০৫:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
ভারতের শিল্প উৎপাদনে দুই বছরের সর্বোচ্চ উত্থান নভেম্বরেই ঘুরে দাঁড়াল অর্থনীতির চাকা অস্ট্রেলিয়ায় সোনার দামে আগুন, ভিক্টোরিয়ায় নতুন প্রজন্মের স্বর্ণখোঁজাদের ঢল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জোয়ারে নতুন কোটিপতিরা, সিলিকন ভ্যালির ক্ষমতার মানচিত্র বদলাচ্ছে শত্রু ধ্বংসে নতুন রকেটের হুঁশিয়ারি: কিম জং উনের কারখানা পরিদর্শনে উত্তপ্ত কোরীয় উপদ্বীপ ভারতের শোকবার্তা তারেক রহমানের হাতে তুলে দিলেন জয়শঙ্কর লাখো মানুষের চোখের জলে খালেদা জিয়ার জানাজা কয়লা খনি নিয়ে বিভক্ত নাহদলাতুল উলামা: ধর্মীয় সংগঠনে রাজনীতি ও ব্যবসার টানাপোড়েন শৈত্যপ্রবাহে হারিয়ে গেছে বাংলাদেশ: সারা দেশে কুয়াশা, শ্বাসকষ্ট আর জীবিকার ঝুঁকি খালেদা জিয়ার মৃত্যু: রাষ্ট্রীয় শোক ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা মুন্সিগঞ্জে ছয়তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ড; দ্রুত নিয়ন্ত্রণে বড় ক্ষতি এড়ানো গেল

দুবাইয়ে স্বর্ণমূল্য হ্রাসে হাজার হাজার দিরহাম ক্ষতি, তবু বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি আস্থা

হঠাৎ মূল্যের ধস

দীপাবলির উৎসব উপলক্ষে যারা স্বর্ণ ও অলংকার কিনেছিলেন, তারা এখন বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। উৎসব পরবর্তী সপ্তাহেই স্বর্ণের দামে হঠাৎ বড় পতন ঘটে, যার ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রেতাদের হাজার হাজার দিরহাম ক্ষতি হয়েছে।

যদিও এই পতন স্বল্পমেয়াদি ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত, তবুও অনেক ক্রেতা এটিকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন।


রেকর্ড উচ্চতা থেকে হঠাৎ পতন

সেঞ্চুরি ফাইন্যান্সিয়ালের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা বিজয় ভালেচা জানান, ২১ অক্টোবর দুবাইয়ে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম উঠেছিল প্রতি গ্রামে ৫২৫.২৫ দিরহামে, যা ছিল রেকর্ড উচ্চতা। তবে একই দিনের সন্ধ্যায় দাম নেমে আসে ৪৮৫ দিরহামে—অর্থাৎ একদিনে ৪০ দিরহামের বেশি পতন।

২২ ক্যারেট স্বর্ণের দামও ৪৮৬ দিরহাম থেকে কমে ৪৫৮ দিরহামে নেমে আসে, যা প্রতি গ্রামে প্রায় ২৮ দিরহামের পতন নির্দেশ করে। এটি ছিল ২০১৩ সালের পর সবচেয়ে বড় একদিনের পতন।


বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ

ভালেচা জানান, “যদি কেউ ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ কিনে থাকেন, তাহলে তার আনুমানিক ৩০০ দিরহাম পর্যন্ত অপ্রাপ্ত ক্ষতি হয়েছে। ১০০ গ্রাম কিনলে এই ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩,০০০ দিরহাম।”

২২ অক্টোবর দাম আরও কমে দাঁড়ায় প্রতি গ্রামে ৪৮৪ দিরহামে। ২৩ অক্টোবর সকালে বাজারে ২৪ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল যথাক্রমে ৪৯৬.৫, ৪৫৯.৭৫, ৪৪০.৭৫ এবং ৩৭৭.৭৫ দিরহাম প্রতি গ্রাম।


ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্লেষণ

দুবাইয়ের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা বিনিতা হিরানি বলেন, “বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বর্ণই সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ। বিটকয়েন বা অন্যান্য সম্পদের তুলনায় এর স্থিতিশীলতা বেশি।”

অন্যদিকে, আমারি ক্যাপিটালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বরুণ বাফনা ব্যাখ্যা করেন, “এই পতন মূলত বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত মুনাফা তোলার প্রবণতার কারণে ঘটেছে। উৎসব ও নিরাপদ বিনিয়োগ চাহিদা বাড়ায় দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, এরপর মুনাফা তুলে নেওয়ায় দাম কমে গেছে।”


বাজারে ‘পেপার লস’ বাস্তবতা

লিয়ালি জুয়েলারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনুরাগ সিনহা বলেন, “দীপাবলিতে যদি কেউ ১০ গ্রাম স্বর্ণ ৫,২৫০ দিরহামে কিনে থাকেন, এখন সেই একই পরিমাণ স্বর্ণের দাম ৪,৯৫০ দিরহাম। অর্থাৎ প্রতি ১০ গ্রামে ক্রেতারা শত শত দিরহামের কাগুজে ক্ষতির মুখে পড়েছেন—এতে এখনও প্রস্তুত খরচ, ডিজাইন মূল্য বা অতিরিক্ত চার্জ ধরা হয়নি।”


স্বর্ণের দাম স্বল্পমেয়াদে কমলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের বাজার আবারও স্থিতিশীল হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা এখন এই অস্থির সময়কে সাময়িক ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন এবং অনেকেই এটিকে ভবিষ্যতের জন্য লাভজনক সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের শিল্প উৎপাদনে দুই বছরের সর্বোচ্চ উত্থান নভেম্বরেই ঘুরে দাঁড়াল অর্থনীতির চাকা

দুবাইয়ে স্বর্ণমূল্য হ্রাসে হাজার হাজার দিরহাম ক্ষতি, তবু বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি আস্থা

১০:৩৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

হঠাৎ মূল্যের ধস

দীপাবলির উৎসব উপলক্ষে যারা স্বর্ণ ও অলংকার কিনেছিলেন, তারা এখন বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। উৎসব পরবর্তী সপ্তাহেই স্বর্ণের দামে হঠাৎ বড় পতন ঘটে, যার ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রেতাদের হাজার হাজার দিরহাম ক্ষতি হয়েছে।

যদিও এই পতন স্বল্পমেয়াদি ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত, তবুও অনেক ক্রেতা এটিকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন।


রেকর্ড উচ্চতা থেকে হঠাৎ পতন

সেঞ্চুরি ফাইন্যান্সিয়ালের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা বিজয় ভালেচা জানান, ২১ অক্টোবর দুবাইয়ে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম উঠেছিল প্রতি গ্রামে ৫২৫.২৫ দিরহামে, যা ছিল রেকর্ড উচ্চতা। তবে একই দিনের সন্ধ্যায় দাম নেমে আসে ৪৮৫ দিরহামে—অর্থাৎ একদিনে ৪০ দিরহামের বেশি পতন।

২২ ক্যারেট স্বর্ণের দামও ৪৮৬ দিরহাম থেকে কমে ৪৫৮ দিরহামে নেমে আসে, যা প্রতি গ্রামে প্রায় ২৮ দিরহামের পতন নির্দেশ করে। এটি ছিল ২০১৩ সালের পর সবচেয়ে বড় একদিনের পতন।


বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ

ভালেচা জানান, “যদি কেউ ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ কিনে থাকেন, তাহলে তার আনুমানিক ৩০০ দিরহাম পর্যন্ত অপ্রাপ্ত ক্ষতি হয়েছে। ১০০ গ্রাম কিনলে এই ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩,০০০ দিরহাম।”

২২ অক্টোবর দাম আরও কমে দাঁড়ায় প্রতি গ্রামে ৪৮৪ দিরহামে। ২৩ অক্টোবর সকালে বাজারে ২৪ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল যথাক্রমে ৪৯৬.৫, ৪৫৯.৭৫, ৪৪০.৭৫ এবং ৩৭৭.৭৫ দিরহাম প্রতি গ্রাম।


ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্লেষণ

দুবাইয়ের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা বিনিতা হিরানি বলেন, “বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বর্ণই সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ। বিটকয়েন বা অন্যান্য সম্পদের তুলনায় এর স্থিতিশীলতা বেশি।”

অন্যদিকে, আমারি ক্যাপিটালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বরুণ বাফনা ব্যাখ্যা করেন, “এই পতন মূলত বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত মুনাফা তোলার প্রবণতার কারণে ঘটেছে। উৎসব ও নিরাপদ বিনিয়োগ চাহিদা বাড়ায় দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, এরপর মুনাফা তুলে নেওয়ায় দাম কমে গেছে।”


বাজারে ‘পেপার লস’ বাস্তবতা

লিয়ালি জুয়েলারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনুরাগ সিনহা বলেন, “দীপাবলিতে যদি কেউ ১০ গ্রাম স্বর্ণ ৫,২৫০ দিরহামে কিনে থাকেন, এখন সেই একই পরিমাণ স্বর্ণের দাম ৪,৯৫০ দিরহাম। অর্থাৎ প্রতি ১০ গ্রামে ক্রেতারা শত শত দিরহামের কাগুজে ক্ষতির মুখে পড়েছেন—এতে এখনও প্রস্তুত খরচ, ডিজাইন মূল্য বা অতিরিক্ত চার্জ ধরা হয়নি।”


স্বর্ণের দাম স্বল্পমেয়াদে কমলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের বাজার আবারও স্থিতিশীল হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা এখন এই অস্থির সময়কে সাময়িক ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন এবং অনেকেই এটিকে ভবিষ্যতের জন্য লাভজনক সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন।