন গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ, আয়ুথিয়া
রাজা রামা চতুর্থ ও পঞ্চমের নির্মিত এই রাজপ্রাসাদে রয়েছে চমৎকার সব স্থাপত্যশৈলী—সোনালি প্যাভিলিয়ন, লাল চীনা প্রাসাদ, হলুদ নব্য-শৈলীর ভবন আর সুইস কটেজ। লনের মাঝখানে হাতির আকৃতির টোপিয়ারি আর কেবলকারে চলাচলরত ভিক্ষুরাও চোখে পড়বে।
৬. এরাওয়ান জলপ্রপাত, কানচানাবুরি
সাত স্তরে নীলাভ জলাধার ও গর্জন করা ঝর্ণাধারা এই জলপ্রপাতকে করেছে অন্যতম জনপ্রিয়। প্রতিটি স্তরে স্নান বা বিশ্রামের জায়গা আছে। সর্বোচ্চ স্তর থেকে দেখা যায় অনন্য দৃশ্য।
৭. তারুতাও ন্যাশনাল মেরিন পার্ক, সাতুন
মালয়েশিয়ার সীমান্তের কাছে বিস্তৃত অসংখ্য দ্বীপে ভরা এই এলাকা। ঘন জঙ্গল, বানর, হরিণ আর নানা রঙের সামুদ্রিক প্রাণী এখানে দেখা যায়। এখানকার সমুদ্রসৈকত চওড়া ও সাদা, প্রবালপ্রাচীর জীববৈচিত্র্যে ভরা।
৮. গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল, চিয়াং রাই
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও লাওসের সীমানা মিলেছে এখানে। মেঘে ঢাকা পাহাড়, সবুজ অরণ্য আর হাতির পাল এই অঞ্চলকে ছবির মতো সুন্দর করে তুলেছে। ধীরগতির ভ্রমণের জন্য এটি আদর্শ স্থান।
৯. চেও লান হ্রদ, সুরাত থানি
১৬ কোটি বছরের পুরোনো খাও সক জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত পান্না-সবুজ হ্রদ। আকাশছোঁয়া গাছ, বিশাল পাহাড় আর অরণ্যে ভরা এই এলাকায় ভোরবেলায় শুরু হয় পাখির ডাক। হাইকিং, কায়াকিং আর রাফটিংয়ের জন্য অসাধারণ জায়গা।
১০. সুথথাই
১৩শ শতকে প্রতিষ্ঠিত প্রথম থাই রাজধানী। এখানে রয়েছে ১৯৩টি মন্দির, স্তূপ ও বুদ্ধমূর্তি। লোটাস-পুকুর আর বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ বিশেষ আকর্ষণ। নভেম্বরের লোই ক্রাথং উৎসবে আলোকসজ্জা ও প্রদীপে ভরে ওঠে এ শহর।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 





























