বরিশালের হিজলা উপজেলায় অবৈধ ইলিশ ধরার বিরুদ্ধে অভিযানের সময় মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর স্থানীয় জেলেদের হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে আছেন একজন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
ঘটনার বিবরণ
রোববার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের মূল মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দুটি স্পিডবোটে করে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান পরিচালনা করছিলেন। এসময় প্রায় ২০টি ট্রলার—প্রতিটিতে গড়ে ২০ জন করে স্থানীয় জেলে—হঠাৎ তাদের ঘিরে ধরে আক্রমণ চালায়।
আক্রমণে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমসহ মৎস্য বিভাগের কর্মচারী ও শ্রমিকরা আহত হন। সবাইকে হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আত্মরক্ষায় ফাঁকা গুলি
আক্রমণের সময় কোস্টগার্ড সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে আট রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত ঘটনাস্থলে হিজলা থানা পুলিশের সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রশাসনের অবস্থান
হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন, হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বরিশাল জেলা প্রশাসন এই হামলাকে “রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম” হিসেবে অভিহিত করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্তে একটি পৃথক কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ধারাবাহিক হামলার উদ্বেগ
অধিকর্তারা জানিয়েছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত ১৫ দিনেই বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি একই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে, যখন মৎস্য ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চালাচ্ছিল।
ইলিশ সংরক্ষণে সরকারের অভিযান ক্রমশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় প্রতিরোধের কারণে। প্রশাসন বলছে, এসব হামলার মাধ্যমে জাতীয় সম্পদ রক্ষার প্রচেষ্টায় চরম ব্যাঘাত ঘটানো হচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
#ইলিশঅভিযান #বরিশাল #মৎস্যবিভাগ #আইনশৃঙ্খলা #সারাক্ষণরিপোর্ট