সহযোগিতার আহ্বানে উদ্বোধন
ব্রাজিলের আমাজন নগরী বেলেং-এ সোমবার শুরু হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০, যেখানে আয়োজক দেশ ও সম্মেলনের সভাপতি প্রথম দিনেই “মুতিরাঁও” বা সবাই মিলে কাজ করার ব্রাজিলীয় ধারণার কথা তুলে ধরেন। বক্তব্যে বলা হয়, প্যারিস চুক্তির ১০ বছর পর বিশ্ব এখন আরও দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে; এরই মধ্যে ঝড়, বন্যা ও অতিবৃষ্টির অভিঘাত গরিব ও নিম্নভূমির মানুষকে বেশি ভুগাচ্ছে। কিন্তু আয়োজনের এই ইতিবাচক সুরকে ছাপিয়ে গেছে একটি অনুপস্থিতি—যুক্তরাষ্ট্র এবার সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়নি, ফলে ক্ষতিপূরণ তহবিল, নবায়নযোগ্য জ্বালানির বৈশ্বিক লক্ষ্য বা বন সংরক্ষণে টেকসই অর্থায়নের মতো বড় সিদ্ধান্তে চাপ কমে গেছে। জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সাইমন স্টিল অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, দীর্ঘ আলোচনায় পৃথিবীকে অন্তত ভয়াবহ পাঁচ ডিগ্রি উষ্ণতার পথে যেতে দেওয়া হয়নি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে এখন যে বিপুল বিনিয়োগ হচ্ছে, তা ঘরে-ঘরে বিদ্যুতের দাম ও পরিবহন খরচে ধরা পড়ছে। ব্রাজিল উদ্বোধনের দিনেই বলেছে, আমাজন রক্ষা আর স্থানীয় উন্নয়নকে একই টেবিলে আনাই তাদের লক্ষ্য।

বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ
কপ৩০-এ এবার নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি যোগ করার বদলে পুরোনোগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই মুখ্য কাজ বলে জানাচ্ছেন আলোচকরা। জলবায়ুঝুঁকিতে থাকা দ্বীপ ও নিম্ন আয়ের দেশগুলো অভিযোগ করেছে, ধনী রাষ্ট্রগুলো এখনো যথেষ্ট অনুদান বা স্বল্পসুদে অর্থ দিতে পারেনি; ফলে উপকূল সুরক্ষা, খরা বা অতিরিক্ত তাপ থেকে বাঁচার প্রস্তুতি তারা নিতে পারছে না। তারা স্পষ্ট করে বলেছে, ফের যদি কপ শেষ হয় কেবল একটি নরম ভাষার ঘোষণায়, তাহলে মানুষ এই প্রক্রিয়াকে বাস্তব জীবনের বাইরে থাকা কূটনীতি হিসেবে দেখবে। এর ঠিক আগে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আঘাত হানা টাইফুন কালমেগির ধ্বংসযজ্ঞ প্লেনারিতেই বারবার উঠে এসেছে, যা উষ্ণ সমুদ্রের প্রতিক্রিয়া হিসেবে উপস্থাপিত হয়। ব্রাজিল আশা করছে, রাজধানী নয়, বরং আমাজনেই সম্মেলন করার ফলে প্রতিনিধিরা বনরক্ষায় অর্থ বরাদ্দ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে আরও আন্তরিক হবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতি এবং কিছু সংশয়ী কণ্ঠ অন্য দেশগুলোকে কয়লা ও তেল থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা পিছিয়ে দেওয়ার অজুহাতও দিতে পারে। এখন বাকিদের, বিশেষ করে জি–সেভেনের, বাড়তি পারফরম করেই ১.৫ ডিগ্রি লক্ষ্যকে জীবিত রাখতে হবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















