প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বুধবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন। অপরাজেয় বাংলার সামনে সমাবেশে তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, শিল্প-সংস্কৃতি ও শারীরিক শিক্ষাকে বাদ দিলে শিক্ষার পূর্ণতা নষ্ট হবে।
প্রতিবাদে উত্তাল সংগীত বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদ পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
অপরাজেয় বাংলার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
স্মারকলিপি পাঠ ও বক্তব্য
সমাবেশে সংগীত বিভাগের চেয়ারপারসন ড. প্রিয়াঙ্কা গোপে একটি স্মারকলিপি পাঠ করেন। নৃত্যকলা বিভাগের লাবণী বন্যা, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

ছাত্রনেতাদের সংহতি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ এবং বিভিন্ন হলের সাংস্কৃতিক সম্পাদকরা বিক্ষোভে সংহতি জানান।
শিল্প-সংস্কৃতির গুরুত্বের ওপর জোর
সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আজিজুর রহমান বলেন, “সভ্যতা টিকে থাকে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ওপর। প্রাথমিক পর্যায়ে সংগীত শিক্ষকের পদ বাতিল করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।”
তিনি আরও প্রশ্ন করেন, “আমরা যদি চাই আমাদের সন্তানরা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে উঠুক, তাহলে সংগীত, সংস্কৃতি ও শারীরিক শিক্ষাকে বাদ দিয়ে তা কীভাবে সম্ভব?”
ধর্ম বনাম সংস্কৃতি প্রসঙ্গ
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইসরাফিল বলেন, “যে সিদ্ধান্ত দেওয়া যায়, তা প্রত্যাহারও করা যায়। শুধু ধর্মের ওপর নির্ভর করে কোনো জাতি অগ্রসর হতে পারে না — সংস্কৃতি কখনো ধর্মের পরিপন্থী নয়।”

চাপের মুখে সিদ্ধান্তের অভিযোগ
ডাকসুর নির্বাহী সদস্য হেমা চাকমা অভিযোগ করেন, কিছু গোষ্ঠীর চাপের মুখে প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পদগুলো অবিলম্বে পুনর্বহালের আহ্বান জানান।
#সংগীতশিক্ষা #ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় #শিক্ষাক্ষেত্র #প্রতিবাদ #সংস্কৃতি
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















