দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার একসঙ্গে দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উই সাং লাক। তিনি শনিবার স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এ-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই পরিমাণ অর্থ একবারে দেওয়া বাস্তবসম্মত নয় এবং এটি কোনো কৌশল নয়, বরং কঠিন বাস্তবতা।
জুলাইয়ের চুক্তি ও ট্রাম্পের নতুন দাবি
গত জুলাই মাসে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ থেকে শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করবে। এর বিপরীতে দক্ষিণ কোরিয়া ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেয়। সিউল জানিয়েছিল, এই অর্থ ঋণ, ঋণ-গ্যারান্টি এবং ইক্যুইটির মাধ্যমে দেওয়া হবে।
কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্প দাবি করেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া যেন পুরো অর্থ একবারে বা “আপফ্রন্ট” দেয়। সিউলের আশঙ্কা, এই অর্থ একসঙ্গে দিলে দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের সংকটে পড়ে যেতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান
উপদেষ্টা উই সাং লাক বলেন, “আমরা নগদে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে পারব না। এ ধরনের শর্ত আমাদের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলবে।” তিনি আরও জানান, দক্ষিণ কোরিয়া বিকল্প উপায় খুঁজছে যাতে সমঝোতা কার্যকর রাখা যায়।
প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং গত সপ্তাহে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যদি মুদ্রা বিনিময় চুক্তির মতো সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকে, তবে দক্ষিণ কোরিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১০ বিলিয়ন ডলার থাকা সত্ত্বেও অর্থনীতি চাপে পড়ে যাবে।
অচলাবস্থা ও আলোচনার লক্ষ্য
যুক্তরাষ্ট্র ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের ওপর নিয়ন্ত্রণ চাইছে বলে দক্ষিণ কোরিয়া দ্বিধায় রয়েছে। ফলে আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
উপদেষ্টা উই বলেন, “যদি এই অর্থ নগদে দিতে হয়, তাহলে এর বাস্তবতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবে না। আমরা বিকল্প প্রস্তাব খুঁজছি।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (এপেক) সম্মেলনে, যেখানে ট্রাম্পও উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, চূড়ান্ত সমাধান বের করা সম্ভব হবে।
সিউল এখন কঠিন অবস্থায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এককালীন নগদ অর্থ চাচ্ছে, অথচ দক্ষিণ কোরিয়া তা দিতে অক্ষম। তাই বিকল্প সমাধান ছাড়া বাণিজ্যচুক্তি কার্যকর রাখা সম্ভব হবে না।