প্রমোদ-ভ্রমণের জাহাজ এবং যুদ্ধকালীন প্রয়োজনের কারণে বাধ্যতামূলকভাবে (সমর দপ্তর) সান্তা-পাউলাকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
পরদিন সকালে ডেকে গিয়ে ইতো দেখে যে সান্তা-পাউলা আসলে। জাহাজের বিশাল কনভয়ের একটি অংশ- সেনা জাহাজ, সাপ্লাই জাহাজ ও যুদ্ধ জাহাজ কনভয়কে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সকালের নাস্তার জন্য মধ্যাহ্ন পান্তি অপেক্ষা করে ইভো, অতঃপর, জাহাজের প্রথম খাদ্য খাওয়ার জন্য লম্বা টেবিল ফেলা “ডাইনিং রুমে” প্রবেশ করে, অশান্ত সমুদ্রের মধ্য দিয়ে জাহাজ দুলে দুলে চলেছে, দোলানির সঙ্গে তাল রেখে খাদ্য ও থালাবাটি যাতে মেঝেতে পড়ে না যায়, তাই টেবিলের কিনারাগুলো এক কি দুই ইঞ্চি পরিমাণ উঁচু করা ফ্রেমের মতো।
জাহাজে যে খাদ্য পরিবেশিত হতো সেগুলো মোটেই খাওয়া যেত না, একেবারেই অখাদ্য খাদ্য দেয়া হতো খেতে; ঘুরে ফিরে প্রতিদিন সেই শক্ত করে সিদ্ধ করা ডিম, মাছ এবং দুধ অথবা জলে ফোটানো জইয়ের মন্ড। ইতো-র দিব্যি মনে আছে যে এমনকি কফির স্বাদও এমন জঘন্য ছিল যে গলাধঃকরণ করতে খুব কষ্ট হতো।
সান্তা-গাউলা ছিল প্রমোদ-তরি, প্রমোদ-ভ্রমণের জাহাজ এবং যুদ্ধকালীন প্রয়োজনের কারণে বাধ্যতামূলকভাবে (সমর দপ্তর) সান্তা-পাউলাকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এই জাহাজটিতে ছিল আশিজন নাবিক এবং অনায়াসে পাঁচশজন পর্যটক আরাম করে ঘুমোতে পারত। অবশ্য যুদ্ধকালীন সময়ে আরাম নয় কতো অধিক সংখ্যক সেনা বহণ করা যায় নীতি প্রাধান্য পায়।
সান্ডা-পাউলা প্রমোদতরি রূপান্তরিত হয় মার্কিন সেনা বহনকারী জাহাজে এবং ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর ব্রিটিশ ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে মার্কিন সেনা বহনকারীর ডিউটি পালন করে। ছবিতে। ১৯৩২ সালে প্রমোদতরি সান্তা-পাউলা পানামা খালের লেইক গেটান-য়ে। সৌজন্যে উইকিপিডিয়া। পাবলিক ডমেইন, ইউএস সরকার।
যাহোক, সান্তা-পাউলা’র প্রথম যাত্রাবিরতি হয় বেরমুডা’র হ্যামিল্টনে, কিন্তু কোনো যাত্রীকেই জাহাজ থেকে নামার অনুমতি দেয়া হয়নি। জাহাজটি এখান থেকে দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল ধরে ধরে চলে আসে অতঃপর আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে এবং লাইবেরিয়ার ফ্রিপোর্ট বন্দরে নোঙর করে।
(চলবে)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৪৯)
নাঈম হক 



















