অনুষ্ঠানের পটভূমি
কাজল ও টুইঙ্কল খান্নার সঞ্চালনায় শুরু হওয়া নতুন টক শো ‘টু মাচ’-এর প্রথম পর্ব দর্শকদের কাছে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। তবে দ্বিতীয় পর্বে আলিয়া ভাট ও বরুণ ধাওয়ানের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে একধরনের প্রাণ ফিরিয়ে আনে। ২০১২ সালে করণ জোহরের ছবি ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ দিয়ে একসঙ্গে অভিষেক হয়েছিল তাঁদের। এরপর তাঁরা একাধিক ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। এবার বহু দিন পর আবার দেখা হলো এই দুই তারকার, তবে চলচ্চিত্রের পর্দায় নয়, টক শোতেই।
পুনর্মিলনে বন্ধুত্বের ছাপ
অনুষ্ঠানে আলিয়া ও বরুণের সহজ-সরল রসায়ন আবারও ধরা দেয়। মজা করে একে অপরের ছোটখাটো ভুল তুলে ধরা কিংবা শুটিং সেটের হালকা স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে একধরনের স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে। বরুণ জানান, এতদিন পর আলিয়ার সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাঁর তেমন কোনো ‘খারাপ অভ্যাস’ মনে পড়ছে না। কিন্তু অনুষ্ঠান জুড়ে তাঁদের হাসি-ঠাট্টা ও খুনসুটি অব্যাহত থাকে।
নতুন পরিচয়: এখন তাঁরা অভিভাবক
আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সময়ের সঙ্গে তাঁদের বন্ধুত্বও বদলেছে। এখন তাঁরা দুজনই কন্যাসন্তানের বাবা-মা। বরুণ বলেন, সন্তানের জন্ম তাঁকে ভেতর থেকে বদলে দিয়েছে। আলিয়াও জানান, অনুষ্ঠানে আসার আগে দুজনেই এ বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন। একসময়কার ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’-এর সেই তরুণ-তরুণীরা এখন অনেক বেশি পরিণত, এবং তাঁদের কথায় পরিবার ও সন্তানের প্রতি টান স্পষ্ট।
আন্তরিক মুহূর্ত
আলিয়া যখন কথা বলেন, বরুণ মনোযোগ দিয়ে শোনেন। আবার বরুণ যখন বিয়ের পর এক অস্বস্তিকর পারিবারিক ঘটনার কথা বলেন, আলিয়া হাসিমুখে তাঁকে আশ্বস্ত করেন। আলিয়ার নির্ভেজাল হাসি এখনও একই রকম আছে। অনুষ্ঠানের সেরা মুহূর্তগুলো ছিল তাঁদের সন্তানদের নিয়ে আলোচনা—দুজনেই জানান, তাঁদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত এখন অনেকটাই সন্তানের কথা ভেবে নিতে হয়। আলিয়া সরাসরি জিজ্ঞেস করেন, সন্তান রেখে কাজে গেলে মায়ের অপরাধবোধ কি কখনও দূর হয়? উত্তরে কাজল ও টুইঙ্কল জানান, আসলে তা কখনও দূর হয় না।
দুর্বল দিক
তবে সবকিছুই যে একেবারে জমে উঠেছিল, তা নয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে খাবার টেবিলের অস্বস্তিকর অংশটি একেবারেই অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। আলিয়ার ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়া কিংবা অদ্ভুত পানীয় (পেঁয়াজ ও ডিম মিশ্রিত) প্রত্যাখ্যানের দৃশ্য অস্বস্তি তৈরি করে। প্রশ্নোত্তরের অংশেও ছন্দের অভাব ছিল। অনেক সময় আলিয়া ও বরুণই প্রশ্ন করছিলেন, আর টুইঙ্কল নীরব শ্রোতার ভূমিকায় চলে যান। ফলে সঞ্চালকদের অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে যায়।
সামগ্রিক মূল্যায়ন
দুটি পর্ব শেষ হওয়ার পরও ‘টু মাচ’ এখনও খুব বেশি প্রত্যাশা জাগাতে পারেনি। আলিয়া-বরুণের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় পর্ব প্রাণবন্ত হলেও, অনুষ্ঠানটির মূল কাঠামোতে ধারাবাহিকতা ও স্বাভাবিক প্রবাহের অভাব রয়ে গেছে। আলোচনাগুলো অনেকটাই কেটে-ছেঁটে দেওয়া মনে হয়। দর্শকদের কাছে প্রশ্ন থেকেই যায়—‘টু মাচ’ নামের শো থেকে কি খুব বেশি কিছু আশা করা ঠিক ছিল?