জাতিসংঘে সমালোচক ও বিক্ষোভকারীদের বেষ্টিত অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শুক্রবার সহকর্মী বিশ্বনেতাদের বলেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে তাদের দেশকে “কাজটি শেষ করতেই হবে”—বিধ্বংসী যুদ্ধ থামাতে অস্বীকৃতির কারণে আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমবর্ধমান একঘরে হয়ে পড়লেও তিনি চ্যালেঞ্জিং ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমা নেতারা হয়তো চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছেন, এবং একটি কথা নিশ্চয়তা দিচ্ছি: ইসরায়েল তা করবে না।”
নেতানিয়াহুর বক্তব্য যেমন বৈশ্বিক শ্রোতাদের উদ্দেশে ছিল, তেমনি ক্রমশ বিভক্ত হয়ে পড়া নিজ দেশের জনতাকেও লক্ষ্য করে। তিনি বক্তব্য শুরু করতেই শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের হল থেকে নানা দেশের কয়েক ডজন প্রতিনিধি একযোগে বেরিয়ে যান।
ইসরায়েলি নেতা কথা বলার সময় হলজুড়ে অস্পষ্ট চিৎকার ভেসে আসছিল; গ্যালারিতে থাকা সমর্থকদের দিক থেকে করতালিও শোনা যায়। হামাসবিরোধী অভিযানে নেতানিয়াহুকে সমর্থনকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল তাদের আসনেই ছিল।
উপস্থিত অল্প কয়েকটি পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য—নিজেদের আসনে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা, এমনকি জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধিও পাঠায়নি। পরিবর্তে, সেখানে তুলনামূলক জুনিয়র, নিম্নপদস্থ কূটনীতিকরা বসেছিলেন।
নেতানিয়াহু বলেন, “ইহুদিবিদ্বেষ সহজে মরে না। প্রকৃতপক্ষে, তা কখনোই মরে না।” সমালোচকদের তিনি নিয়মিতভাবেই ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ তোলেন।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একঘরে হয়ে পড়া এবং উসকে দেওয়া এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে বাড়তে থাকা চাপের মুখোমুখি নেতানিয়াহু। শুক্রবারের ভাষণটি ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় মঞ্চে পাল্টা যুক্তি দেওয়ার সুযোগ।
আগের মতোই জাতিসংঘের মঞ্চে নেতানিয়াহু একটি ভিজ্যুয়াল সহায়ক তুলে ধরেন—অঞ্চলের একটি মানচিত্র, যার শিরোনাম ছিল “অভিশাপ”; এতে প্রতিবেশে ইসরায়েলের চ্যালেঞ্জগুলো দেখানো হয়েছে। তিনি মোটা মার্কার দিয়ে মানচিত্রে বিভিন্ন চিহ্ন টানেন।
তিনি একটি কিউআর কোডযুক্ত ব্যাজ পরেছিলেন—এবং সেটার দিকেও ইঙ্গিত করেন—যা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলা, সেখান থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ এবং অস্ত্রধারীদের হাতে বন্দী ইসরায়েলিদের বিষয়ে একটি সাইটে নিয়ে যায়। ইসরায়েলি প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও অনুরূপ ব্যাজ পরেছিলেন।