নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে তাকা ঈচির সংগ্রাম
জাপানের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সদ্য নির্বাচিত নেতা সানায় তাকা ঈচি, যিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন, তিনি এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এলডিপির শাসক দল কোমেইতো, তাদের ২৬ বছরের জোট ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর, জাপানি রাজনীতিতে অস্থিরতা দেখা দেয়। সানায় তাকা ঈচি, যিনি মার্কিন রাষ্ট্রনায়িকা মার্গারেট থ্যাচারের অনুসারী, এলডিপি নেতৃত্বে ৪ অক্টোবর শিনজি তোরিকুমির বিরুদ্ধে নির্বাচনে জয়ী হন। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার জায়গায় পরবর্তী নেতা হিসেবে সংসদে অনুমোদন পাওয়া আশা করা হয়েছিল, কিন্তু এই ভোট এখন স্থগিত হয়ে গেছে।
কৌশলগত চ্যালেঞ্জ
এলডিপি-কোমেইতো জোটের অধিকাংশ সংসদ সদস্যদের সমর্থন না থাকায়, তাকা ঈচির জন্য যথেষ্ট সমর্থন সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষত যখন কোমেইতো এলডিপির সাথে জোট ভেঙে দেয়। এর আগে এলডিপি নানা কেলেঙ্কারির মধ্যে পড়েছে, বিশেষ করে ২০২২ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে হত্যার পর, যার ফলে দলটি ইউনিফিকেশন চার্চের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগে বিপর্যস্ত হয়েছে। ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে নির্বাচনগুলোতে, এলডিপি তাদের সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে, তবে এখনও দলটি অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উপস্থিত রয়েছে।
কৌশলগত সমর্থনের অভাব
এলডিপির একাংশ কোমেইতোকে দলের মধ্যে একটি ‘মধ্যপন্থী’ অংশ হিসেবে দেখতে চায়, যাদের মধ্যে অনেকেই কোরি ঈচির জন্য আরও সতর্ক থাকছেন। এর ফলে, তাকা ঈচি এখন পার্লামেন্টে যথেষ্ট সমর্থন সংগ্রহ করতে আরও বেশি চাপের মধ্যে রয়েছেন। কোলোরিপন্থী এলডিপির অংশগুলিও কোরি ঈচির নেতৃত্বে যুক্ত হওয়ার জন্য অনীহা প্রকাশ করেছে, তাদের বিশ্বাস যে কোরি ঈচি কোমেইতো দলের ‘মধ্যপন্থী’ নীতির সাথে তুলনায় বিরোধী।
বিরোধী দলের অবস্থা
তাকা ঈচির বিরুদ্ধে বিরোধী দলের সমর্থন বাড়ানো সম্ভব, কিন্তু তারা অনেকাংশে এলডিপির সাথে যুক্ত হতে অনিচ্ছুক, কারণ কোরি ঈচি নেতৃত্বাধীন এলডিপি তাদের ভোটের লাভের সম্ভাবনা কমিয়ে ফেলতে পারে। তবে বিরোধী দলের তীব্র বিভাজনের ফলে তাকা ঈচির পক্ষে নতুন মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতে পারে।
ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা
তাকা ঈচির নেতৃত্বে এলডিপি যদি আবার এককভাবে ক্ষমতায় আসে, তবে তা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও পুনঃনির্বাচনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। কোরি ঈচি নেতা হতে পারেন, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য তাঁর শাসনকাল স্থিতিশীলতা অর্জন করবে না, সম্ভবত সংসদ আবার নির্বাচন করাতে যেতে পারে।
তাকা ঈচির নেতৃত্বে এলডিপি একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। যদিও তাদের কৌশলগত সমর্থন ও বিরোধী দলের অনিশ্চয়তা তাঁদের জন্য সুযোগ তৈরি করেছে, তবে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিতে পারে, যা জাপানের রাজনৈতিক পটভূমিতে আরও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।