সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন (৬৫) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তিনি সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক জানিয়েছেন, রবিবার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তবে পরদিন সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অসুস্থতা ও চিকিৎসার প্রশ্ন
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন দীর্ঘদিন ধরেই নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন। পরিবার ও ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বারবার তার জামিন চাওয়া হলেও আদালত থেকে তিনি মুক্তি পাননি। ফলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি কারাগারেই ছিলেন। এখানেই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে এসেছে—তিনি কি যথাযথ চিকিৎসা পেয়েছিলেন? জামিন না পাওয়ায় তার চিকিৎসা কতটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে? মৃত্যুর পর এ নিয়ে জনমনে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।

মামলার কারণে কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নরসিংদীতে সংঘটিত হত্যা, আক্রমণ ও ভাঙচুর মামলায় গ্রেফতারের পর থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই মামলাকে কেন্দ্র করে নানা বিতর্কও তৈরি হয়েছিল।
রাজনৈতিক জীবন
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয় ১৯৮৬ সালে, যখন তিনি নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাবো) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি চারবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন—২০০৮, ২০১৪, ২০১৯ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে।
মন্ত্রিত্ব ও দায়িত্ব
- ২০১৯ সালে তিনি প্রথমবার শিল্পমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় যোগ দেন।
- ২০২৪ সালে দ্বিতীয়বার একই দায়িত্ব পান।
মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দেশের শিল্প খাতের নীতি, শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান এবং শিল্পায়নের নানা উদ্যোগে তার ভূমিকা আলোচিত হয়।
মৃত্যু নিয়ে নতুন বিতর্ক
তার মৃত্যুর পর মূলত দুটি বিষয় আলোচনায় এসেছে:

কারাগারে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়া।
জামিন না পেয়ে চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়া।
এ দুটি প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক অঙ্গন ছাড়িয়ে সাধারণ মানুষকেও ভাবাচ্ছে। একজন সাবেক মন্ত্রী যদি যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান, তবে সাধারণ বন্দিদের অবস্থা আরও করুণ হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















